শতাব্দী প্রাচীন মোহনবাগান ক্লাবের ঐতিহ্য নিয়ে অবশ্যই একটা ইতিহাস লেখা যায়। স্বাধীনতার আগে আইএফএ শিল্ড জয় করে মোহনবাগান সেদিন ব্রিটিশদের বুঝিয়ে দিয়েছিলেন তারা হারতে জানে না। সেই ভাবনাতে এখনও মোহনবাগান তাদের লড়াকু ভূমিকাকে প্রকাশ করতে পিছনে তাকায় না। বর্তমানে পেশাদারি ফুটবলের পরিচয়ে মোহনবাগান অন্য যে কোনও দলের থেকে একেবারে ভিন্ন। সব ক্লাবেই এসেছে এখন বিনিয়োগকারী সংস্থা। পাশে দাঁড়িয়ে ভারতীয় ফুটবলকে সমৃদ্ধ করার জন্য তারা বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়েছে।
সমর্থকদের আবেগ ও আন্তরিকতাকে গুরুত্ব দিয়ে মোহনবাগানের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন শিল্পপতি সঞ্জীব গোয়েঙ্কা। দু’বছর আগে মোহনবাগান ক্লাবের সামনে এটিকে লেখা হতো। তা নিয়ে বিতর্কের ঝড় উঠেছিল। হয়তো শিল্পপতি ভেবেছিলেন মোহনবাগানের আবেগকে কোনওভাবেই আঘাত দেওয়া চলবে না। সেই কারণেই সমর্থকদের সম্মান জানিয়ে সবুজ-মেরুন ব্রিগেডের নাম হয় মোহনবাগান সুপার জায়ান্টস। এককথায় বলা যায়, সুপার ডিসিশন। মোহনবাগান এখন বলতেই একটা পরিবার। তার পাশে দাঁড়িয়েছেন শিল্পপতি সঞ্জীব গোয়েঙ্কা। আইএসএল ফুটবলে দুই ম্যাচ বাকি থাকতেই লিগ-শিল্ড পাওয়া হয়ে গিয়েছে মোহনবাগানের। এখন অপেক্ষা ভারতের সেরা দল হিসেবে কাপ জিতে নেওয়া। পরপর দু’বার লিগ-শিল্ড জয়ের সাফল্যের কথা বলতে গিয়ে মোহনবাগানের সচিব দেবাশিস দত্ত বলেন, মনে রাখতে হবে, ফুটবল খেলাটা কখনওই একার দ্বারা হয় না। সম্মিলিত প্রয়াস ও সঠিক পরিকল্পনা না থাকলে এই সাফল্যকে ধরে রাখা যাবে না।
হয়তো অন্যান্য ক্লাবে প্রচুর বিনিয়োগকারী সংস্থা এসেছে। তারা সাময়িকভাবে এসে চলেও গেছে। কোনও নির্দিষ্ট ক্লাবের জন্য তারা সেইভাবে কাজ করার সুযোগ পায়নি। কিন্তু মোহনবাগান শিবিরের সঙ্গে প্রথম থেকেই যে শিল্পপতি বন্ধুত্ব গড়ে তুলেছেন, তাতে কোনও ছেদ থাকেনি। তিনিও অনুভব করেছেন, দলের সাফল্যের জন্য প্রয়োজন ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস। সেই কারণেই মোহনবাগান আইএসএল ফুটবলে তাদের সাফল্যকে ধরে রাখতে পারছে। ফুটবলারদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন সমর্থকরা। তাঁদের উৎসাহ এবং আন্তরিকতাকে হাতিয়ার করে ভালো খেলা উপহার দিতে পেরেছেন ফুটবলাররা। ফুটবলারদের সাহস দিয়েছেন। তাই এই সাফল্যের পিছনে অবশ্যই নীরবে প্রত্যেকে একটা ভূমিকা নিয়েছেন। অনেকে হয়তো আড়ালে থেকে কাজ করেছেন। আবার মানসিক দিক দিয়ে ফুটবলারদের বুস্টার দিয়েছেন।
সচিব দেবাশিস দত্ত জানিয়েছেন, সাফল্যের হাতিয়ার হিসেবে প্রতিটি খেলায় সমর্থকদের অবদানকে এগিয়ে রাখতে হয়। কাপ জেতার পরে মোহনবাগান তাঁবুতে সফল ফুটবলার, কোচ, সহকারী কোচ ও সাপোর্ট স্টাফদের বিরাট সংবর্ধনা দেওয়ার কথা ভাবা হয়েছে। এটা মনে রাখতে হবে, মোহনবাগান নামের মধ্যে একটা সংগ্রামের পরিচয় রয়েছে। তাই তো মোহনবাগানের পাখির চোখ আইএসএলে প্রথম ছয় দলের মধ্যে সেরা হওয়া। সেই পরিচয় মোহনবাগান সুপার জায়ান্টস জয়ের আলোয় আলোকিত হবে।