শীর্ষপদ ছেড়ে রাহুলের চলে যাওয়া না-পসন্দ খুরশিদের

দলের সংকটের সময় আচমকা সভাপতির পদ ত্যাগ করে রাহুল গান্ধি একেবারেই ঠিক কাজ করেননি। এমনটাই মনে করেন প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা সলমন খুরশিদ।

Written by SNS New Delhi | October 10, 2019 1:52 pm

বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা সলমন খুরশিদ। (File Photo: IANS)

দলের সংকটের সময় আচমকা সভাপতির পদ ত্যাগ করে রাহুল গান্ধি একেবারেই ঠিক কাজ করেননি। এমনটাই মনে করেন প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী তথা বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা সলমন খুরশিদ। পাশাপাশি ফের কংগ্রেসের মাথা হিসাবে সােনিয়া গান্ধিকেও মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে তাঁর বলে সংবাদসংস্থাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সােজা জানান তিনি।

তাঁর সাফ কথা, ‘আমি এই ব্যাপারটায় একদমই খুশি নই। যেই আমাদের নেতা হােন, আমি চাই তিনি আমাদের সঙ্গে থাকবেন’। লােকসভা নির্বাচন মিটে যাওয়ার পাঁচ মাস পরও কংগ্রেস ঘর গুছিয়ে উঠতে পারছে না বলে মনে করেন বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা সলমন খুরশিদ। আর এজন্য তিনি রাহুল গান্ধির হঠকারিতাকেই সরাসরি দায়ী করছেন। তাঁর কথায়, রাহুল হঠাৎ নেতৃত্ব ছেড়ে চলে যাওয়ার ফলে কংগ্রেসের পক্ষে লােকসভায় পরাজয়রে কারণ বিশ্লেষণ করা সম্ভব হয়নি, মানুষ যে বার্তা দিতে চেয়েছেন তাও বুঝে ওঠা যায়নি। বরং রাহুলের পদত্যাগের ফলে দলে গভীর শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে বিশ্বাস খুরশিদের।

এসব কথা তিনি গভীর যন্ত্রণা থেকে বলছেন বলে জানান। পাশাপাশি তিনি চেয়েছিলেন, রাহুল গান্ধি দলের বিপদের সময় সভাপতি পদে থাকুন এটা কংগ্রেস চেয়েছিল। তবে তিনি (রাহুল) আমাদের কোনও কথাই শুনলেন না। ফলে দল আরও পিছিয়ে পড়ল। এখান থেকে ঘুরে দাঁড়ান খুবই কঠিন হয়ে যাবে আমাদের কাছে। এমনটা মনে করেন কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির অন্যতম সদস্য সলমন খুরশিদ।

ভােটের কাটাছেঁড়া করার জন্য নেতৃত্বকে সঠিক জায়গায় থাকতে হবে। এ সােজা কথা সলমন খুরশিদের। পাশাপাশি তিনি স্বীকার করে নিলেন অতিরিক্ত রাহুল আনুগত্য তিনি ছাড়া অধিকাংশ কংগ্রেসিদের অন্যতম সমস্যা। আর সেজন্যই আমরা হারের কারণ বিশ্লেষণ করতে পারছি না বলে মনে করেন তিনি।

তাঁর কথায়, ‘আমি চেয়েছিলাম তিনি পদে থাকন। আমরা সকলেই (সমগ্র কংগ্রেস দল) তাই চেয়েছিলাম তিনি থাকুন আমাদের সঙ্গে। কিন্তু তিনি থাকলেন না। তাহলে এবার কী হবে? আমি তাে আর যে কোনাে লােককে ডেকে বলতে পারি না যে আসুন, বিশ্লেষণ করে দিয়ে যান। এ কাজ কেবল নেতাই করতে পারেন’। সেই সঙ্গে তাঁর আশা, নির্বাচনের পর (বিধানসভা) দল এই বিষয়টি বিবেচনা করবে। দল যত দ্রুত এই কাজটি করবে, ততই আমাদের জন্য ভাল। কারণ, এভাবেই আমরা মানুষের দেওয়া বার্তাটা বুঝতে পারব। আমাদের ইস্তেহারাটি খুবই ভাল ছিল, কিন্তু তবু আমরা মানুষের মন জয় করতে পারিনি। এমনটাই বিশ্বাস করেন প্রবীন কংগ্রেস নেতা সলমন খুরশিদ।

সামনেই মহারাষ্ট্র ও হরিয়ানায় বিধানসভা নির্বাচন। কংগ্রেস যেভাবে লড়ছে, তাতে তাদের আসন্ন ভােটে জেতার সম্ভাবনা প্রায় নেই বলে দাবি করলেন কংগ্রেসেরই এক শীর্ষ নেতা। দলের নেতা তথা প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী সলমন খুরশিদের আশঙ্কা, ভবিষ্যত-ও অনিশ্চিত কংগ্রেসের। লােকসভা নির্বাচনে ভরাডুবির পর সভাপতিত্ব ছেড়ে দেওয়ায় এদিন রাহুল গান্ধিরও সমালােচনা করেছেন তিনি।

সংবাদসংস্থা অ্যাসােসিয়েটেড প্রেসকে খুরশিদ বলেছেন, লােকসভা নির্বাচনে হারের পর অভিমানে ছেড়ে দিলেন রাহুল গান্ধি। যতদিন না-পর্যন্ত দলের নয়া সভাপতি নির্বাচিত হয়, ততদিন অন্তবর্তী সভানেত্রী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন সােনিয়া গান্ধি। খুরশিদের কথায়, ‘কেন আমরা হারলাম, তা পর্যবেক্ষণ করতে আমরা একত্র হইনি। আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হল নেতাই বেরিয়ে গিয়েছেন। এতে একটা ফাঁকা জায়গার সৃষ্টি হয়। সােনিয়া গান্ধি তার জায়গায় এসেছেন। তবে এটা বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে যে তিনি স্টপ গ্যাপ হিসেবে কাজ করছেন। এটা না-হলেই ভালাে হত’।

অক্টোবরের শেষ সপ্তাহেই বিধানসভা নির্বাচন মহারাষ্ট্র ও হরিয়ানায়। মহারাষ্ট্রের ২৮৮ ও হরিয়ানা ৯০টি আসনে ভােট হবে। ভােট প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে। টিকিট পাওয়া নিয়ে দলের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। মহারাষ্ট্রে কংগ্রেসের হেভিওয়েট নেতা সঞ্জয় নিরুপম ইতােমধ্যেই দল ছাড়ার হুশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন। হরিয়ানার প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অন্তর্কলহের অভিযােগ তুলে ইস্তফা দিয়েছেন অশােক তানওয়ার। নির্বাচনী প্রচারও বয়কট করছেন অনেক তারকা নেতা।