চাইলেই আমেরিকা চিনকে ধ্বংস করে দিতে পারে, চিনের বিরুদ্ধে এমনই বিস্ফোরক হুঁশিয়ারি দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুল্কযুদ্ধের আবহে বাণিজ্যিক টানাপোড়েন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছানোর মুখে, ট্রাম্পের এই হুমকিকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক মহল।
সোমবার হোয়াইট হাউসে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিয়াংয়ের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিক বৈঠকে ট্রাম্প বলেন, ‘ওদের (চিনের) হাতে কিছু তাস রয়েছে, কিন্তু আমাদের কাছেও অসাধারণ কিছু তাস আছে। আমি চাই না সেই তাসগুলো খেলতে। কিন্তু যদি খেলি, তাহলে চিন ধ্বংস হয়ে যাবে।’ এই মন্তব্যের মধ্যেই স্পষ্ট, চিনের সঙ্গে শুল্ক সংঘাতে মার্কিন স্বার্থ সুরক্ষায় রীতিমতো কড়া অবস্থান নিতে প্রস্তুত ট্রাম্প প্রশাসন।
Advertisement
চিনকে ইঙ্গিত দিয়ে ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দেন, প্রয়োজনে বেজিংয়ের উপর ২০০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক চাপানো হতে পারে। বিশ্লেষকদের মতে, এই হুঁশিয়ারির মূলে রয়েছে এক বিশেষ খনিজ পদার্থ-চুম্বক। আধুনিক প্রযুক্তি এবং প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম তৈরির অন্যতম কাঁচামাল এই বিরল খনিজের জোগানে বিশ্বের ৯০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে চিন। এই ‘চুম্বক-তাস’ ট্রাম্প প্রশাসনের মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠছে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।
Advertisement
প্রসঙ্গত, চলতি বছর এপ্রিল থেকে আমেরিকার উপর চুম্বক রপ্তানিতে সাময়িক নিয়ন্ত্রণ জারি করেছিল বেজিং। যদিও জুন থেকে আবার সেই রপ্তানিতে ব্যাপক বৃদ্ধি দেখা গিয়েছে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, জুন মাসে আমেরিকায় চিনা চুম্বক রপ্তানি ৬৬০ শতাংশ এবং জুলাইয়ে আরও ৭৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে এই প্রেক্ষাপটে ট্রাম্প সাফ জানিয়ে দেন, ‘আমাদের জন্য চুম্বক দিতেই হবে ওদের। না দিলে ২০০ শতাংশ শুল্ক বসাব।’
এখানেই শেষ নয়, চিনের ‘চুম্বক-তাস’-এর পাল্টা আমেরিকার হাতেও রয়েছে ‘বোয়িং-তাস’। ট্রাম্প দাবি করেন, চুম্বক সরবরাহ বন্ধের পর আমেরিকাও বোয়িং বিমানের যন্ত্রাংশ পাঠানো বন্ধ করে দেয় চিনে। এর ফলে প্রায় ২০০টি চিনা বিমান পরিষেবা থেকে বাদ পড়ে, দাবি ট্রাম্পের। এদিকে, ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল সূত্রে খবর, চলতি সপ্তাহেই বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে আলোচনার জন্য আমেরিকা সফরে আসতে পারে চিনা প্রতিনিধিদল। এমন সময় ট্রাম্পের এই হুঁশিয়ারিকে আলোচনার পূর্ব মুহূর্তে চাপ সৃষ্টি করার কৌশল বলেই মনে করছেন অনেকেই।
Advertisement



