• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

করোনার বিস্তার রুখতে প্রয়োজন ৪৮০০ কোটি, সাহায্যের আর্জি হু’র

চিন-সহ সমগ্র বিশ্বে করােনাভাইরাসের নতুন করে সংক্রমণ রুখতে এই মুহর্তে তন্তত ৬৭ কোটি ৫০ লক্ষ মার্কিন ডলার প্রয়োজন বলে জানাল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

করােনাভাইরাস'এর জন্য প্রতিরক্ষামূলক পোশাক পরা চিকিৎসা দল। (Photo: AFP)

poshakভারতীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ দাঁড়ায় ৪ হাজার ৮০০ কোটি টাকারও বেশি। বিশ্বের যে সমস্ত দেশে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা দুর্বল সেই সমস্ত দেশকে নিয়ে তারা বিশেষভাবে উদ্বিগ্ন বলে জানিয়েছে।

করােনাভাইরাস প্রতিরােধে একটি বিশ্বব্যাপি কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এর আওতায় দু’মাসের একটি অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করা হয়েছে। এই পরিকল্পনা রূপায়ণে বিপুল অর্থের প্রয়ােজন বলে জানিয়েছে তারা। এই বিপদের মধ্যে দাঁড়িয়ে আন্তর্জাতিক মহলকে আর্থিক সহায়তার আহ্বান জানিয়েছে।

Advertisement

যত দিন যাচ্ছে চিনে পরিস্থিতি ক্রমশ হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে। করােনাভাইরাসের সংক্রমণ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। সরকারি পরিসংখ্যা অনুযায়ী সােমবার সংখ্যাটি ছিল ৩৬১, মঙ্গলবার বেড়ে দাঁড়াল ৪২৫ ও বুধবার তা বেড়ে দাঁড়াল ৪৯২- তে৷ আক্রান্তের সংখ্যা চিনের বাইরে ভারত ছাড়াও জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, হংকং, ভিয়েতনাম, তাইওয়ান, ফিলিপিন্স, ম্যাকাও, মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, কাম্বোডিয়া, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, কানাডা, ব্রিটেন, ফ্রান্স, হটালি, ফিনল্যান্ড, জার্মানি, আমেরিকা ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহি-এই ২৪টি জায়গায় এই রােগে আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। এদের মধ্যে প্রায় প্রতিটি দেশেই বিশেষ বিমান পাঠিয়ে চিন থেকে তাদের দেশের নাগরিকদের এয়ারলিফট করে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছে।

Advertisement

নভেল করােনাভাইরাসের প্রকোপ থামার কোনও লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না চিনে। গত ২৪ ঘণ্টায় ফের অন্তত ৬৮ জনের মৃত্যুর খবর মিলল। সােমবার পর্যন্ত যে সংখ্যাটা ছিল ৩৬১, মঙ্গলবারই তা বেড়ে দাঁড়াল ৪২৫, বুধবার ৪৯২ ও বৃহস্পতিবার তা বেড়ে হয় ৫৬০-এ। যত দিন যাচ্ছে পরিস্থিতি ক্রমশ হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে। সার্জিকাল মাস্ক-সহ বেশ কিছু চিকিৎসার সরঞ্জামের আকাল শুরু হয়েছে। মাঙ্কের জন্য লম্বা লাইন উহানে। আক্রান্তের সংখ্যা ২৮ হাজার।

সংক্রমণ আটকাতে চিনের ১৯টি শহর বহির্বিশ্ব থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে। উড়ান তে বটেই, ট্রেন-বাস-ফেরি-সহ গণপরিবহণের সমস্ত ব্যবস্থা বন্ধ। স্কুল-কলেজ-অফিস বন্ধ। স্থানীয় বাসিন্দারা রীতিমতাে ঘরবন্দি। এমনকি বাজার করতে বেরােনােতেও রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। তার উপরে রােগীর সংখ্যা যে মাত্রায় বাড়ছে, তাদের চিকিৎসার সমস্ত সুবিধা দেওয়াও সমস্যা হয়ে যাচ্ছে চিন সরকারের পক্ষে। ১ দিনের শিশুর দেহেও করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে উহানে। একদিনের ওই শিশুকে নিয়ে হইচই শুরু হয়ে গিয়েছে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছে এই শিশুটিই এখন সর্বকনিষ্ঠ যার দেহে এই মারাত্মক ভাইরাসের লক্ষণ মিলল।

সরকারি পরিসংখ্যানে, মৃতের সংখ্যা ৫৬০ জন। আক্রান্তের সংখ্যা আরও ২৮ হাজার। মৃতদের বেশির ভাগই হুবেই প্রদেশের বাসিন্দা। ফলে, মৃত্যুমিছিল কোথায় গিয়ে থামবে, জানা নেই। এদিকে, হংকংয়েও করােনায় মঙ্গলবার এক ব্যক্তির মৃত্যুর খবর মিলেছে। হংকং প্রশাসন ঘােষণা করেছে, চিনের মূল ভূখণ্ড থেকে সেখানে কেউ ঢুকলে, তাঁদের দু’সপ্তাহের জন্য কোয়ারেন্টাইনে পাঠানাে হবে। চিনের মূল ভূখণ্ডের বাইরে আরও ২৬টি দেশে এই ভাইরাসের সংক্রমণের খবর মিলেছে। ব্রিটেন জানিয়েছে, এই সপ্তাহের শেষেই উহান থেকে তাদের দেশের নাগরিকদের শেষ দলটিকে এয়ারলিফট করা হবে। গত শুক্রবার চিন থেকে ব্রিটেনে ফেরানো হয়েছে ৮৩ জনকে।

ভাইরাসের মােকাবিলা নিয়ে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং জানিয়েছেন, রােগ নিয়ন্ত্রণের খুব গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে এখন দাঁড়িয়ে চিন। এই অবস্থায় স্থানীয় প্রশাসনকে তিনি অনুরােধ করেছে, ভাইরাস আক্রান্তের খবর পাওয়া মাত্র যেন দ্রুত আইসােলেশনের ব্যবস্থা করা হয়। এই রােগ নিয়ে গুজব ছড়ানো বন্ধ করার উপরেও জোর দিয়েছেন শি। ব্রিটেনে এখনও পর্যন্ত দু’জনের দেহে এই ভাইরাসের সংক্রমণ মিলেছে। আরও তিনশো মার্কিন নাগরিককে চিন থেকে এয়ারলিফট করেছে মার্কিন প্রশাসনও। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডােনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছে, এই ভাইরাসের মােকাবিলা করতে চিনের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়ছেন তাঁরা। যদিও ট্রাম্প প্রশাসন যেভাবে চিন থেকে আসা পর্যটকদের আমেরিকায় প্রবেশ নিয়ে কড়াকড়ি করছে, তাতে ক্ষুব্ধ বেজিং।

Advertisement