মেদিনীপুর মেডিক্যালের পর দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল! ইঞ্জেকশন দেওয়ার পরই অসুস্থ হয়ে পড়লেন ৮ প্রসূতি। অভিযোগ, ভুল ইঞ্জেকশন দেওয়ার পর থেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন একের পর এক প্রসূতি। শুক্রবার মধ্যরাতে ও শনিবার ভোরে একের পর এক অসুস্থ প্রসূতিকে পাঠানো হয় সিসিইউ ওয়ার্ডে। বর্তমানে আটজন প্রসূতি সিসিইউ ওয়ার্ডেই ভর্তি রয়েছেন। হাসপাতাল সূত্রে খবর, সকলের শারীরিক অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল রয়েছে। কিন্তু পরিবারের অভিযোগ, বিপদ এখনও কাটেনি। শুক্রবার রাতেই পৌঁছন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ সুদীপ দাস। শনিবার ভোর ৪টে পর্যন্ত হাসপাতালে ছিলেন জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। তিনি জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, গোটা ঘটনার তদন্তের জন্য শুক্রবার রাতেই একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। যে সমস্ত ওষুধ, ইঞ্জেকশন ও স্যালাইন রোগীদের দেওয়া হয়েছিল, সেইসব সংরক্ষণ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে। সোমবার তদন্ত কমিটির একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হবে। প্রসূতির পরিবারের লোকজনের দাবি, শুক্রবার সকালে ওই হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে বেশ কয়েকজন ভর্তি হন। রাতে তাঁদের একটি ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়। অভিযোগ, ইঞ্জেকশন দেওয়ার পর হঠাৎ শরীর খারাপ হতে শুরু করে তাঁদের। কারও কাঁপুনি দিতে শুরু করে। কেউ বা শ্বাসকষ্টে ছটফট করতে থাকেন বলেই অভিযোগ।
Advertisement
তড়িঘড়ি তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় সিসিইউতে। এই খবর শুনে উত্তেজিত হয়ে পড়েন প্রসূতির পরিবারের লোকজন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে গাফিলতির অভিযোগে সরব হন। খবর পেয়ে রাতেই হাসপাতালে পৌঁছন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ সুদীপ সেন। একাধিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকও ঘটনাস্থলে যান। এক প্রসূতির স্বামী মিঠুন মালি বলেন, ‘আমার স্ত্রী সুস্থই ছিলেন। রাতের ইঞ্জেকশনের পরেই হঠাৎ শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। আমরা প্রতিবাদ করতে গেলে আমাদের বাইরে বের করে দেওয়া হয়।’ ঘটনার খবর পেয়ে বিশাল পুলিশ বাহিনী নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছন বালুরঘাট থানার আইসি সুমন্ত বিশ্বাস।
Advertisement
কয়েকমাস আগে প্রায় একই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল। চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি, মেদিনীপুর মেডিক্যালে পাঁচ প্রসূতি সন্তানের জন্ম দেন। তাঁরা হলেন রেখা সাউ, মামণি রুইদাস, মাম্পি সিং, মিনারা বিবি এবং নাসরিন খাতুন। নাসরিনই ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ। অভিযোগ, মেয়াদোত্তীর্ণ রিঙ্গার্স ল্যাকটেট স্যালাইনে অসুস্থ হয়ে পড়েন তাঁরা। সন্তান জন্ম দেওয়ার পরপরই মৃত্যু হয় মামণির। বাকি চারজনের অবস্থা ক্রমশ আশঙ্কাজনক হয়ে ওঠে। দীর্ঘ কয়েকমাস ধরে চিকিৎসা চলে তাঁদের। আপাতত তাঁরা বিপন্মুক্ত বলে জানা গিয়েছে।
Advertisement



