ভারত হারের আতঙ্কে এখন প্রায় কোণঠাসা। তাই তো দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় টেস্টে ভারত কি পারবে ম্যাচটা ড্র করতে? অথবা জয় তুলে আনতে। এই নিয়ে ড্রেসিং রুমে কোচ গৌতম গম্ভীর একেবারে চুপচাপ। সারাক্ষণ মাথায় হাত দিয়ে ভাবছেন কীভাবে সামাল দেওয়া যাবে প্রতিপক্ষ দলের বড় অঙ্কের রানকে। এখনও পর্যন্ত ৪৪৯ রানে পিছিয়ে রয়েছে ভারত। তাই ভারতের লক্ষ্যমাত্রা জয়ের জন্য ৪৫০ রানে কীভাবে পৌঁছবে এই কঠিন উইকেটে, তা নিয়ে কোনও অঙ্ক কষা সম্ভব হচ্ছে না। অধিনায়ক ঋষভ পন্থ থেকে শুরু করে সতীর্থ খেলোয়াড়দের মুখ ফ্যাকাশে হয়ে গিয়েছে। চতুর্থ দিনের শেষে ভারত ইতিমধ্যেই দুটো উইকেট হারিয়েছে। তাদের ঘরে রয়েছে মাত্র ২৭ রান। অবশ্য তার আগে দক্ষিণ আফ্রিকা ৫ উইকেটে ২৬০ রান করে দান ছেড়ে দেয়। তখন থেকেই চাপে পড়ে যায় ভারতীয় দল। এখানে বলতেই পারা যায়, দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা কেন এত দেরি করে ডিক্লেয়ার ঘোষণা করলেন? হয়তো ভেবেছেন, এই উইকেটে ভারতীয় খেলোয়াড়দের উইকেট ভাঙতে তাঁদের কোনও অসুবিধা হবে না। অবশ্যই এই ভাবনাটা অমূলক নয়।
ধীর গতিতে খেলা শুরু করে দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতের দুই ওপেনার যশস্বী জয়সওয়াল ও লোকেশ রাহুল দলের ২১ রানের মধ্যেই প্যাভিলিয়নে ফেরত গেলেন। প্রথম ইনিংসে তারকা বোলার দক্ষিণ আফ্রিকার সেই মার্কো জানসেন প্রথম উইকেটটি তুলে নিলেন যশস্বী জয়সওয়ালকে আউট করে। যশস্বীর ব্যাট থেকে এসেছে মাত্র ১৩ রান। আর লোকেশ রাহুল ৬ রান করে সাইমন হারমারের বলে সরাসরি বোল্ড আউট হন। ভারতের এই দৈন্যদশার কথা হয়তো আগাম জেনে ফেলেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক। দিনের শেষে ভারত ২৭ রান করেছে ২ উইকেট হারিয়ে। ব্যাট করছেন সাই সুদর্শন ২ রানে আর কুলদীপ যাদব ৪ রানে। এখন দেখার বিষয়, টেস্টের শেষ দিনে ভারতীয় দলের খেলোয়াড়রা উইকেটে কতক্ষণ টিকে থাকতে পারেন।
দক্ষিণ আফ্রিকা চতুর্থ দিনের খেলা শুরু করে ৫ উইকেট হারিয়ে ২৬০ রান করে ভারতকে ব্যাট করার জন্য আহ্বান করে। টি স্টাবস মাত্র ৬ রানের জন্য শতরান করতে পারলেন না। তিনি রবীন্দ্র জাদেজার বলে সরাসরি বোল্ড আউট হন। তখন তাঁর ব্যাটে রান ছিল ৯৪। আর এক রানের জন্য অর্ধ শতরান থেকে বঞ্চিত হলেন টি জে জর্জি। তিনি জাদেজার বলে এলবিডব্লু হয়ে ৪৯ রান করে প্যাভিলিয়নে চলে যান। ওপেনার রিকেলটন ৩৫ রানে ও মার্করাম ৩৯ রান করে আউট হয়ে যান। এই দুই খেলোয়াড় রবীন্দ্র জাদেজার বলে শিকার হন। এই ইনিংসে ভারতের রবীন্দ্র জাদেজা ছাড়া অন্য কোনও বোলার নজরেই আসতে পারলেন না।
Advertisement
এখন প্রশ্ন দক্ষিণ আফ্রিকার বোলাররা যদি এই উইকেটে খেলোয়াড়দের চাপে রাখতে পারেন, তাহলে ভারতের বোলাররা কেন নিজেদের প্রকাশ করতে ব্যর্থ হচ্ছেন? এতদিন ভারতীয় দলের বোলিং বিভাগটাই ছিল বড় অস্ত্র। সেই অস্ত্রে কি ভাঁটা পড়ে গেল, সেই কথাটা উঠে আসতেই পারে। ভারতীয় শিবিরে যেভাবে কলঙ্কের দাগ লাগতে শুরু করেছে, সেখানে এই লজ্জাকে কীভাবে দূর করা যায়, তার জন্য কোচ গৌতম গম্ভীরকে বড় ভূমিকা নিতে হবে। যদি দলটাকে ঠিকমতো সাজানা না যায়, তাহলে কোনও পরীক্ষা-নিরীক্ষার মূল্য থাকবে না। ইডেন উদ্যানে যে লজ্জার হারের সাক্ষী আমরা ছিলাম, তারপরেও গুয়াহাটি টেস্টে সেই লজ্জায় আবারও কি মুখ দেখাতে হবে? ভারতীয় বোলাররা যেভাবে ব্যর্থ হচ্ছেন, তা কখনওই মেনে নেওয়া যায় না। এমনকি ব্যাটসম্যানরাও তাঁদের দায়িত্ববোধ হারিয়ে ফেলেছেন। যার ফলে ভারতীয় দলের স্কোরবোর্ডটা দেখলে হতাশাই কথা বলে যায়। তবুও বার বার বলতে হয়, টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে কেন আমরা এমন লজ্জার সামনে বার বার দাঁড়াবো?
Advertisement
এখন সচেতন হওয়ার জন্য সব খেলোয়াড়দের মনসংযোগ বাড়ানোর জন্য বিশেষ ক্লাস নেওয়া উচিত।
Advertisement



