টানা ভারী বর্ষণে বিধ্বস্ত পাকিস্তান। একাধিক নদীর জল উপচে পড়ায় ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সরকারি হিসেবে এখনও পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ৮৩৫ জন। শুধু পাঞ্জাব প্রদেশেই মৃতের সংখ্যা ১৯৫। প্লাবিত হয়েছে ২,৩০০-রও বেশি গ্রাম, ঘরছাড়া প্রায় ১৫ লক্ষ মানুষ। সবচেয়ে গুরুতর অবস্থা পাঞ্জাব প্রদেশে। ভারতের সীমান্তবর্তী এই অঞ্চলের উপর দিয়ে প্রবাহিত তিনটি আন্তঃসীমান্ত নদী – চন্দ্রভাগা, ইরাবতী এবং শতদ্রু উপচে পড়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের মতে, একসঙ্গে এই তিন নদীর জলে ভাসার ঘটনা বিরল। বহু প্রবীণ অধিবাসীরাই জানাচ্ছেন, এর আগে কখনও এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি দেখেননি।
পাঞ্জাব প্রদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ-র মুখ্য আধিকারিক ইরফান আলি জানিয়েছেন, এবারের দুর্যোগে ৮০০-রও বেশি নৌকা উদ্ধারকাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। প্লাবিত অঞ্চল থেকে বিপদগ্রস্তদের সরিয়ে আনতে নিযুক্ত রয়েছেন ১,৩০০-রও বেশি উদ্ধারকর্মী। ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে ৫০০টিরও বেশি। আগস্টের মাঝামাঝি খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে লাগাতার বৃষ্টিতে ভূমিধসের ঘটনা ঘটে। সেখানে কয়েক দিনের ব্যবধানে প্রাণ হারান অন্তত ৪০০ জন।
Advertisement
পরিস্থিতির উন্নতির আশা এখনই দেখা যাচ্ছে না। পাকিস্তানের আবহাওয়া বিভাগ সতর্ক করে জানিয়েছে, আগামী দিনে বজ্রবিদ্যুৎ সহ ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। এতে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে বলেই আশঙ্কা। এদিকে, কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতির মাঝেও ‘মানবিকতার খাতিরে’ পাকিস্তানকে সতর্ক করেছে ভারত।
Advertisement
ভারতের উত্তরের রাজ্যগুলিতে প্রবল বর্ষণের কারণে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বাঁধ থেকে জল ছাড়ার প্রয়োজন হতে পারে, যার প্রভাব পড়তে পারে পাকিস্তানেও। বিশেষত তাওয়ি নদীর জলস্তর বৃদ্ধি পেলে চন্দ্রভাগা এবং এর আশেপাশের অঞ্চলে নতুন করে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে দুই দেশকেই সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আরও সতর্ক ও সমন্বিত পদক্ষেপ করার আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলি।
Advertisement



