কর্ণাটক : জোট সরকারের মেয়াদ অধ্যক্ষের কৌশলে একদিন দীর্ঘায়িত হল

কর্ণাটক কংগ্রেস-জেডিএস জোট সরকারের বিপদ আর কিছুতেই কাটছে না।

Written by SNS Bengaluru | July 19, 2019 4:51 pm

কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারাস্বামী। (Photo: IANS)

কর্ণাটক কংগ্রেস-জেডিএস জোট সরকারের বিপদ আর কিছুতেই কাটছে না। বৃহস্পতিবার বিধানসভার অধ্যক্ষ আগামীকাল পর্যন্ত অধিবেশন স্থগিতের ঘােষণার ফলে এদিন অনাস্থা প্রস্তাবে ভােটাভুটি হতে পারেনি।

মুখ্যমন্ত্রী এইচডি কুমারস্বামী এদিন বিধান সভায় আস্থাপ্রস্তাব পেশ করে বিস্তারিত আলােচনার প্রস্তাব করেন। কিন্তু বিজেপি’র পক্ষে এব্যাপারে বিরােধিতা করা হচ্ছে। এরমধ্যে বিরােধী বিজেপি সদস্যরা রাজ্যপালের কাছে গিয়ে বৃহস্পতিবারই যাতে আস্থাভােট গ্রহণপর্ব সমাপ্ত হয় তার জন্য আবেদন জানান। সেই অনুযায়ী দিনের শেষে হলেও আস্থাভােট করানাের চেষ্টার জন্য অধ্যক্ষকে উদ্যোগ নিতে অনুরােধ করা হয়।

বিজেপির পক্ষে বিএস ইয়েদুরাপ্পা জানান, তাঁরা গভীর রাত পর্যন্তও অপেক্ষা করতে রাজি। কিন্তু অধ্যক্ষ বিধানসভার অধিবেশন আগামীকাল পর্যন্ত স্থগিত ঘােষণা করায়, শুক্রবার পর্যন্ত অপেক্ষা করা ছাড়া আর উপায়ান্তর নেই।

কর্ণাটক সরকারের এমন চরম সংকটের মুহুর্তে যে ঘটনাগুলির উদ্ভব হয়েছে সেগুলি হল- অধ্যক্ষ কে আর রমেশ কুমার কংগ্রেস-জনতা দল (সেকুলার) জোটের হার নিশ্চিত জেনে এদিন ভােটাভুটি স্থগিত করে দেন বলে অভিযােগ বিজেপির। এরই মধ্যে রাজ্যপালের পরামর্শের পর অধ্যক্ষ আইনি পরামর্শ নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন।

মুখ্যমন্ত্রী এইচডি কুমারস্বামী আস্থাভােট গ্রহণের প্রস্তাব পেশ করে বিস্তারিত আলােচনার দাবি জানান। কিন্তু বিরােধী বিজেপি নেতা ইয়েদুরাপ্পা এদিনই ভোটাভুটির দাবি জানান। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী তার প্রতিবাদ করেন।

 কংগ্রেসের পক্ষে এক বিধায়ক শ্ৰীমন্ত পাতিলের একটি রেসর্ট থেকে গােপনে স্থান ত্যাগ ও পরে মুম্বইয়ের একটি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ঘটনা, জোট সরকারের সদস্য শ্ৰীমন্ত পাতিলকে বিজেপি মুম্বইতে নিয়ে গিয়েছে বলে অভিযােগ, কারণ শ্ৰীমন্ত পাতিল চলতি মাসের ৬ তারিখে প্রথম জোট সরকারে বিপক্ষে জেহাদ ঘােষণা করেন, অধ্যক্ষ জোট সরকারের সদস্যদের হঠাৎ রাজ্য ছেড়ে উধাও হয়ে যাওয়ার বিষয়ে রাজ্যসরকারের পুলিশমন্ত্রী এমবি পাতিলের কাছে রিপাের্ট চান।

আস্থাভােটের প্রস্তাব পেশের পর কংগ্রেস ও জেডিএস সদস্য বিদ্রোহী সদস্যদের বিধানসভা অধিবেশনে হাজির থাকার হুইপ জারির পরও তা অমান্য করার কারণে সদস্যপদ খারিজ কেন করা হবে না তা জানতে চান, কংগ্রেস দলের পক্ষে ডিকে শিবকুমার জোট সরকারের সদস্যদের ‘অপহরণ’ করা হয়েছে বলে বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযােগ করেন। তিনি জানান, সংশ্লিষ্ট সদস্যের পরিবারের সদস্যরা তাঁকে ফোন করে ‘অপহরণ’ করা হয়েছে বলে অভিযােগ করেছেন।

বুধবার সুপ্রিম কোর্ট জোট সরকারের বিদ্রোহী সদস্যের পদত্যাগ নিয়ে অধ্যক্ষকে সিদ্ধান্ত গ্রহণের দায়িত্ব দিয়েছে। তবে বিদ্রোহীদের বিধানসভার অধিবেশনে হাজির হতে বাধ্য করা যাবে না, এতে সংশ্লিষ্ট সদস্যের সদস্যপদ খারিজের সম্ভাবনাটি দুর্বল করা হল বলে তথ্যভিজ্ঞ মহলের ধারণা।

সুপ্রিম কোর্টে এই নির্দেশের ফলে বিদ্রোহী সদস্যরা মুম্বইতে থাকা, জোট সরকার থেকে পদত্যাগপত্র ফেরত না নেওয়া এবং বিধানসভার অধিবেশনে যােগ না দেওয়ার সিদ্ধান্তে অটল রয়েছেন।

এদিন সন্ধের দিকে কংগ্রেসের রামলিঙ্গ রেড্ডি তাঁর পদত্যাগপত্র প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন। উল্লেখ্য কংগ্রেস-জেডিএস জোট সরকারের থেকে তেরােজন কংগ্রেস সদস্য এবং তিনজন জেডিএস সদস্য মােট ষােলোজন পদত্যাগ করেন বিগত দুই সপ্তাহে।

এছাড়া দুই নির্দল সদস্যও জোট সরকার থেকে তাদের সমর্থন প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত ঘােষণা করেন। জোট সরকারের বর্তমান সঙ্কটের পূর্বে ২২৪ আসনবিশিষ্ট বিধান সভায় সদস্য সংখ্যা ছিল ১১৮, অন্যদিকে দুই নির্দল সদস্যের সমর্থন নিয়ে বিরােধী বিজেপির সদস্য সংখ্যা ছিল ১০৭। পনেরাে জন সদস্যের পদত্যাগপত্র গৃহীত হলে এবং রামলিঙ্গ রেডিডর পদত্যাগ প্রত্যাহারের পর শাসক জোটের সদস্য সংখ্যা দাঁড়াবে ১০১। ফলে তেরাে মাসের কুমারস্বামী সরকার সংখ্যালঘু হয়ে পড়বে।