• facebook
  • twitter
Monday, 11 August, 2025

‘আমাদের উপর হামলা চালালে তছনছ করে দেব’, ইরানকে হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের

ইজরায়েল-ইরান সংঘাত ঘিরে উত্তপ্ত মধ্যপ্রাচ্য। এরই মধ্যে ইরানকে কড়া ভাষায় হুঁশিয়ারি দিলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

ইজরায়েল-ইরান সংঘাত ঘিরে উত্তপ্ত মধ্যপ্রাচ্য। এরই মধ্যে ইরানকে কড়া ভাষায় হুঁশিয়ারি দিলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্টের হুঙ্কার, যদি ইরান কোনওভাবে আমেরিকার উপর আক্রমণ চালায়, তাহলে ওদের পরিণতি অত্যন্ত ভয়ঙ্কর হবে। এমন প্রত্যাঘাত করা হবে, যা আগে হয়নি। এর পাশাপাশি ইরান এবং ইজরায়েলের মধ্যে সমঝোতা করানোর প্রস্তাবও দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

শুক্রবার রাতের পর শনিবারও ইরানের মাটিতে হামলা চালিয়েছে ইজরায়েল। পাল্টা জবাব দিয়েছে ইরানও। এই সংঘর্ষের মাঝেই রবিবার সোশাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট ট্রুথে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প লেখেন, ‘ইরানের উপর যে হামলার ঘটনা ঘটেছে, তাতে আমেরিকার কোনও হাত নেই। তারপরও যদি ইরান আমেরিকার উপর কোনওরকম হামলা চালায়, তাহলে আমেরিকা সর্বশক্তি দিয়ে ইরানের উপর ঝাঁপিয়ে পড়বে। ইরানকে এমন শাস্তি দেব যে ওরা তা স্বপ্নেও ভাবতে পারবে না।’ যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে ট্রাম্পের বার্তা, ‘আমি খুব সহজেই ইরান ও ইজরায়েলের মধ্যে একটা চুক্তি করিয়ে দিতে পারি। এই যুদ্ধ বন্ধ করতেই হবে।’

দুই দেশের হামলা, পাল্টা হামলার আবহেই তেহরান বাতিল করে দিয়েছে আমেরিকার সঙ্গে ষষ্ঠ দফার পরমাণু আলোচনার সূচি। ইরানের মাটিতে চলা ধ্বংসযজ্ঞের নেপথ্যে আমেরিকার হাত রয়েছে বলে মনে করছে তেহরান। প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক বিধিনিষেধ উড়িয়ে ভেঙে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে ইরানের বিরুদ্ধে। এর বিরুদ্ধে সরব হয়েছে আমেরিকা। ইরান ইতিমধ্যেই ইউরেনিয়ামের বিশুদ্ধতা ৬০ শতাংশে নিয়ে গিয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে বিভিন্ন রিপোর্ট। আমেরিকা চায়, এখানেই থেমে যাক ইরান।

শুক্রবার ইরানের উপর আকাশপথে অন্যতম বৃহৎ হামলাটি চালিয়েছে ইজরায়েলি বাহিনী। অনেকেই এই হামলার পিছনে ট্রাম্পের হাত খুঁজে পেয়েছেন। ইরানে ইজরায়েলের এই হামলার ঠিক আগে ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছিলেন ইউরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। দীর্ঘক্ষণ তাঁদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। ট্রাম্প তখনই জানিয়ে দেন, ইজরায়েল হামলা চালালে আমেরিকা বাধা দেবে না। মনে করা হচ্ছে, ট্রাম্পের এই বক্তব্যের পরই ইজরায়েল ইরানে হামলা চালানো শুরু করে। ইরানের একাধিক জায়গায় আকাশপথে হামলা করেছে ইজরায়েল। সেই হামলায় মৃত্যু হয়েছে ইরানের চার শীর্ষ সেনাকর্তা এবং ছ’জন পরমাণু বিজ্ঞানীর। প্রাণ হারিয়েছেন ইরানের সশস্ত্রবাহিনীর সর্বাধিনায়ক মেজর জেনারেল মহম্মদ বাগেরি।

এর পাল্টা দিতে তেল আভিভ এবং জেরুজালেমে হামলা শুরু করেছে ইরানও। শনিবার ইরান আমেরিকা, ব্রিটেন এবং ফ্রান্সকেও হুমকি দিয়েছে। ইরান বলেছিল, ইজরায়েলকে সাহায্য করলে, ওই সমস্ত দেশগুলির সামরিক ঘাঁটিতেও হামলা চালানো হবে। এই বক্তব্যের পরই ট্রাম্প জানিয়ে দেন, ইরানের উপর ইজরায়েল সেনা যে হামলা শুরু করেছে, তাতে আমেরিকার কিছুই করার নেই। কিন্তু ইরান আমেরিকার উপর প্রত্যাঘাত করলে ছেড়ে কথা বলবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

ট্রাম্প সমাজমাধ্যমে ইরানের উদ্দেশে লিখেছেন, ‘এখনও সময় রয়েছে। পরবর্তী আক্রমণগুলি আরও নৃশংস হবে। সব শেষ হয়ে যাওয়ার আগে পারমাণবিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করে ফেলুন। নইলে পরের ইজরায়েলি হামলায় আর কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না।’ বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ঘোষণা ও পাল্টা হুঁশিয়ারির ফলে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে, এবং আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক স্তরেও এর প্রভাব পড়তে পারে। প্রসঙ্গত, শনিবার রাতে তেহরানের দু’টি সর্ববৃহৎ প্রাকৃতিক গ্যাস কেন্দ্রে হামলা চালায় ইজরায়েল। এর ফলে ভয়াবহ সঙ্কটে পড়েছে ইরান।

News Hub