ভোটের দিন তৃণমূলের নামে দাদাগিরি চলবে না, ১৪৪টি ওয়ার্ডের প্রার্থী মমতাই: অভিষেক

অনেকের মতে,তৃণমুলের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব হয়তো মনে করছে, দল যে কাজ করেছে তাতে আর ভোট জিততে দখলদারির প্রয়োজন নেই।মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন ভিত্তি তৈরি হয়েছে।

Written by SNS Kolkata | December 18, 2021 1:49 am

কলকাতা পুরভোটেও মমতার উপরেই আস্থা তৃণমূলের। কলকাতা পুরসভার ১৪৪টি ওয়ার্ডেই প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভেবে ভোটদানের কথা জানালেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের।

শুক্রবার দক্ষিণ কলকাতায় মহামিছিল করেন তিনি। মিছিল শেষে কালীঘাটে দাঁড়িয়ে এই বার্তা দেন তিনি তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, দক্ষিণ, উত্তর একে অপরকে টেক্কা দিচ্ছে।

এমন জায়গায় দাঁড়িয়ে যেখানে সামনে তাকালে মায়ের মন্দির, পিছনে বাংলার অগ্নিকন্যার বাড়ি। এর থেকে পূণ্যভূমি আর নেই। ফিরহাদ হাকিম, দেবাশিস কুমাররা প্রার্থী না প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জেতাতে হবে। আগামী ১৯ ডিসেম্বর ভারতের কাছে কলকাতাকে সেরা প্রমাণ করার নির্বাচন। কানে শুনে না, চোখে দেখে ভোট দিন। পুরভোটে জয়ের বিষয়ে বরাবরই অভিষেকের গলায় আত্মবিশ্বাসের সুর।

১৪৪-এর মধ্যে ১৩৫ টি ওয়ার্ডে ঘাসফুলই জয়ের হাসি হাসবে বলেই দাবি তাঁর। এছাড়া অভিষেকের আরও দাবি, গোয়ায় আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে হয় তৃণমূল সরকার প্রতিষ্ঠা করবে, নয় প্রধান প্রতিপক্ষ হবে।

মাঝখানে আর কিছু নেই দুর্গাপুজোকে ইউনেস্কোর স্বীকৃতি বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে আরও একবার বিজেপির বিরুদ্ধে ধর্ম নিয়ে রাজনীতির অভিযোগ তুলেছেন অভিষেক তিনি বলেন, বহিরাগতরা বলেছিল বাংলায় দুর্গাপুজো হয় না।

নিজেদের হিন্দু ধর্মের ধারক বাহক বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন এই পুজোর প্রসারে ৫০ হাজার টাকা করে ক্লাবগুলিকে সাহায্য করতে চেয়েছেন, এরা হাই কোর্টে গিয়েছিল। ইউনেস্কো দুর্গাপুজোকে স্বীকৃতি দেওয়ায় তাদের বাড়া ভাতে ছাই।

অভিষেক আরও বলেন, আমায় অনেক চাপ দিয়েছে যাতে মাথা নামিয়ে নিই। আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যোগ্য সৈনিক। গলা কেটে দিলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেরোবে। এদিন মহামিছিল অভিষেক থেকে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন অভিষেক।

তাঁর হুঁশিয়ারি, মোদিবাবু রিপোর্ট কার্ড নিয়ে আসুন। চ্যালেঞ্জ করছি। তথ্য পরিসংখ্যান সামনে রেখে লড়াই হোক। ১০-০ গোল দিয়ে মাঠের বাইরে বার করব বিরোধীদের আক্রমণের মাঝেও ভোটারদের কাছে তাঁর একটাই আরজি, কলকাতার উন্নয়নের স্বার্থে কষ্ট করে হলেও ভোট দিন তৃণমুলকেই।

শুক্রবার প্রচারের শেষ প্রহরে কালীঘাটে দাঁড়িয়ে ফের একবার দলকে বার্তা দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। এদিন বলেন, ভোটের দিন তৃণমূলের নাম করে কোনও দাদাগিরি চলবে না।

তিনি এও বলেন, তৃণমুলের কর্মীরা এসব করবেন না এ ব্যাপারে তাঁর আস্থা রয়েছে। কিন্তু তাঁর কাছে পাঁচ-সাতটা ওয়ার্ডের খবর রয়েছে, বিরোধীরা গন্ডগোল করে তৃণমুলের নামে চালাতে পারে। দেখাতে চাইবে, কলকাতায় ভোট করতে দিচ্ছে না।

বালিগঞ্জ ফাঁড়ি থেকে কালীঘাট মোড় পর্যন্ত রোড শো করেন অভিষেক। রোড শো শেষে সভায় বলেন, কলকাতার ভোটের দিকে শুধু বাংলার মানুষ তাকিয়ে নেই সারা দেশের মানুষ তাকিয়ে রয়েছে।

যদি কেউ তৃণমূলের নাম করে দাদাগিরি করে তাকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিন। প্রতিটি কর্মীকে সজাগ থাকার কথা বলেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ।

এও বলে, অন্য রকম কিছু হলে অভিযুক্ত যত নেতার ছত্রচ্ছায়ায় থাকুক দল তাকে রেয়াত করবে না। পর্যবেক্ষকদের মতে, বিগত ভোটগুলিতে দুটি বিষয় দেখা গিয়েছে।

বিধাননগর কর্পোরেশন হোক বা আঠারোর পঞ্চায়েত ভট-তৃণমূলের সন্ত্রাস সাদা চোখেই দেখা গিয়েছিল। আবার এও ঠিক, একুশের ভোটে আধাসেনা দিয়ে আট দফায় ভোট করিয়েও তৃণমূলের জয়ের ধারা ছিল অব্যাহত।

অনেকের মতে, তৃণমুলের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব হয়তো মনে করছে, দল যে কাজ করেছে তাতে আর ভোট জিততে দখলদারির প্রয়োজন নেই। মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন ভিত্তি তৈরি হয়েছে।

সেটার উপরেই মহানগরের ভোটে আস্থা রেখে দলের গণভিত্তির আসলটা দেখতে চাইছে বাংলার শাসকদল। যদিও বিরোধীদের বক্তব্য, এসব আসলে ওপর ওপর ভাল সাজার কথা। তৃণমূল শান্তিপূর্ণ ভোট করবে এটা সোনার পাথরবাটির মতো।