কলকাতায় নকল নম্বর প্লেট চক্রের হদিশ পেল কসবা থানার পুলিশ। এক স্কুটির ভুয়ো নম্বর প্লেটের সূত্র ধরে জট খুলল একের পর এক রহস্য। পুলিশের এই বিশেষ অভিযানে গ্রেপ্তার হয়েছেন ৮ জন। উদ্ধার হয়েছে নম্বর প্লেট তৈরির মেশিন এবং বিপুল পরিমাণ জাল নম্বর প্লেট।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৬ অক্টোবর কসবা ট্র্যাফিক গার্ডের সার্জেন্ট সৌভিক বিশ্বাস ডিপিএস জুনিয়র রুবি পার্কের সামনে এক স্কুটি আটকান। গাড়িটির নম্বর প্লেট ছিল – ডাবলু বি ০৫সি ১৩১৭ পরে খতিয়ে দেখা যায়, ওই নম্বরটি আসলে অন্য এক ব্যক্তির স্কুটির রেজিস্ট্রেশন নম্বর। অর্থাৎ, আটক স্কুটির প্লেটটি ভুয়ো।
Advertisement
এর পরেই শুরু হয় তদন্ত। পুলিশ জানতে পারে, এর আগে ১০ অক্টোবর রঞ্জন দত্ত নামে এক ব্যক্তি ইমেল মারফত অভিযোগ করেছিলেন, তাঁর স্কুটির নম্বর ব্যবহার করে কেউ শহরে বেআইনি কাজ করছে। সেখান থেকেই সন্দেহের সূত্র ধরে তদন্তকারীরা একের পর এক খোঁজ শুরু করেন তাঁরা।
ঘটনায় প্রথমে ধরা পড়ে মঙ্গল নস্কর, যাঁর স্কুটি আটকানো হয়েছিল। জেরায় তাঁর মুখে উঠে আসে পরমেন্দ্র প্রসাদ কেশরীর নাম – যিনি সেই নকল নম্বর প্লেট-সহ স্কুটি মঙ্গলের হাতে তুলে দিয়েছিলেন। এরপরেই তদন্তের জাল পৌঁছে যায় তিলজলা অঞ্চলে।
Advertisement
সেখান থেকে বিক্রম সাউ নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁর দোকান থেকে উদ্ধার হয় একাধিক ভুয়ো নম্বর প্লেট। বিক্রমের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ হানা দেয় ম্যাকলিয়ড স্ট্রিটের এক বাড়িতে, যেখানে মেলে নম্বর প্লেট তৈরির মেশিন এবং বিভিন্ন রাজ্যের শতাধিক ভুয়ো নম্বর প্লেট। সেখান থেকে আরও পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করা হয় – শেখ নিয়াজুদ্দিন, মীর সাহেনুল আখতার, মীর ফারুক আলি, সামির আলি এবং সলমন খান।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতরা জেরায় স্বীকার করেছে যে ‘গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী’ যে কোনও রাজ্যের নম্বর প্লেট বানিয়ে সরবরাহ করত তাঁরা। এসব প্লেট ব্যবহার হত বেআইনি কাজ, প্রতারণা এবং আইন এড়ানোর উদ্দেশ্যে। তদন্তকারীদের অনুমান, এই চক্রের সঙ্গে আরও বড় অপরাধচক্র যুক্ত থাকতে পারে। শহরের অন্য অংশেও এদের নেটওয়ার্ক ছড়িয়ে আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
Advertisement



