চিকিৎসা পরিষেবার অব্যবস্থা ও গাফিলতির চিত্র ফের একবার প্রকাশ্যে এল উত্তরাখণ্ডে। মাত্র এক বছরের একটি শিশুর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে উঠেছে গোটা রাজ্য। অভিযোগ, চার জেলার পাঁচটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ঘুরেও জরুরি চিকিৎসা পায়নি শিশুটি। অবশেষে দীর্ঘ ভোগান্তির পরে মৃত্যু হয় সেনা অফিসার দীনেশচন্দ্র জোশীর একমাত্র সন্তান শিবাংশ জোশীর। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি দুঃখ প্রকাশ করে ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
শিবাংশের বয়স ছিল মাত্র এক বছর দু’মাস। ১০ জুলাই আচমকাই বমি শুরু হয় তার, দেখা দেয় জলের অভাবজনিত ডিহাইড্রেশনের সমস্যা। প্রথমে তাকে নেওয়া হয় চামোলির গ্বলদামের একটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। সেখান থেকে তাঁকে পাঠানো হয় ২২ কিমি দূরে বৈজনাথ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। কিন্তু অভিযোগ, সেখানেও কোনও শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ছিলেন না। এরপর নিয়ে যাওয়া হয় বাগেশ্বর জেলা হাসপাতালে।
Advertisement
শিবাংশের বাবার অভিযোগ, ‘জরুরি বিভাগে দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক ফোনে ব্যস্ত ছিলেন। নার্সেরা গল্পে মশগুল। কেউ শিশুটিকে ছুঁয়েও দেখেননি। বরং আলমোরা পাঠিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দেন।’ মা জানান, ১০৮ নম্বরে ফোন করলেও দীর্ঘক্ষণ অ্যাম্বুল্যান্স আসেনি। রাত সাড়ে ৯টার পরে অ্যাম্বুল্যান্স এসে পৌঁছায়। শিবাংশকে আলমোরা মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে ফের পাঠানো হয় নৈনিতালের হলদওয়ানি হাসপাতালে। অবশেষে ১২ জুলাই শিশুটিকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয় এবং ১৬ জুলাই মৃত্যু হয় তার।
Advertisement
শোকাহত দীনেশচন্দ্র জোশীর প্রশ্ন, ‘আমার ছেলে কী অপরাধ করেছিল? জরুরি চিকিৎসা পরিষেবা কি এরকমই? আর কাউকে যেন এমন দুর্ভোগের শিকার না হতে হয়।’ ঘটনার পরেই নড়েচড়ে বসেছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তর। মুখ্যমন্ত্রী ধামি একে ‘অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক’ বলে অভিহিত করে জানিয়েছেন, ‘যদি কারও গাফিলতি প্রমাণিত হয়, তবে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্যের স্বাস্থ্যব্যবস্থা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি বিশিষ্ট মহলেও ক্ষোভ বাড়ছে।
Advertisement



