তাঁকে সবাই বলত গ্র্যান্ড ওল্ড ম্যান অব স্পাইসেস। তিনি ছিলেন মশলার বহু পুরনাে ব্র্যান্ড এমডিএইচের মালিক। বয়স হয়েছিল ৯৭। বৃহস্পতিবার তিনি মারা গেলেন। কয়েক সপ্তাহ ধরে দিল্লির হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন মহাশয় ধর্মপাল গুলাটি। এদিন ভােরে হৃদরােগে তাঁর মৃত্যু হয়।
নিজের মশলার বিজ্ঞাপন নিজেই করতেন গুলাটি। তিনি ছিলেন সবচেয়ে বেশি বয়সী অ্যাডস্টার। ব্যাপারটা আচমকাই শুরু হয়েছিল। একবার তাঁর পণ্যের বিজ্ঞাপনের জন্য এক অভিনেতা আসতে পারেননি। পরিচালক গুলাটিকেই সেই ভূমিকায় নামতে বলেন। গুলাটি পরে বলেছিলেন, আমি ভেবে দেখলাম আমি নিজেই অভিনয় করলে কিছু টাকা সাশ্রয় হবে। তাই পরিচালকের কথায় রাজি হয়ে গেলাম।
Advertisement
গত বছর তাঁকে পদ্মভূষণ পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল। তাঁর মৃত্যুতে শােকপ্রকাশ করেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল ও উপমুখ্যমন্ত্রী মনীশ শিসসাদিয়া। কেজরিওয়াল বলেন, ধরমপালজিকে দেখে আমরা প্রেরণা পেতাম তিনি সমাজের স্বার্থে জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। ঈশ্বর তাঁর আত্মাকে আশীর্বাদ করুন। শিসসাদিয়া বলেন, ভারতের উদ্যোগপতিদের কাছে তিনি ছিলেন প্রেরণাস্বরূপ। এমডিএইচ-র মালিক ধরমপাল মহাশয় এদিন প্রয়াত হয়েছেন। আমি তাঁর মতাে প্রাণবন্ত মানুষ কখনও দেখিনি। তাঁর আত্মা শান্তি পাক।
Advertisement
১৯২৩ সালে অধুনা পাকিস্তানের শিয়ালকোটে জন্মগ্রহণ করেন গুলাটি। তিনি পড়াশােনা করেছিলেন ফিফথ গ্রেড পর্যন্ত। তারপর বাবা মহাশয় চুনিলাল গুলাটির মশলার ব্যবসায় যােগ দেন। ১৯৩৭ সালে বাবার সহায়তায় তিনি একটি আলাদা ব্যবসা শুরু করেন। তখন আয়না, সাবান ও চাল বিক্রি করতেন। সেই কোম্পানি ফেল করলে ফের বাবার ব্যবসায় যােগ দেন। তাঁর বাবার কোম্পানির নাম ছিল মহাশয়া ডি হাত্তি। তাদের পরিবারকে বলা হত ডিগগি মিরচিওয়ালে।
দেশভাগের পর তাঁরা দিল্লি চলে আসেন। তখন গুলাটির কাছে ছিল মাত্রই ১৫০০ টাকা। প্রথমে গুলাটি দিল্লিতে টাঙা চালাতেন। পরে দিল্লির করােল বাগে আজমল খান রােডে তিনি প্রথম দোকানটি খােলেন। ১৯৫৯ সালে তিনি এমডিএইচ কোম্পানি ফের প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে ভারত ও দুবাইয়ে এমডিএইচ-র ১৮ টি কারখানা আছে। ওই কোম্পানির ৬২ টি পণ্য বাজারে পাওয়া যায়। তা ১৫০ রকম প্যাকেজিং-এর মাধ্যমে বিক্রি হয়। এমডিএইচ’র মশলা সারা বিশ্বেই বিক্রি হয়। উত্তর ভারতে মশলার বাজারের ৮০ শতাংশই এমডিএইচ-র দখলে।
Advertisement



