মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্ক নীতির জেরে ‘কাঁপছে’ গোটা বিশ্ব। বহুদিন ধরে চলা আলোচনার পরও কাঙ্ক্ষিত ফল না মেলায়, ১ আগস্টের নির্ধারিত সময়সীমা পেরোতেই একগুচ্ছ দেশের উপর একতরফাভাবে শুল্ক চাপিয়ে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ৭ আগস্ট থেকে কার্যকর হতে যাওয়া এই নতুন শুল্কনীতি শুধু আমদানিকারক দেশগুলিকেই নয়, বিশ্ব বাণিজ্য ব্যবস্থাকেও বড় ধাক্কা দেবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ট্রাম্প সরকারের বক্তব্য অনুযায়ী, যেসব দেশ যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া আলোচনার সুযোগ পেয়ে যথাযথ প্রতিক্রিয়া দেখায়নি, তাদের উপরই এই শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন সহ মোট ৬৮টি দেশের পণ্যের উপর ১০ থেকে ৪১ শতাংশ পর্যন্ত ট্যারিফ বসানো হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ৫০ শতাংশ শুল্ক বসেছে ব্রাজিলের পণ্যে। কানাডার উপর চাপানো হয়েছে ৩৫ শতাংশ, ভারতের পণ্যে ২৫ শতাংশ, তাইওয়ান, শ্রীলঙ্কা ও ভিয়েতনামের ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ, পাকিস্তানের জন্য ১৯ শতাংশ, আফগানিস্তানের জন্য ১৫ শতাংশ। বাংলাদেশের পণ্যের উপর বসানো হয়েছে ২০ শতাংশ শুল্ক।
Advertisement
বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, সিরিয়ার পণ্যের উপর সর্বোচ্চ ৪১ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। লাওস ও মায়ানমার পেয়েছে ৪০ শতাংশের হার। সুইজারল্যান্ডের পণ্যে বসেছে ৩৯ শতাংশ শুল্ক। এছাড়া সার্বিয়া, ইরাক, আলজিরিয়া, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা, লিবিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকার উপরও ৩০ শতাংশ বা তার বেশি হারে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।
Advertisement
শুল্ক চাপানোর তালিকা থেকে এই মুহূর্তে রেহাই পেয়েছে মেক্সিকো। যদিও ট্রাম্প জানিয়েছেন, ইউনাইটেড স্টেটস-মেক্সিকো-কানাডা এগ্রিমেন্ট নিয়ে কানাডার আচরণ তাঁর অসন্তোষের কারণ। এমনকি মেক্সিকো থেকে আমদানি হওয়া স্টিল, অ্যালুমিনিয়াম, কপার এবং গাড়ির উপরও যথাক্রমে ৫০ ও ২৫ শতাংশ হারে শুল্ক বহাল রাখা হয়েছে।
এই সিদ্ধান্তে ভারতের মতো উদীয়মান অর্থনীতিগুলি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। এমন এক সময়ে এই শুল্কনীতি কার্যকর হচ্ছে যখন বিশ্বের অর্থনীতি মুদ্রাস্ফীতি ও সরবরাহ শৃঙ্খলের সংকটে নাজেহাল। ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপ বিশ্ববাজারে একটি নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে, যার প্রভাব পড়তে পারে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও বাণিজ্য জোটগুলির ওপরও।
Advertisement



