কলকাতায় কলকাতা পুরসভার নির্বাচনের ফলাফলে বামফ্রন্টের জন্য আশার আলো। যদিও নতুন মুখ নয়, অভিজ্ঞ যোদ্ধাদের উপর ভরসা করেই ১৪৪ ওয়ার্ডের পুরসভায় মাত্র দু’টি আসন ঝুলিতে ভরেছে লাল ব্রিগেড।
তবে ভোটপ্রাপ্তির হার খানিকটা অক্সিজেন যুগিয়েছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটকে। হিসেব বলছে, কলকাতা পুরনির্বাচনে শুধু সিপিএমের প্রাপ্ত ভোটই বিজেপির চেয়ে বেশি।
Advertisement
আর সম্মিলিতভাবে বামফ্রন্টের ভোট আরও বেশি ১১.১৩ শতাংশ। অর্থাৎ পুরনির্বাচনে দ্বিতীয় বামফ্রন্ট। আর বিজেপি আটকে নয়ের কোঠাতেই। তাদের প্রাপ্ত ভোট ৮.৯৪ শতাংশ। ঘাসফুল ঝড়ে সম্পূর্ণ ফিকে গেরুয়া।
Advertisement
কলকাতা পুরসভায় বামেদের প্রভাব খুঁজতে গেলে হতাশই হতে হবে। তুলনামূলক সংখ্যাতত্ত্বের নিরিখে ২০১৫ সালের তুলনায় এবার লাল ব্রিগেড সত্যিই ফিকে।
কারণ, সেবার ১৪৪ ওয়ার্ডের মধ্যে ১৫ টির দখল নিয়েছিল বামফ্রন্ট। আর এবার মাত্র ২। জিতেছেন ৯২ নং ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী মধুছন্দা দেব এবং ১০৩ নং ওয়ার্ডের নন্দিতা দাস।
অভিযোগ, নন্দিতা দাস জয়ের সার্টিফিকেট নিতে গিয়ে বাধার মুখে পড়েন। পরে অবশ্য তিনি নিজের শংসাপত্র তুলতে পারেন। তারপর এলাকায় বাম কর্মী , সমর্থকদের নিয়ে ছোটখাটো বিজয় মিছিলে অংশ নেন নন্দিতা।
জয়ের নেপথ্য কারণ হিসেবে তাঁর ব্যাখ্যা, বামপন্থী সবসময় মানুষের পাশে থাকে , মানুষের জন্য কাজ করে। ক্ষমতায় থাকুক বা না থাকুক। তাই মানুষের আশীর্বাদেই এই জয়।
অন্যদিকে, ৯২ নং ওয়ার্ড থেকে জয়ী বিদায়ী কাউন্সিলর মধুছন্দা দেব। তিনি আগেরবারও এই ওয়ার্ড থেকে সিপিএমের হয়ে লড়াই করে জিতেছিলেন মধুছন্দা দেব। এবারও জনতা তাঁকেই নির্বাচিত করল। তবে ভোটপ্রাপ্তির নিরিখে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে সিপিএম।
শুধু সিপিএমই পেয়েছে ৯.১ শতাংশ। এরপর সিপিআই, ফরওয়ার্ড ব্লক, আরএসপি-সহ শরিক দলগুলির প্রাপ্ত ভোট মিলিয়ে তা ১১.১৩ শতাংশ। অর্থাৎ দু’অঙ্ক পেরিয়েছে ।
একুশের বিধানসভাতেও ৪ শতাংশে নেমে গিয়েছিল আলিমুদ্দিনের জনসমর্থন। এবার সেই মরা গাঙে খানিক জোয়ার। পরিসংখ্যান বলছে, অন্তত ৬৬ টি ওয়ার্ডের লড়াইয়ে সরাসরি দ্বিতীয় স্থানে বামেরা। পঞ্চাশের বেশি আসনে দ্বিতীয় বিজেপি ৷
এদিকে, বামেরা দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসার পর তাদের উপর হামলা শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ। নেতাজী নগরের এস এফ আই ও ডি ওয়াই এফ আই অফিস তৃণমূল তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে।
টালিগঞ্জের ৯৮ নম্বর ওয়ার্ডের নেতাজি নগর বাস্তুহারা সমিতির অফিস ভাঙচুর হয়েছে, গোটা বিল্ডিংয়ে তৃণমুলের পতাকা লাগানো হয়েছে বলে অভিযোগে সরব বাম কর্মী, সমর্থকরা। জয়ী প্রার্থীরাও অভিযোগ করেছেন, তাঁদের উত্থানে ভয় পেয়ে দমন করতে চাইছে শাসকদল।
Advertisement



