• facebook
  • twitter
Thursday, 14 August, 2025

আর্থিক দুর্নীতি সিএবি’কে কলঙ্কিত করল

কীভাবে এত বড় মাপের আর্থিক অনিয়ম হল? এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনা অবশ্য অতীতেও যে ঘটেনি, তা নয়।

ফাইল চিত্র

কলকাতা ময়দানে সিএবি পরিচালিত ক্রিকেটে খেলোয়াড়দের আধার কার্ড নিয়ে বিতর্ক তৈরি হল। সেখানে দেখা গিয়েছে ভিনরাজ্যের খেলোয়াড়রা রাতারাতি এখানকার ঠিকানায় নতুন করে কার্ড তৈরি করে ফেলেছেন। আর সেই কার্ড দেখে বাংলার বাসিন্দা হয়ে গেছেন। এই বিতর্কের মাঝেই আবার নতুন করে সিএবি চত্বরে কোষাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আর্থিক কেলেঙ্কারির গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় প্রশাসনের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো এই ঘটনার তদন্তে নেমে পড়েছেন, যা বাংলার ক্রিকেটের ইতিহাসে বেনজির।

বেশ কিছুদিন ধরেই সিএবি’র কোষাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই এই তদন্ত। জানা গেছে, তহবিলের অপব্যবহার আবার ক্রিকেট টুর্নামেন্টের জন্য নির্দিষ্ট অর্থ অদৃশ্য হয়ে যাওয়া। পাশাপাশি, আর্থিক লেনদেনে নানারকম মন্তব্য শোনা গেছে, যা সন্দেহজনক। এমনকি ওই সব টুর্নামেন্টের জন্য তহবিলের একটা বড় অংশ কোথায় ব্যয় করা হয়েছে, তা অদৃশ্যই থেকে গেছে।

সিএবি’র একটি অভ্যন্তরীণ তদন্তে প্রাথমিকভাবে এই অনিয়মের কথা জানতে পারা যায়। তারপরেই কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরোর কাছে এই বিষয়টি তুলে ধরা হয়। বিশেষ সূত্রে জানা গিয়েছে, তদন্তে বেশকিছু নথি ও ব্যাঙ্ক লেনদেনের রেকর্ড বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে, যা কোষাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির একটা ইঙ্গিত স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। কোষাধ্যক্ষ একাই এ ব্যাপারে জড়িত রয়েছেন, তা নয়।

আরও কয়েকজন এর সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন। এই ধরনের ঘটনা সিবিএবি’তে আগে কখনওই শোনা যায়নি। তাই বর্তমান কোষাধ্যক্ষের উপরে বিশ্বাসযোগ্যতা একেবারেই নষ্ট হয়ে গিয়েছে, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। এ ব্যাপারে প্রাক্তন ক্রিকেটার সহ ক্রিকেটপ্রেমীরা নানারকম সমালোচনায় মুখর হয়ে উঠেছেন। তাঁদের অভিমত,. যাঁরা ক্রিকেটের উন্নয়ন করবেন বলে দায়িত্ব নিয়েছেন, সেখানে যদি এই ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে, তাহলে আগামী প্রজন্মের কাছে কী বার্তা পৌঁছবে? সিএবি’র পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। তদন্তে সবরকম সহযোগিতা করা হবে। নিরপেক্ষ তদন্তই শেষ কথা বলবে।

কিন্তু প্রশ্ন হল, কীভাবে এত বড় মাপের আর্থিক অনিয়ম হল? এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনা অবশ্য অতীতেও যে ঘটেনি, তা নয়। কোচ নিয়োগ, খেলোয়াড় নির্বাচন ও বিভিন্ন টুর্নামেন্ট আয়োজন করার ক্ষেত্রে অভিযোগ উঠেছে। তবে কোষাধ্যক্ষের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি পদে থাকা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এরকম অভিযোগ প্রথম শোনা গেল। এর ফলে সিএবি’র আর্থিক ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতাই প্রকাশ পেল। অবশ্যই এই ঘটনা যখনই জানাজানি হয়েছে, তখনই পদক্ষেপ নেওয়া উচিত ছিল। এর ফলে তরুণ প্রতিভা ক্রিকেটারদের কাছে বড় একটা ধাক্কা তা নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই। দোষীদের বিরুদ্ধে অবশ্যই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। তবে তদন্তের ফলাফল কবে প্রকাশ্যে আসবে, তা স্পষ্ট নয়। একটা সময় আইএফএ-তেও এরকম আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটেছিল।