রণকৌশল একই রেখে সীতারাম ইয়েচুরির পথেই আপাতত হাঁটার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিপিএম। সেজন্য বিজেপিকে ঠেকাতে দলের প্রয়াত প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদকের নীতি মেনে ইন্ডিয়া জোটে থেকেই সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিরুদ্ধে লড়াই চালাবে। খসড়া রাজনৈতিক প্রস্তাবে এমনটাই সিদ্ধান্ত হয়েছে।
তবে রাজ্যের ক্ষেত্রে রণকৌশলে সামান্য পরিবর্তন আনা হয়েছে। যেহেতু ইন্ডিয়া জোটের আর এক শরিক দল তৃণমূল রাজ্যের ক্ষমতায় রয়েছে, সেজন্য বিজেপির পাশাপাশি তৃণমূলকেও দলের শত্রুপক্ষ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই দ্বিমুখী প্রস্তাবটি ইতিমধ্যেই পার্টির নিচুতলায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আগামী ৫ মার্চের মধ্যে সংশোধনী জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জানা গিয়েছে, সামনেই সিপিএমের ২৪তম পার্টি কংগ্রেস। আগামী ২-৬ এপ্রিল মাদুরাইতে এই দলীয় কর্মসূচি রাখা হয়েছে। সেখানে বামপন্থী নেতাদের পাখির চোখ হবে সীতারামের উত্তরসূরি নির্বাচন ও রাজনৈতিক রণকৌশলের লাইন। মূলত এই দুইটি বিষয়ের ওপর জোর দেওয়া হবে সিপিএম-এর মাদুরাই কংগ্রেসে।
উল্লেখ্য, সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে থাকতে থাকতেই প্রয়াত হন সীতারাম ইয়েচুরি। অন্তবর্তীকালীন অস্থায়ী আহ্বায়কের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাত। সেজন্য পার্টি কংগ্রেসেই ঠিক হবে সীতারামের উত্তরসূরি কে হবেন? কে পার্টির দায়িত্ব সামলাবেন? ইতিমধ্যে পার্টির অন্দরে কেরল থেকে এমএ বেবি ও বাংলা থেকে মহম্মদ সেলিমের নাম নিয়ে আলোচনা চলছে। মাদুরাই কংগ্রেসেই পরবর্তী সাধারণ সম্পাদকের নাম চূড়ান্ত করা হবে।
এদিকে ইয়েচুরির মৃত্যুর পর পার্টির রাজনৈতিক রণকৌশল গ্রহণ করা হবে কোন পথে? সেবিষয়েও মাদুরাই কংগ্রেসে আলোচনা করা হবে। আপাতত খসড়া প্রস্তাব অন্য কোনও লাইনে নেওয়ার কথা বলা হয়নি। বিজেপি ও সাম্প্রদায়িক শক্তিকে ঠেকাতে বাম গণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির হাত ধরেই চলার কথা বলা হয়েছে। পার্টির খসড়া রাজনৈতিক প্রস্তাবে সেই কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তবে এবিষয়ে পার্টির নিচুতলার নেতাকর্মীদের সংশোধনী প্রস্তাবের পথ খোলা রয়েছে। পাশাপাশি, কেন্দ্রে ইন্ডিয়া জোটের সঙ্গে থাকলেও শরিক দল তৃণমূলের ক্ষেত্রে বাংলায় ভিন্ন মত সিপিএম-এর কেন্দ্রীয় কমিটির। সেখানে তৃণমূলকে শত্রুপক্ষ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। বাংলার শাসকদলকে সাম্প্রদায়িক, দুর্নীতিগ্রস্থ ও বিজেপির সহায়ক দল বলে প্রচার চালাবে সিপিএম।