পাটনা, ২০ নভেম্বর— বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে দশম বারের জন্য শপথ নিলেন জনতা দল ইউনাইটেড প্রধান নীতীশ কুমার। তাঁর সঙ্গে শপথ নিল পুরো মন্ত্রিসভা। সেই তালিকায় রয়েছে বেশ কিছু নতুন মুখ। তাঁদের মধ্যে এবার বিশেষ নজর কাড়লেন জামুইয়ের বিধায়ক এবং ক্রীড়াক্ষেত্রে দেশকে বহুবার গর্বিত করা শ্রেয়সী সিংহ। মাত্র চৌত্রিশ বছর বয়সেই পদকজয়ী শুটার থেকে দুই বারের বিধায়ক, আর এ বার বিহারের নতুন মন্ত্রিসভার সদস্য— এই উজ্জ্বল পথচলা তাঁকে নিয়ে গেল রাজ্য রাজনীতির প্রথম সারিতে।
শ্রেয়সীর পরিচয় বহুমুখী। তিনি প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দ্বিগ্বিজয় সিংহের কন্যা। পারিবারিক রাজনীতির ঐতিহ্য তাঁর সঙ্গে জন্মসূত্রে জুড়ে থাকলেও ব্যক্তিগত প্রতিভায় ক্রীড়াক্ষেত্রে তিনি আলাদা দাগ কেটেছেন। ২০১৮ সালের কমনওয়েলথ ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় শুটিংয়ে স্বর্ণপদক জয় তাঁকে জাতীয় ক্রীড়াঙ্গনে প্রথম সারিতে পৌঁছে দেয়। ২০১৪-র কমনওয়েলথে রুপোর পদক, একই বছরে এশিয়ান ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় রুপো, আর অর্জুন পুরস্কার— তাঁর ঝুলিতে রয়েছে দৃষ্টান্তমূলক সাফল্য। গত বছর প্যারিস অলিম্পিকে ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি।
Advertisement
তাঁর রাজনীতিতে প্রবেশ ২০২০ সালে, ভারতীয় জনতা পাটিতে যোগ দিয়ে। সেই বছরই প্রথম বিধানসভা নির্বাচনে জামুই কেন্দ্র থেকে প্রায় একচল্লিশ হাজার ভোটে জিতে বিধানসভায় পা রাখেন। এ বছর সেই ব্যবধান আরও বাড়িয়ে চুয়ান্ন হাজারের বেশি ভোটে হারিয়েছেন প্রতিদ্বন্দ্বী দল আরজেডি প্রার্থীকে। দুই পর্বে পরপর জয় তাঁকে দলে ও রাজ্য রাজনীতিতে আরও শক্ত অবস্থানে নিয়ে যায়।
Advertisement
তবে প্রথমবার নির্বাচনে জেতার পর তিনি মন্ত্রিসভায় স্থান পাননি। দ্বিতীয় বার জামুইয়ের আস্থাভাজন হয়ে বিপুল ব্যবধানে জয়ের ফলে তাঁর দায়িত্ববৃদ্ধি ছিল সময়ের অপেক্ষা। এবার নীতীশ কুমারের নতুন মন্ত্রিসভায় শপথ নিয়ে সেই প্রত্যাশা পূরণ হল।
শপথগ্রহণের পরে শ্রেয়সী সিংহ কৃতজ্ঞতা জানালেন জামুইবাসীর প্রতি। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন নিজের পরিবারকেও। নতুন মন্ত্রিসভায় তরুণ শক্তি এবং অভিজ্ঞ নেতৃত্ব একসঙ্গে কাজ করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘জামুইবাসীর বিশ্বাসই আমার সবচেয়ে বড় শক্তি। বিহারের উন্নয়নে সম্পূর্ণ নিষ্ঠা নিয়ে কাজ করব।’
নীতীশ কুমারের নেতৃত্বে নতুন জোট সরকারে শ্রেয়সী সিংহের অন্তর্ভুক্তি নিঃসন্দেহে একটি দৃঢ় বার্তা— ক্রীড়া, প্রশাসন ও রাজনীতির মধ্য দিয়ে গড়া তাঁর অভিজ্ঞতা রাজ্যের পরিষদীয় রাজনীতিতে নতুন গতি আনবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
Advertisement



