দিল্লি বারবার জানিয়ে দিয়েছে, ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষবিরতি একেবারেই দ্বিপাক্ষিক সিদ্ধান্ত। তৃতীয় কোনও দেশের ভূমিকা নেই। তাই তাদের হস্তক্ষেপ মেনে নেবে না। তবু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যেন তাঁর দাবি থেকে সরতে নারাজ। ফের প্রকাশ্যে দাবি করলেন, ভারত-পাক যুদ্ধ থামানোর নেপথ্যে তিনিই। শুধু তাই নয়, সেই সাফল্যের পাশাপাশি আরও সাতটি সংঘাত থামানোর দাবি তুলে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য নিজেকে যোগ্য প্রার্থী হিসেবেও তুলে ধরেছেন।
শনিবার এক জনসভায় ট্রাম্প বলেন, ‘আমাকে বলা হয়েছিল, যদি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে পারি, তবে নোবেল পাব। আমি বলেছি, বাকি সাতটা যুদ্ধের কী হবে? আমি তো ইতিমধ্যেই সাতটি যুদ্ধ থামিয়েছি। প্রত্যেকটির জন্য আলাদা নোবেল পাওয়া উচিত।’ তাঁর দাবি, ভারত-পাকিস্তানের সংঘর্ষ ছাড়াও থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া, আর্মেনিয়া-আজারবাইজান, কসোভো-সার্বিয়া, ইজরায়েল-ইরান, মিশর-ইথিওপিয়া এবং রাওয়ান্ডা-কঙ্গোর মতো দেশগুলির মধ্যে তিনি মধ্যস্থতা করে সংঘাত ঠেকিয়েছেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যুদ্ধ থামানোর জন্য বাণিজ্যকেই অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছেন।
Advertisement
ট্রাম্প আরও বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামানো সহজ হবে। কারণ পুতিনের সঙ্গে আমার সম্পর্ক ভালো। কিন্তু তিনি আমাকে হতাশ করেছেন। তবু কোনও না কোনও উপায়ে আমরা দু’দেশের সংঘাত থামাব।’
Advertisement
প্রসঙ্গত, সংঘর্ষবিরতির দিন থেকেই ভারত-পাক যুদ্ধবিরতি নিয়ে ট্রাম্প কৃতিত্ব দাবি করে আসছেন। যদিও দিল্লি শুরু থেকেই স্পষ্ট করে দিয়েছে, এই সিদ্ধান্ত দুই দেশের মধ্যে আলোচনার ফল, তৃতীয়পক্ষের কোনও ভূমিকা নেই। এমনকি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও সরাসরি ট্রাম্পকে ফোনে সে কথাই জানিয়েছিলেন।
এদিকে, নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য নিজের নাম সামনে আনতে ট্রাম্পের আগ্রহ নতুন নয়। আগেও তিনি বারবার পূর্বসূরী বারাক ওবামার উদাহরণ টেনে বলেছেন, ওবামা ক্ষমতায় আসার কিছুদিনের মধ্যেই এই পুরস্কার পেয়েছিলেন। তাঁর দাবি, তিনি ক্ষমতায় এসে অন্তত ছয়-সাতটি যুদ্ধ থামিয়েছেন, হামাস-ইজরায়েল সংঘাতও মেটানোর জন্য প্রস্তুত আছেন।
তবে নোবেল কমিটি এ প্রসঙ্গে যথেষ্ট সতর্ক। সম্প্রতি একটি সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কমিটির সচিব ক্রিশ্চিয়ান বার্গ হার্পভিকেন স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ‘সংবাদমাধ্যমে আলোচনা আমাদের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করে না। আমরা সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে, যোগ্যতার ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত নেব। বাইরের কোনও চাপ আমাদের প্রভাবিত করতে পারে না।’
Advertisement



