• facebook
  • twitter
Wednesday, 10 December, 2025

নাগরিকত্ব আগে, ভোটাধিকার পরে- সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণে অনিশ্চিত মতুয়াদের ভোট দেওয়ার সম্ভাবনা

সুপ্রিম কোর্ট মঙ্গলবার জানিয়েছে, যাঁরা আবেদন করেছেন, তাঁদের আবেদন যাচাই না হওয়া পর্যন্ত , তাঁরা ভারতের নাগরিক বলে ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা ভোটাধিকার পাবেন না

অনিশ্চিত হয়ে পড়ল পশ্চিমবঙ্গের সিএএ-তে আবেদনকারীদের ভোটাধিকারের ভবিষ্যৎ। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, নাগরিকত্ব নিশ্চিত হওয়ার পরই ভোটাধিকার মিলবে। এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিএএ-তে নাগরিকত্বের আবেদনকারী মতুয়ারা ভোট দিতে পারবেন কি ? সুপ্রিম কোর্ট মঙ্গলবার জানিয়েছে, যাঁরা আবেদন করেছেন, তাঁদের আবেদন যাচাই না হওয়া পর্যন্ত , তাঁরা ভারতের নাগরিক বলে ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা ভোটাধিকার পাবেন না। এদিন বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির বেঞ্চ স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, প্রথমে নাগরিকত্ব পেতে হবে, তারপরেই ভোটার তালিকায় নাম তোলার বিষয়টি আসবে।

 
তবে নাগরিকত্ব নির্ধারণের ক্ষেত্রে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের কোনও ভূমিকা নেই বলে কমিশনের তরফে জানান আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদী। তিনি বলেন, এক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেবে কেন্দ্রীয় সরকার।

Advertisement

জাতীয় নির্বাচন কমিশন আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, যাঁরা এখনও ভারতের নাগরিক নন, যাঁদের নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে, তাঁদের নাম ভোটার তালিকায় থাকতে পারবে না। এর পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা আত্মদীপ। তাঁদের দাবি ছিল, যাঁদের আবেদন এখনও বিচারাধীন রয়েছে, তাঁদের আপাতত ভোট দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হোক। আবেদন করা হয়, এসআইআর-এর পর যে সংশোধিত ভোটার তালিকা প্রকাশ হবে, সেখানে যেন তাঁদের জায়গা দেওয়া হয়।
এর পাশাপাশি পিটিশনের মাধ্যমে নাগরিকত্ব যাচাইয়ের প্রক্রিয়া আরও দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্দেশ দেওয়ার আবেদনও জানানো হয়। আবেদন জানান স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার আইনজীবী করুণা নন্দী। তবে আদালত এ বিষয়ে কোনও নির্দেশ দেয়নি।
নাগরিকত্ব সংশোধন আইনে স্পষ্ট বলা হয়েছে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যাঁরা ভারতে এসেছেন, তাঁরা নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে কারা নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন সেই বিষয়েও সুনির্দিষ্ট কিছু বিষয় উল্লেখ করা আছে। সেই জাতিগত শর্ত যদি মানা হয়, তবেই তাঁরা নাগরিকত্ব পাবেন। ফলে যতক্ষণ পর্যন্ত না বিষয়গুলি যাচাই করা হচ্ছে, যতদিন তাঁদের আবেদন বিচারাধীন থাকছে, ততদিন তাঁদের ভারতের নাগরিক হিসেবে গণ্য করা হবে না।
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এই নোটিসের পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকার যদি নাগরিকত্ব যাচাই প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করার নির্দেশ দেয় এবং যদি সেই প্রক্রিয়া ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ হয়, তবেই সিএএ-র অধীনে আবেদনকারীরা তাঁদের নাগরিকত্ব পেতে পারেন। নাগরিকত্ব নিশ্চিত হলে তবেই তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ তৈরি হবে। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে নাগরিকত্ব নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ভোটাধিকারের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত।
প্রসঙ্গত, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন, ২০১৯ হল ভারতের একটি আইন যা আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, ও পাকিস্তান থেকে আসা হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পারসি এবং খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের ভারতের নাগরিকত্ব পেতে সাহায্য করে, যদি তাঁরা ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৪-র বা তার আগে ভারতে প্রবেশ করে থাকেন।

Advertisement

Advertisement