চাকরির বাজারে টানা দু’মাস মন্দার ইঙ্গিত। আর সেই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই ঝড় বয়ে গেল মার্কিন প্রশাসনে। আমেরিকার শ্রম দপ্তরের কমিশনার এরিকা ম্যাকএন্টারফারকে আচমকাই পদচ্যুত করলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অভিযোগ, ‘ভুয়ো ও বিকৃত তথ্য’ দিয়ে ওই রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। তাঁর দাবি, ‘বাস্তবে এমন কোনও মন্দা নেই। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে রিপোর্ট বানানো হয়েছে।’ শুক্রবার রাতে শ্রম দপ্তরের এক সহকারী কমিশনার জানান, আপাতত উপ-কমিশনারই কমিশনারের দায়িত্ব সামলাবেন।
বিতর্কের সূত্রপাত গত সপ্তাহে প্রকাশিত এক সরকারি রিপোর্ট ঘিরে। ওই রিপোর্টে বলা হয়েছিল, জুলাই মাসে আমেরিকায় চাকরিতে নিয়োগের হার আশঙ্কাজনকভাবে কমেছে। শুধু তাই নয়, বিগত দু’মাস ধরেই শ্রমবাজারে মন্দা চলছে। অর্থনীতিবিদদের একাংশ রিপোর্টটিকে ‘বাস্তব ও গুরুত্বপূর্ণ সতর্কবার্তা’ হিসেবে ব্যাখ্যা করলেও, হোয়াইট হাউস বরাবরই বিষয়টিকে অস্বীকার করেছে। শুক্রবার রাতে এক সাংবাদিক বৈঠকে প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আপনারা জানেন আমি কী করেছি? আমি তাঁকে তাড়িয়ে দিয়েছি। কারণ এটা একদম ঠিক কাজ ছিল। আমরা কারচুপির জায়গা দিই না।’
Advertisement
প্রসঙ্গত, ম্যাকএন্টারফার ২০২৩ সালে জো বাইডেন প্রশাসনের সময় শ্রম কমিশনার হিসেবে নিযুক্ত হন। তাঁর নিয়োগে সেনেটের দুই দলেরই সমর্থন ছিল। রিপাবলিকান দলের তরফেও গুরুত্বপূর্ণ সমর্থন মেলে, যার মধ্যে অন্যতম ছিলেন ওহিয়োর তৎকালীন সেনেটর এবং বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্স। এর আগে ম্যাকএন্টারফার দীর্ঘদিন মার্কিন জনসুমারি দপ্তরে কাজ করেছেন।
Advertisement
অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ম্যাকএন্টারফারের ছাঁটাই ‘অসাধারণ ব্যতিক্রমী পদক্ষেপ’ এবং তা প্রশাসনিক স্বচ্ছতার প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। অনেকেরই আশঙ্কা, সরকারি তথ্যপ্রকাশের স্বাধীনতা এই ধরনের সিদ্ধান্তে প্রভাবিত হতে পারে। ট্রাম্প প্রশাসন যদিও বিষয়টিকে ‘অযাচিত রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অংশ’ বলেই ব্যাখ্যা করছে। তবে ভবিষ্যতে সরকারি পরিসংখ্যান ও অর্থনৈতিক নীতির নিরপেক্ষতা নিয়ে যে বিতর্ক আরও ঘনীভূত হতে চলেছে, তা বলাই বাহুল্য।
Advertisement



