৭ মে শুরু হচ্ছে প্রাথমিকে ৩২ হাজার চাকরি বাতিলের মামলার শুনানি। সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর বেঞ্চ একথা জানিয়েছে। ওই দিন মামলার সব পক্ষকে কাগজপত্র (পেপার বুক) আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে বেঞ্চ। এর আগে প্রাথমিকের এই মামলা থেকে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে সরে গিয়েছিলেন বিচারপতি সৌমেন সেন। তার পর হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম বিচারপতি চক্রবর্তীর বেঞ্চে মামলাটি পাঠিয়েছেন।
প্রাথমিকে ৩২ হাজার চাকরি বাতিলের মামলা সোমবার কলকাতা হাইকোর্টে উঠেছিল। এদিন বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী জানান, ৭ মে এই মামলার শুনানি শুরু হবে। ওই দিন সব পক্ষকে কাগজপত্র জমা দিতে হবে। প্রথম সওয়াল করবে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। একই সঙ্গে আইনজীবীদের প্রতি আদালতের নির্দেশ, ৩২ হাজার নিয়োগ বাতিলের মামলায় অনেক আইনজীবীর একই বক্তব্য শোনার মতো সময় নেই আদালতের। যাঁদের একই বক্তব্য এবং একই প্রসঙ্গ, সেই সমস্ত আইনজীবীদের থেকে একজনকেই আদালতে বক্তব্য জানাতে হবে।
২০১৪ সালে রাজ্যে প্রাথমিক টেট পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেই পরীক্ষার নম্বর, অ্যাকাডেমিক স্কোর এবং ইন্টারভিউয়ের ভিত্তিতে ২০১৬ সালে রাজ্যের বিভিন্ন প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ করা হয়। সেই নিয়োগে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। ২০২৩ সালের ১২ মে ওই মামলার রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্টের তৎকালীন বিচারপতি, বর্তমানে বিজেপির সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর নির্দেশে ওই নিয়োগ প্রক্রিয়ার ৪২৫০০ জন শিক্ষকের মধ্যে চাকরিচ্যুত হন প্রশিক্ষণহীন ৩২ হাজার শিক্ষক। সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন জানিয়েছিল রাজ্য সরকার।
সিঙ্গল বেঞ্চের ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে যায় পর্ষদ। তৎকালীন বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ চাকরি বাতিলের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করলেও পর্ষদকে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করার নির্দেশ দেয়। এরপর সুপ্রিম কোর্টের যায় রাজ্য এবং পর্ষদ। চাকরিহারাদের একাংশ শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন। চাকরিহারাদের দাবি মেনে শীর্ষ আদালত হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চকে সব পক্ষের বক্তব্য শুনতে নির্দেশ দেয়। তার পর থেকে দু’বছর কেটে গেলেও ওই মামলার অগ্রগতি হয়নি।
সম্প্রতি বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি স্মিতা দাস দে’র ডিভিশন বেঞ্চে ৩২ হাজার চাকরি বাতিলের মামলা শুনানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিচারপতি সেন ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে ওই মামলা থেকে সরে দাঁড়ান। এরপর হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির নির্দেশে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর বেঞ্চে মামলাটি যায়। সোমবার সেই মামলার শুনানিতে আদালত একগুচ্ছ নির্দেশ দেয়। আইনজীবীদের অভিযোগ, প্রাথমিকের ওই নিয়োগে অ্যাপটিটিউড টেস্ট হয়নি, সংরক্ষণ নীতি মানা হয়নি, পর্ষদ পুরো প্যানেল প্রকাশ করেনি। এছাড়া বেআইনি ভাবে নিয়োগ করা হয়েছে।