• facebook
  • twitter
Friday, 21 March, 2025

ভারতের ঘরে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আসছে: গৌতম গম্ভীর

গম্ভীর সাংবাদিকদের বলেন, ‘আপনারা রান দিয়ে মূল্যায়ন করেন, আমরা প্রভাব দিয়ে মূল্যায়ন করি। এটাই পার্থক্য। আপনারা পরিসংখ্যান দেখেন, আমরা প্রভাব দেখি।’

ফাইল চিত্র

চলতি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ব্যাট হাতে সফল হতে পারেননি রোহিত শর্মা। ব্যাটভার হাতে ছন্দহীন অধিনায়ক, সর্বত্র সমালোচনার ঝড় উঠছে। এবার হিটম্যানের পাশে দাঁড়লেন ভারতের প্রধান কোচ গৌতম গম্ভীর।

আসলে ব্যাট হাতে রোহিত শর্মার সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স প্রত্যাশা অনুযায়ী হয়নি। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে তার স্কোর ছিল ২৮, ১৫, ২০ ও ৪১। এর আগে অস্ট্রেলিয়ায় বর্ডার-গাভাসকার ট্রফিতেও তিনি রান সংগ্রহ করতে ব্যর্থ হন এবং শেষ টেস্টে নিজেই একাদশ থেকে সরে দাঁড়ান। তবে গম্ভীর তার ফর্ম নিয়ে কোনও সমস্যা দেখছেন না।

ভারতীয় দল ফাইনালে ওঠার পর গম্ভীর সাংবাদিকদের বলেন, ‘আপনারা রান দিয়ে মূল্যায়ন করেন, আমরা প্রভাব দিয়ে মূল্যায়ন করি। এটাই পার্থক্য। আপনারা পরিসংখ্যান দেখেন, আমরা প্রভাব দেখি।’

তিনি আরও বলেন, ‘চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনাল ৯ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে। আমি আগে থেকে কী বলতে পারি? যদি অধিনায়ক এমন ব্যাটিং মেজাজে খেলে, তাহলে এটি ড্রেসিং রুমের জন্য ইতিবাচক বার্তা বহন করে যে আমরা ভয়হীন ও আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলতে চাই। সাংবাদিকরা শুধু গড় রান ও পরিসংখ্যান দেখেন, কিন্তু আমরা সেগুলো দেখি না। যদি অধিনায়ক নিজেই সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন, তাহলে এর চেয়ে ভালো কিছু হতে পারে না।’

বিরাট কোহলির বিরুদ্ধে লেগ স্পিনে দুর্বলতার অভিযোগ উড়িয়ে দেন গম্ভীর। তিনি বলেন, ‘যখন আপনি ৩০০ (৩০১) ম্যাচ খেলবেন, তখন কিছু স্পিনারের বিরুদ্ধে আউট হতেই পারেন।’ গম্ভীর ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘এই প্রতিযোগিতায় সে একটা শতরান করেছে, একটা ৮৪ রান করেছে। যখন আপনি রান করবেন, তখন কোনও না কোনও বোলারের বিরুদ্ধে আউট হতেই হবে। ৩০০ ওয়ানডে খেলার পর কিছু নির্দিষ্ট ধরনের বোলারের বিরুদ্ধে আউট হওয়া স্বাভাবিক।’

কেএল রাহুলকে ঋষভ পন্থের চেয়ে উইকেটকিপার হিসেবে বেশি প্রাধান্য দেওয়ার কারণও ব্যাখ্যা করেন গম্ভীর। তিনি বলেন, ‘কেএল ওয়ানডেতে ৫০ রান গড়ে ব্যাটিং করে, এটাই যথেষ্ট কারণ।’ এরপর তিনি যোগ করে বলেন, ‘আমি কে কী বলল তা নিয়ে ভাবি না। আমার কাজ ১৪০ কোটি ভারতীয় ও ড্রেসিং রুমের খেলোয়াড়দের প্রতি সৎ থাকা। মানুষ কী বলল, কীভাবে বিশ্লেষণ করল, তাদের কোনও গোপন উদ্দেশ্য আছে কি না—এসব নিয়ে আমার মাথাব্যথা নেই।’

কেন রাহুলকে ৬ নম্বরে ব্যাট করানো হচ্ছে, সে বিষয়ে গম্ভীর বলেন, ‘দলীয় খেলায় নম্বর বা ব্যাটিং পজিশন গুরুত্বপূর্ণ নয়, গুরুত্বপূর্ণ হল প্রভাব। কেএল ৬ নম্বরে দারুণ পারফর্ম করেছে। আমরা মনে করি, সে আমাদের ব্যাটিং গভীরতা বাড়ায় এবং আমরা এভাবেই খেলতে চাই। কেএল এটা হাসিমুখে মেনে নিয়েছে এবং দুর্দান্তভাবে সামলেছে।’

ভারত ১১ বল বাকি থাকতে ২৬৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জিতলেও গম্ভীর মনে করেন না যে ম্যাচটি খুব কঠিন হয়ে গিয়েছিল। তিনি বলেন, ‘না, আমি তা মনে করি না। আমি মনে করি এটি খুবই পেশাদার পারফরম্যান্স ছিল। কারণ, আমাদের হাতে উইকেট ছিল এবং আমরা জানতাম যে দ্বিতীয় ইনিংসে উইকেট ধীর হতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, ‘গত ম্যাচে আমরা প্রথম ইনিংসে ব্যাট করেছিলাম, এবং তখনই আমরা বুঝতে পেরেছিলাম যে ৪০ ওভার পর্যন্ত উইকেট হাতে রাখা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা তাড়া করার পরিকল্পনা খুব ভালোভাবে করেছিলাম। ৪০ ওভারের পর আমরা মাত্র ৪ উইকেট হারিয়েছিলাম, এবং দুইজন সেট ব্যাটার তখনও ক্রিজে ছিল। তাই আমরা জানতাম, আমাদের গভীরতা ও দক্ষতা থাকার কারণে আমরা ম্যাচের নিয়ন্ত্রণে ছিলাম।’

গৌতম গম্ভীর মনে করেন, ভারতের এখনও কিছু জায়গায় উন্নতি করার প্রয়োজন আছে। তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক খেলায় আপনি সবসময় উন্নতি করতে চান। আপনি কখনও বলতে পারেন না যে সব দিক সম্পূর্ণ হয়ে গেছে। ব্যাটিং, ফিল্ডিং বা বোলিং—সব ক্ষেত্রেই উন্নতির সুযোগ আছে। আমরা এখনও পারফেক্ট ম্যাচ খেলিনি। আমাদের সামনে আরও একটা ম্যাচ আছে। আশা করি, ফাইনালে আমরা পারফেক্ট ম্যাচ খেলতে পারব।’

সেমিফাইনালে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট নেওয়া মহম্মদ শামির ভূয়সী প্রশংসা করেন গম্ভীর। তিনি বলেন, ‘সে অসাধারণ। সে বিশ্বমানের পারফর্মার। সে দুর্দান্তভাবে অনুশীলন করে, প্রচুর বোলিং করে এবং নিজেকে দারুণভাবে প্রস্তুত করে। এ কারণেই তিনি এমন সাফল্য পান।’ তিনি আরও যোগ করে বলেন, ‘আমরা অনেক খেলোয়াড়ের কথা বলি, কিন্তু শামি সত্যিই অসাধারণ বোলার। লাল বলের ক্রিকেট হোক বা ৫০ ওভারের ফরম্যাট—সে বারবার প্রমাণ করেছে সে বিশ্বমানের। দেড় বছর পর ফিরে এসেও সে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে দেখিয়েছে।’