হাসিনার জমানায় ‘গুম’ সংক্রান্ত তদন্তে গোপন বন্দিশালার তত্ত্ব ইউনূস সরকারের। দাবি করা হয়েছে, ‘হাসপাতাল’ ও ‘ক্লিনিক’ নামের দুটি গোপন বন্দিশালায় আটকে রাখা হতো অপহৃতদের। গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের রিপোর্টে এমনই দাবি করা হয়েছে। ‘হাসপাতাল’ ও ‘ক্লিনিক’ নামের ওই দুটি গোপন বন্দিশালার অবস্থান ঠিক কোথায় কোথায় ছিল, তা কমিশনের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
বাংলাদেশের একটি প্রথম শ্রেণীর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, বাংলাদেশ পুলিশের ‘র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন’ (র্যাব)-এর গোয়েন্দা শাখা এই দু’টি গোপন বন্দিশালা পরিচালনের দায়িত্বে ছিল। ‘হাসপাতাল’ নামের বন্দিশালাটি ছিল ঢাকার উত্তরায় র্যাব-১ কার্যালয়ের চত্বরে। সেটি ‘টাস্কফোর্স ফর ইন্টারোগেশন’ (টিএফআই) সেল হিসেবে পরিচিত ছিল। যদিও দাবি করা হচ্ছে, এটির দেখভালের দায়িত্বে ছিল র্যাবের গোয়েন্দা শাখা। এছাড়া ‘ক্লিনিক’ নামের আরও একটি গোপন বন্দিশালা ছিল র্যাবের সদর দপ্তরের চত্বরেই। তার কাঠামো ছিল কাচের তৈরি। সেজন্য এটিকে ‘গ্লাস হাউস’ও বলা হতো।
প্রসঙ্গত বাংলাদেশে হাসিনা সরকারের পতনের পরে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস গুমের অভিযোগের তদন্তে একটি কমিশন গঠন করেন। ওই কমিশন ইউনূসের কাছে গত বছরের ডিসেম্বরে প্রথম রিপোর্ট জমা দিয়েছিল। সেই তদন্ত রিপোর্ট অনুসারে বলা হয়েছে, আয়নাঘরে মানুষকে গুম করার নেপথ্যে হাসিনার যোগ ছিল।
গুমবিষয়ক সেই তদন্ত কমিশন র্যাবের বিলুপ্তিরও প্রস্তাব দিয়েছিল। গত ৪ জুন ইউনূসের কাছে গুম তদন্ত কমিশনের দ্বিতীয় রিপোর্ট জমা পড়ে। দ্বিতীয় অন্তর্বর্তী সেই রিপোর্টটিতেই দু’টি গোপন বন্দিশালার সাঙ্কেতিক নামের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। রিপোর্টটি হাতে পেয়ে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় ইউনূস বলেছিলেন, ‘কী ভয়াবহ এক একটি ঘটনা! আমাদের সমাজের ‘ভদ্রলোকেরা’, আমাদেরই আত্মীয়-পরিজনেরা এই ঘটনাগুলি ঘটিয়েছেন।’