কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাকামী নেতা গিলানিকে সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান দিচ্ছে পাকিস্তান

সোমবার পাক সেনেটের উচ্চকক্ষে সৈয়দ আলি শাহ গিলানিকে ‘নিশান-ই পাকিস্তান’ সম্মান দেওয়ার প্রস্তাব সর্বসম্মতিতে নেয়।

Written by SNS New Delhi | July 29, 2020 2:00 pm

সৈয়দ আলি শাহ গিলানি (File Photo: IANS)

বিচ্ছিন্নতাবাদী কাজকর্মে জড়িত থাকার অভিযোগে দীর্ঘদিন ধরে গৃহবন্দি রয়েছেন ৯০ বছরের সৈয়দ আলি শাহ গিলানি। জম্মু কাশ্মীরে এতদিন তিনি পাকিস্তানের মুখপাত্রের ভূমিকা পালন করছিলেন বলে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। সেই তিনি আচমকাই হুরিয়তের নেতৃত্ব থেকে ইস্তফা দেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, হুরিয়তের কিছু নেতা উপত্যকার মানুষজনের স্বার্থকে প্রাধান্য না দিয়ে আর্থিক তছরূপে জড়িত রয়েছেন।

শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে একরাশ অভিযোগ তুলে তিনি ইস্তফা দেন। অনেকে বলেছিলেন সেই সময় গিলানি বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন। এবার পাকিস্তান সরকার সেই গিলানিকেই সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল।

সোমবার পাক সেনেটের উচ্চকক্ষে সৈয়দ আলি শাহ গিলানিকে ‘নিশান-ই পাকিস্তান’ সম্মান দেওয়ার প্রস্তাব সর্বসম্মতিতে নেয়। শুধু এখানেই থেমে না থেকে গিলানির নামে ইসলামাবাদের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নামকরণও করতে বলা হয়েছে পাকিস্তান সরকারকে। পাঠ্য বইতেও গিলানির জীবনী স্থান পাচ্ছে।

গিলানি যখন ইস্তফা দেন সেই সময় সরাসরি তিনি কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ করেননি। তবে, হুরিয়তের আহ্বায়ক গোলাম মহম্মদ সইফিকে তিনি নিশানা করেছিলেন বলে যথেষ্ট জল্পনা ছিল। গিলানি একসময় সইফির বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল আর্থিক কারণে।

পাকিস্তানের মেডিকেল কলেজের কাশ্মীরি পড়ুয়াদের জন্য বিনামূল্যে যে আসন সংরক্ষিত করা হয়েছিল তা বিক্রি করে মোটা টাকা কামানোর অভিযোগ উঠেছিল সইফির বিরুদ্ধে। এই অভিযোগ পেয়েই গিলানি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন।

পাক সরকারের সঙ্গে সইফির ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকায় ইসলামাবাদ সেই সময় হুরিয়ত প্রধান হিসেবে গিলানিকে খুব একটা পাত্তা দিচ্ছিল না। পাক সেনাও সন্তুষ্ট ছিল না, যখন মজফফরাবাদে হুরিয়তের দায়িত্ব আব্দুল্লা গিলানির হাতে তুলে দেন সৈয়দ গিলানি। এরপর আব্দুল্লাকে সরিয়ে ওই জায়গায় আসেন হুসেন মহম্মদ খাতিব, যিনি আবার সইফির ঘনিষ্ঠ।

এরপরই সৈয়দ গিলানি হুরিয়ত ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। এবং তিনি তার পদত্যাগ পত্রে সাফ জানিয়ে দেন, আবদুল্লাই মজফফরাবাদে হুরিয়তের প্রধান। গিলানি সরে যাওয়ার পরেই হুরিয়তের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব প্রকট হয়ে ওঠে। বিভাজন শুরু হয় গিলানি-পন্থী এবং সইফি-পন্থীদের মধ্যে।

এরই মধ্যে আশরফ সেরাইয়ের গ্রেফতারি সংগঠনকে নড়বড়ে করে দেয়। পরিস্থিতি গুরুত্ব দ্রুত অনুধাবন করতে পেরে গিলানির মন পেতে পাকিস্তান সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান দিয়ে তাকে খুশি করতে চায়, এমনটাই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল। এখন দেখার জল কোন দিকে গড়ায়।