কলকাতার কুমোরটুলি ঘাটে মঙ্গলবার সকালে সামনে এল ভয়ঙ্কর ঘটনা। গঙ্গার ধারে দুই মহিলা একটি ভারী নীল রঙের ট্রলি ব্যাগ নিয়ে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরি করছিলেন। তাঁদের দেখে স্থানীয়দের সন্দেহ হয়। জিজ্ঞাসাবাদ করতে উত্তর আসে, ব্যাগের ভেতরে তাঁদের মৃত কুকুর রয়েছে। সেটি গঙ্গায় ভাসাতে এসেছেন তাঁরা। কিন্তু কথাবার্তায় সন্দেহ হওয়ায় কয়েকজন তাঁদের ঘিরে ধরেন। অবশেষ ব্যাগ খুলতেই যা দেখা যায়, তাতে উপস্থিত সকলের চোখ কপালে ওঠে। ভেতরে ছিল এক মহিলার খণ্ডিত দেহ! মুহূর্তের মধ্যে চারপাশে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। খবর দেওয়া হয় সুতানুটি থানার আউট পোস্টে। পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে দুই মহিলাকে আটক করে এবং ট্রলি ব্যাগটি বাজেয়াপ্ত করে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতদের নাম ফাল্গুনী ঘোষ ও তাঁর মা আরতি ঘোষ। নিহত মহিলার পরিচয়ও জানা যায়। তিনি সম্পর্কে ফাল্গুনীর পিসিশাশুড়ি, নাম সুমিতা ঘোষ।
পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা গিয়েছে, উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রামের একটি ভাড়া বাড়িতে খুন করা হয় সুমিতা ঘোষকে। তারপর প্রমাণ লোপাটের জন্য মা-মেয়ে পরিকল্পনা করেন দেহ গঙ্গায় ফেলে দেবেন। সেই উদ্দেশ্যেই মঙ্গলবার সকালে তাঁরা উত্তর ২৪ পরগনার কাজীপাড়া থেকে ট্রেনে পার্ক সার্কাস আসেন। ব্যাগে দেহ নিয়ে প্রথমে তাঁরা প্রিন্সেপ ঘাটে যান। কিন্তু সেখানে সুযোগ না পেয়ে আহিরীটোলা ঘাটে যান। সেখান থেকেও সুবিধা করতে না পেরে শেষে কুমোরটুলি ঘাটে পৌঁছান।
নির্জন জায়গা দেখে দেহ ফেলার ছক কষেন, কিন্তু স্থানীয়দের সন্দেহে সব পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।
Advertisement
ঘটনার পর পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য আরজি কর হাসপাতালে পাঠিয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, খুনের পর দেহটি টুকরো টুকরো করা হয়। যাতে সহজেই গঙ্গায় ফেলে দেওয়া যায়। তবে কী কারণে এই খুন, তা জানতে ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
এই ঘটনায় গোটা এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা আতঙ্কিত, কীভাবে এমন একটি ঘটনা দিনের আলোয় ঘটতে পারে তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। জয়েন্ট সিপি (ক্রাইম) রূপেশ কুমার জানিয়েছেন, ‘সুমিতা ঘোষকে খুন করা হয়েছে। কিন্তু হত্যার পিছনে কী কারণ রয়েছে, তা জানতে ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। খুব শিগগিরই ঘটনার বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে।’
Advertisement
Advertisement



