এখনও বড় ম্যাচের দিন টেলিভিশনের সামনে বসলে লাল-হলুদ স্বপ্নে বিভোর হন। ইস্টবেঙ্গল জিতলে মুখে হাসি ফোটে। নব্বই এ পা রেখেও স্পষ্ট দেখতে পান শৈশবকে। সময় শরীর ছুঁয়ে গেলেও তাঁর লাল-হলুদ মন আজও অক্ষত। প্রচার বিমুখ ইরা রায়চৌধুরী কোনও দিন সংবাদমাধ্যমকে মুখফুটে জানাননি যে তিনি নেপাল চক্রবর্তীর মেয়ে। উনিশো পঁচিশ সালে যাঁর গোলে মোহন বাগানের বিরুদ্ধে প্রথমবার জয়লাভ করে ইস্টবেঙ্গল।
বলছিলেন, ‘খুব স্বাভাবিকভাবেই আমাদের বাড়িতে ফুটবল নিয়ে হৈহুল্লোর হতো। সেটা আমার বেশ মনে আছে। ইস্টবেঙ্গল জিতলে বাবা খুব খুশি হতেন। ইলিশের গন্ধে ভরে যেত আমাদের বাড়ি।’
Advertisement
তবে ইস্টবেঙ্গল মাঠে গিয়ে খেলা দেখার সুযোগ তেমন একটা হয়নি ইরাদেবীর। আসলে একটা ম্যাচে পায়ে চোট পেয়েছিলেন নেপাল চক্রবর্তী। এবং চোটটা ছিল যথেষ্ট গুরুতর। ইরাদেবী বলছিলেন,’ওই চোটটাই বাবার ফুটবল জীবন সংক্ষিপ্ত করে দিয়েছিল। না হলে বাবা আরও বেশ কিছুদিন ফুটবলটা খেলতে পারতেন।’ খেলা ছাড়ার পর বৈবাহিক সূত্রে আবদ্ধ হন এবং টাটার চাকরি নিয়ে চলেযান জামশেদপুরে। সেখানেই থাকতে হয় ইরাদেবীদের। ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের সঙ্গে তাই সরাসরি যোগাযোগ হয়ে ওঠেনি তাঁদের। কিন্তু খোঁজখবর রাখতেন।
Advertisement
খবর এখনও রাখেন। তাঁর কথায়,’ইস্টবেঙ্গলের এই ব্যর্থতা কিন্তু সাময়িক। বহু প্রতিষ্ঠান আর মানুষকে দীর্ঘদিন দুঃসময়ের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। ইস্টবেঙ্গলও অচিরেই তার স্বমহিমায় ফিরবে।’
এখনও কিছু লাল-হলুদ ইচ্ছে ইরা রায়চৌধুরীর মনে খেলে বেড়ায়। আধুনিক ইস্টবেঙ্গলকে কাছ থেকে দেখার ইচ্ছা। ক্লাবের লাল-হলুদ গ্যালারি, মিউজিয়াম, লাইব্রেরি- সব। নেপালকন্যার স্থির বিশ্বাস কেউ না কেউ নিশ্চয় তাঁকে নিয়ে যাবে তাঁর বাবার ক্লাবে। ওটাতো তাঁর কাছে শুধু একটা ক্লাব নয়, একটা তীর্থস্থান। পূর্ব পুটিয়ারির বাড়িতে পূবের সূর্যের আলো আজও উজ্জ্বল।
Advertisement



