ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটি

ইংলিশ প্রিমিয়ার ফুটবল লিগে চ্যাম্পিয়ন হয়ে গেল ম্যানচেস্টার সিটি। রবিবার লিগের শেষ দিনে নিজেদের শেষ ম্যাচে পেপ গুয়ার্দিওয়ালার ম্যান সিটি আমেরিকান এক্সপ্রেস কমিউনিটি স্টেডিয়ামে ব্রাইটন অ্যান্ড হােভ অ্যালবিয়নকে ৪-১ গােলে হারিয়ে দিল।

Written by SNS May 13, 2019 5:29 pm

ম্যাঞ্চেস্টার সিটি বনাম ব্রাইটন (Photo: Xinhua/IANS)

ইংলিশ প্রিমিয়ার ফুটবল লিগে চ্যাম্পিয়ন হয়ে গেল ম্যানচেস্টার সিটি। রবিবার লিগের শেষ দিনে নিজেদের শেষ ম্যাচে পেপ গুয়ার্দিওয়ালার ম্যান সিটি আমেরিকান এক্সপ্রেস কমিউনিটি স্টেডিয়ামে ব্রাইটন অ্যান্ড হােভ অ্যালবিয়নকে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৪-১ গােলে পিছনে ফেলেছিল। একই সময়ে অ্যান্ডফিল্ডে লিভারপুল তাদের শেষ ম্যাচে উলভারহ্যাম্পটন ওয়ান্ডারার্সের বিরুদ্ধে ১-০ গােলে এগিয়ে ছিল। কিন্তু ঘটনা হল দুটি দল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্যে শেষ ম্যাচ খেলতে নামলেও গুয়ার্দিওয়ালার ম্যান সিটি লিভারপুলের থেকে এক পয়েন্ট এগিয়ে থাকায় তার টানা দ্বিতীয়বার লিগ খেতাব জয়ের পথে এগিয়ে ছিল।

এর আগে সাম্প্রতিককালে ম্যান ইউ ২০০৭-০৮ এবং ২০০৮-০৯ মরশুমে টানা দু’বার ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। সিটির প্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাইটন দলটি এই মরশুমে আদৌ ফর্মে নেই। সব প্রতিযােগিতা মিলিয়ে নিজেদের শেষ নয়টি ম্যাচে তারা একটিও জয় পায়নি। গত মাসে এফ কাপ ফুটবলের সেমিফাইনালে ব্রাইটন এক গােলে হেরে গিয়েছিল ম্যান সিটির কাছে।

পেপ গুয়ার্দিওয়ালার রবিবার ৪-৩-৩ ছকে দল নামিয়েছিলেন। গত সােমবার তার যে দলটি লিসেস্টার সিটিকে হারিয়েছিল তা থেকে একটি পরিবর্তন করে দল নামায় ম্যান সিটি। ফিল ফডেনকে বাদ দিয়ে মাহরেজকে দলে নেন গুয়ার্দিওয়ালা। ডিব্রুয়েনকে আবার রিজার্ভ বেঞ্চে বসিয়ে রাখা হয়েছিল। অন্যদিকে, ব্রাইটন দুটি পরিবর্তন করে দল নামায় এবং তারা ৪-৪-১-১ ছকে খেলার উদ্দেশ্যই ছিল ডিফেন্সে ঝুঁকে থাকা। তবু বিস্ময়করভাবে ম্যাচের ২৭ মিনিটে ব্রাইটনই প্রথম গােল করে এগিয়ে যায়। স্ট্রাইকার পাসকাল গ্রস যে বলটি বাড়িয়েছিলেন তা থেকে উইন গ্রেন মারে হেড করে রাইটনকে এগিয়ে দেন। স্বভাবতই ম্যান সিটি চাপে পড়ে গিয়েছিল। কিন্তু এক মিনিটের মধ্যে সার্জিও আগুয়েরো সিটির পক্ষে গােলটি শােধ করে দেন। ডেভিড সিলভা বাঁদিকের উইং ধরে উঠে প্রায় কর্ণারের কাছ থেকে সেন্টার করলে আগুয়েরো বাঁ পায়ের শটে ব্রাইটনের গোলরক্ষক ম্যাট ব্রাইটনের দুই পায়ের ফাক দিয়ে বল গােলে পাঠান।

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে এই বছর যে সর্বোচ্চ গোলদাতা হবেন তার দৌড়ে থাকলেও অ্যাগুয়েরাে এই গোলটি করার পরেও মহম্মদ সালাহ’র থেকে পিছনেই ছিলেন। কিন্তু সিটির আক্রমণে বড় ভূমিকা ছিল অ্যাগুয়েরােরই। মাহারেজ বক্সের মধ্যে একটি ইঞ্চি মাপা থ্রু পাস বাড়ালে প্রথম গোলটির মতাে এই গোলের ক্ষেত্রেও ব্রাইটনের ডিফেন্স সম্পূর্ণ বােকা বনে যায়। ব্রাইটনের স্ট্রাইকার গ্রেন মারে অনেকখানি নিজে নেমে এলেও ম্যান সিটির স্টপার আয়মেরিক ল্যাপাের্তে বক্সের মধ্যে উঠে এসে মাহরেজের সেই বাড়িয়ে দেওয়া বলে হেড করে সিটিকে ২-১ এগিয়ে দেন। সিটি চ্যাম্পিয়ন হওয়া নিশ্চিত করে ফেলে ম্যাচের ৬৩ মিনিটে। বক্সের একেবারে ধার থেকে নিজের অসাধারণ স্কিল দেখিয়ে ব্রাইটন ডিফেন্সকে প্রায় দাড় করিয়ে রেখে মাহরেজ কাট করে ভেতরে ঢুকে আসেন এবং ডানপায়ের শটে দলের তৃতীয় গোলটি করেন। ব্রাইটনের গােলরক্ষক ম্যাট রায়ান বলটি ধরার জন্য হাত বাড়ালেও বল তার নাগাল এড়িয়ে গােলে ঢুকে যায়।

খেলার যখন ২৫ মিনিট আর বাকি তখন বিশেষজ্ঞরা জানিয়ে দেন ব্রাইটনের মতাে দলের পক্ষে দুটি গােল শােধ দেওয়া সিটির মতাে দলের বিরুদ্ধে নিসন্দেহে অসম্ভব তাই তখনই তারা পেপ গুয়ার্দিওলার দলকে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য অভিনন্দন জানান। ম্যান সিটি ম্যাচের ৭২ মিনিটে তাদের চতুর্থ গোলটি করে। মিডফিল্ডার ইলকে গুন্ডগান পঁচিশ গজ দূর থেকে নেওয়া ফ্রিকিকে গােল পেয়ে যান। ব্রাইটনের ডিফেন্ডাররা সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে যে পাঁচিল তৈরি করেছিল গুন্ডগান তার ঘুর্নি শটটি তাদের মাথার ওপর দিয়ে পাঠিয়ে গােল করেন। যদিও ব্রাইটনের গোলরক্ষক ম্যাট রায়ান ডাইভ দিয়ে পড়েছিলেন কিন্তু গােল বাঁচাতে পারেননি।

অন্যদিকে, অ্যানফিল্ডে জুর্গেন ক্লপের লিভারপুল ম্যাচের সতেরাে মিনিটে স্যাডিও মেনের করা একমাত্র গোলেই ৭১ মিনিট পর্যন্ত ১-০ গােলে এগিয়েছিল উলভার হ্যাম্পটন ওয়ান্ডারার্সের বিরুদ্ধে। ম্যান সিটি জিতে গেলে। লিভারপুলের জেতা যে মূল্যবিহীন হয়ে যাবে এটা আগে থেকেই জানা ছিল। তাই লিভারপুল হয়তাে দ্বিতীয়ার্ধে আর গােলের জন্য তেমন গা লাগায়নি। লিভারপুল যে গােলটি করে তা আলেকজান্ডার আরনন্ডের সঙ্গে হেন্ডারসনের চমৎকার ১-২ পাসে খেলা দিয়ে শুরু হয়। আলেকজান্ডার আরনল্ড উইংয়ের দিকে সরে গিয়ে যে ক্রস সেন্টারটি করেন তা উলফসের ফুলব্যাক উইলি বােলির গায়ে লেগে সরাসরি স্যাডিও মেনের পায়ে পড়ে মেন অনায়াসে বল গােলে ঠেলে দেন।

রবিবার ম্যাচ শুরুর আগে পর্যন্ত লিভারপলের মহম্মদ সালাহ ২২টি গোল করে গোলদাতাদের শীর্ষে ছিলেন। কিন্তু এবারও তিনি সর্বোচ্চ গােলদাতা হন, তবে গতবারের মতাে সােনার বুট জয় করবেন। কিন্তু সালাহ’র খুব কাছকাছি ছিলেন স্যাডিও মেন, আর্সেনালের পিয়েরে এনেরিক আওবামেয়ান এবং ম্যান সিটির সার্জিও অ্যাগুয়েরাে প্রত্যেকেরই গোল কুড়িটি করে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত স্যাডি মেন এবং আগুয়েরাে রবিবার একটি করে গোল পাওয়ায় তাদের গােলের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে একুশ।