সম্প্রতি ট্রাম্প জমানায় আমেরিকায় অবৈধ অভিবাসীদের স্বদেশে ফেরত পাঠানো শুরু হয়েছে। ট্রাম্পের বন্ধু মোদির ভারতের ক্ষেত্রেও তার অন্যথা হয়নি। অথচ ব্রিটেনের রাজকুমার হ্যারির ক্ষেত্রে সেই নিয়ম পালন করা হচ্ছে না। রাজ্যপাট ছেড়ে আসা ব্রিটেনের এই রাজপুত্রকে তিনি সহানুভূতির চোখে দেখছেন। এ বিষয়ে সম্প্রতি নিউ ইয়র্ক পোস্ট-কে একটি সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প জানিয়েছেন, এখনই তেমন কোনও ভাবনা নেই। হ্যারি এবং মেগানকে আমেরিকা ছাড়তে বলা হচ্ছে না।
সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমি এখনই ওটা করতে চাই না। এমনিতেই নিজের স্ত্রীকে নিয়ে যথেষ্ট সমস্যায় আছেন উনি। আর সমস্যা বাড়াতে চাই না। ওঁকে (হ্যারিকে) অব্যাহতি দিতে চাই।’
কিন্তু আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয়বার অভিষেকের আগেই হ্যারির ভিসা সংক্রান্ত প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল ট্রাম্পকে। তিনি ২০২৪ সালের শুরুর দিকে একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, যদি ক্ষমতায় আসেন, ব্রিটেনের রাজকুমারের ভিসা বিতর্ক খতিয়ে দেখবেন। যদি তাঁর মিথ্যাভাষণ প্রমাণিত হয়, এ বিষয়ে পদক্ষেপ করবেন বলেও দাবি করেছিলেন।
প্রসঙ্গত ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদে বসার পর থেকে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছেন। শ’য়ে শ’য়ে মানুষকে অবৈধবাসী বলে চিহ্নিত করে তিনি নিজের দেশে ফেরত পাঠাচ্ছেন। ইতিমধ্যে আমেরিকার সেনা-বিমানে ১০৪ জন ভারতীয়কেও ফেরত পাঠানো হয়েছে। এই অবৈধবাসীদের ‘অপরাধী’ বলে উল্লেখ করেছেন ট্রাম্প। যা নিয়ে তোলপাড় হয়েছে ভারতের রাজনীতি। বিরোধীদের প্রবল প্রতিবাদে উত্তাল হয়েছে সংসদের বাজেট অধিবেশন।
এখন ব্রিটেনের রাজপুত্র হ্যারিকে ছাড় দেওয়ার পর প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যদি ভিসার আবেদনে হ্যারি বয়ানে মিথ্যা বলে থাকেন, তবে তাঁর অভিবাসনও তো অবৈধ। তাহলে তার ক্ষেত্রে কেন অন্য নিয়ম প্রযোজ্য হবে?
উল্লেখ্য, ২০২০ সালে হ্যারি এবং মেগান ব্রিটেনের রাজপরিবার ছেড়ে পাকাপাকিভাবে আমেরিকায় চলে যান। ক্যালিফোর্নিয়ায় পাকাপাকি ভাবে সস্ত্রীক বসবাস করতে শুরু করেন হ্যারি। আমেরিকার নির্দিষ্ট কিছু ভিসার আবেদনে অতীতে মাদক সেবনের রেকর্ড আছে কি না, তা জানতে চাওয়া হয়। মাদক সেবন করে থাকলে ভিসা বাতিল করা হয়। হ্যারি ভিসার আবেদনে জানান, তিনি কোনও মাদক সেবন করেননি। কিন্তু বিতর্ক দানা বাঁধে তাঁর আত্মজীবনী প্রকাশের পর। সেখানে মাদক সেবনের কথা উল্লেখ করেছিলেন ব্রিটেনের রাজকুমার। এর পরেই হ্যারির আমেরিকার ভিসার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়, ভুল তথ্য দিয়ে ভিসার আবেদন করেছিলেন ব্রিটেনের রাজকুমার। নিজের মাদক সেবন সংক্রান্ত কিছু তথ্য তিনি গোপন করেছিলেন।