ভারত-চিন দ্বৈরথের সুযোগ নিয়ে বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকার ফেলার তৎপরতা

বাংলাদেশের গোয়েন্দা সুত্রে শেখ হাসিনা সরকারকে সতর্ক করে বলা হয়েছে, কোনও এক ‘বৃহৎ ও ক্ষমতাধর শক্তি’ উঠে পড়ে লেগেছে সরকারের পতন ঘটাতে।

Written by SNS New Delhi | June 28, 2020 5:43 pm

শেখ হাসিনা (File Photo: IANS)

বাংলাদেশে নতুন করে শেখ হাসিনা’র সরকার ফেলার তোড়জোড় শুরু হয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশের গোয়েন্দা বিভাগের একটি রিপোর্টের ভিত্তিতে এই দাবি করা হয়েছে বহুল প্রচারিত সংবাদ পোর্টাল ইস্টার্ন লিঙ্কে। সে দেশের গোয়েন্দা সুত্রে হাসিনা সরকারকে সতর্ক করে বলা হয়েছে, কোনও এক ‘বৃহৎ ও ক্ষমতাধর শক্তি’ উঠে পড়ে লেগেছে সরকারের পতন ঘটাতে।

শুধু তাই নয়, এই কাজে তারা যে কোনও রকম পদক্ষেপ নেওয়ারও প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। গোয়েন্দাদের সতর্কবার্তার এই রিপোর্টটি ইস্টার্ন লিঙ্কের হাতেও এসেছে। সেই রিপোর্টে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, ওই বৃহৎ শক্তিসম্পন্ন রাজনৈতিক গোষ্ঠী হাসিনা সরকারের কাজকর্মে আদৌ খুশি নয়। বিশেষ করে সে দেশের সরকার সাম্প্রতিককালে যেভাবে চিনের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়িয়েছে, তাতে তারা ক্ষুব্ধ।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের পরিকাঠামোসহ একাধিক ক্ষেত্রে উন্নয়নের কাজে চিন নানাভাবে সম্পৃক্ত হয়ে রয়েছে। পাশাপাশি বাংলাদেশে চিন-বিরোধী স্পর্শকাতর বিষয়গুলিতেও নাকি শেখ হাসিনা সরকার আদৌ গুরুত্ব দিতে চাইছেন না। ওই বৃহৎ শক্তির এই সময়টা বেছে নেওয়াও যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।

কারণ প্রথম থেকেই যাবতীয় বিপদ ও বিপর্যয়ের সময় বাংলাদেশ সরকারের পাশে সর্বতোভাবে দাঁড়িয়েছে ভারত। কিন্তু এই মুহূর্তে ভারত নিজেই অভ্যন্তরে কোভিড ১৯ সংক্রমণের সমস্যা এবং সীমান্তে চিনের সঙ্গে প্রায় সঙঘাতের পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে রয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের ইস্যুতে সেভাবে নজর দেওয়ার মতো পরিস্থিতি ভারতের কাছে নাও থাকতে পারে। ভারতের অসহায়তার এই সুযোগটাই কাজে লাগতে চাইছে বাংলাদেশের অন্দরের সেই ‘ক্ষমতাধর শক্তি’।

ওই রিপোর্টে স্পষ্ট করেই বলা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ার একাধিক শহরে সম্প্রতি এই লক্ষ্যে কেশ কয়েকটি বৈঠক করা হয়েছে। সেই বৈঠকগুলিতে ওই শক্তির প্রতিনিধিরা, বাংলাদেশ সেনা-গোয়েন্দা বিভাগের প্রাক্তন কিছু অফিসার (যাঁরা অনেকেই এখন বিদেশে বসবাস করেন), বাংলাদেশের কয়েকজন শীর্ষ শিল্পপতি, অন্তত দু’জন মিডিয়া ব্যবসায়ী এবং বাংলাদেশের একজন নামজাদা আইনজীবী যোগ দিয়েছিলেন।

প্রথম বৈঠকটি হয় সরাসরি, জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে। এরপর কোভিড ১৯ সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আবহে পরবর্তী বৈঠকগুলি করা হয় ভার্চুয়ালি। শীর্ষ সেনা গোয়েন্দাসূত্রে জানানো হয়েছে, চক্রান্তকারীদের মধ্যে থেকেই একজন বিষয়টির গুরুত্ব ও পরিণাম আন্দাজ করে গোটা বিষয়টি থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তিনিই প্রথমে বাংলাদেশের সেনা-গোয়েন্দা বিভাগকে সতর্ক করেন। ষড়যন্ত্রের শুরুতে তিনটি বিষয়কে সামনে রেখেছিল ওই বৃহৎ শক্তি।

প্রথমত, মিথ্যা ও ভিত্তিহীন গুজব রটিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর দফতর (পিএমও) এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে দূরত্ব তৈরি করা।

দ্বিতীয়ত করোনা নিয়ন্ত্রণে হাসিনা সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ, এই দাবি তুলে দেশের অভ্যন্তরে অশান্তির বাতাবরণ তৈরি করা। এই ব্যাপারে তারা ইতিমধ্যেই ক্ষুব্ধ বস্ত্রশিল্পের সঙ্গে জড়িত বিশাল শ্রমশক্তিকে কাজে লাগাতে চেয়েছিল।

তৃতীয়ত এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল, বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি ও ইসলামি সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলিকে দেশজুড়ে বেলাগাম সন্ত্রাসের পরিস্থিতি তৈরি করা। প্রয়োজনে আওয়ামি লিগের শীর্ষক্তরের কয়েকজন নেতাকে খতম করাও ছিল এই পরিকল্পনার অঙ্গ।