• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

সৌরভকে রাজ্যের জমি প্রদানে বড়সড় প্রশ্ন চিহ্ন তুলল ডিভিশন বেঞ্চ

হলফনামা চাইল সব পক্ষের

ফাইল চিত্র

শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে ওঠে ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে রাজ্য সরকারের জমি প্রদান মামলা। সৌরভকে কারখানা তৈরিতে জমি দিয়েছে রাজ্য সরকার। অভিযোগ, সেই জমি ৯৯৯ বছরের জন্য ১ টাকায় লিজ দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার হাইকোর্টে সেই মামলার শুনানি ছিল। সেখানেই রাজ্যের সিদ্ধান্তে সাময়িক হস্তক্ষেপ করল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী ও বিচারপতি অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে এদিন মামলার শুনানি হয়।

প্রসঙ্গত পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনায় প্রয়াগ গ্রুপকে ফিল্ম সিটি করার জন্য ৭৫০ একর জমি দিয়েছিল রাজ্য। ২৭০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে গ্রুপটি। যদিও পরে চিটফান্ড মামলায় নাম জড়ায় এই গ্রুপের। অভিযোগ ওঠে, সাধারণ মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা তোলা হয়েছে। ফিল্ম সিটিতে বিনিয়োগের ২৭০০ কোটি টাকাও এভাবেই তোলা হয়েছিল বলে অভিযোগ। প্রয়াগ গ্রুপের সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়। ওই ৭৫০ একর জমিও ছিল তালিকায়। আমানতকারীদের টাকা ফেরাতে সরকার তা বাজেয়াপ্ত করে।

Advertisement

এরই মধ্যে অভিযোগ, সেই ৭৫০ একর থেকেই সৌরভকে কারখানার জন্য জমি দেওয়া হয়েছে। কেন এই জমি মাত্র ১ টাকায় দেওয়া হয়? সেই প্রশ্নকে সামনে রেখে দায়ের হয় জনস্বার্থ মামলা। কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ,’এই মামলার বিচারের উপরে জমির মালিকানার ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে। যে ৩৫০ একর জমি নিয়ে বিতর্ক, তার মধ্যে ১১.২৮ একর জমি শৈলেন্দ্র তালুকদার কমিটির হাতে রয়েছে। রাজ্যের দায়িত্ব, ওই জমির দখল পেতে কমিটির কাছে দরবার করা। এই অবস্থায় ওই জমি নিয়ে কোনওরকম ব্যবহার, বিক্রি কিছু করতে পারবে না রাজ্য। এই সময়ের মধ্যে চন্দ্রকোনার মোট জমি যা প্রয়াগ কোম্পানিকে দেওয়া হয়েছে, নাগরিকের আস্থা অর্জনের জন্য তা আবারও খতিয়ে দেখতে হবে’।

Advertisement

এই নিয়ে সব পক্ষের বক্তব্য সহ হলফনামা দিতে হবে, বলে জানায় আদালত। ৩ সপ্তাহের মধ্যে রাজ্য হলফনামা দেবে। ৫ সপ্তাহ পরে এই মামলার শুনানি হবে। আদালতের আরও নির্দেশ, ‘রাজ্য, সেবি ও তালুকদার কমিটির সঙ্গে সমন্বয় করে চন্দ্রকোনার ওই জমি ফিজিক্যালি খতিয়ে দেখবে। সেখানে ফিল্ম সিটির জন্য যে সব পরিকাঠামো তৈরি হয়েছিল, তার বাজারমূল্য খতিয়ে দেখা হবে। আগামী শুনানিতে তার একটা বাজারদর অনুযায়ী হিসাব আদালতে দিতে হবে রাজ্যকে’। একই সঙ্গে রাজ্যকে আদালতকে বোঝাতে হবে, ‘জমির নিলাম হয়েছে কি না? না হলে কেন হয়নি। কেন ওই জমি নিলাম না করে কোনও ওপেন টেন্ডার না করে একজনকে বিক্রি করা হল? যদি এই ব্যাপারে আদালতকে সন্তুষ্ট করতে রাজ্য ব্যর্থ হয়, তাহলে জমি হস্তান্তরের পদ্ধতিতে আপত্তি করবে বলে জানিয়ে দিল ডিভিশন বেঞ্চ।

ডিভিশন বেঞ্চের আরও পর্যবেক্ষণ,’যদি না হয়, তাহলে সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপনের পর নির্দিষ্ট সময় দেওয়ার দরকার। অন্য কোনও গ্রাহক আগ্রহ দেখায় কি না, যদি এমনটা না করা হয়ে থাকে, তখনই মানুষের মনে প্রশ্ন আসবে। এটাও খোঁজা আমাদের দায়িত্ব রাজ্যের স্বার্থে। স্বচ্ছতার জন্য। আমাদের সন্দেহ আছে নিলাম হয়েছে কি না? ফার্স্ট কাম ফার্স্ট সার্ভ হিসাবে জমি কেনা বা বিক্রি হয়েছে।

যদিও এই জমি নিয়ে রাজ্যের দাবি, ‘উচিত মূল্যে জমি কেনা হয়েছে’। পশ্চিম মেদিনীপুরে কারখানা তৈরির জন্য সৌরভকে দেওয়া জমির মূল্য মাত্র ১ টাকা। এনিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা হয়েছে। শুক্রবার বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী ও বিচারপতি অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে সংশ্লিষ্ট মামলার শুনানি হয়।

হাইকোর্টের নির্দেশ,’এই মামলার বিচারের উপরে জমির মালিকানার ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে। ৩৫০ একরের মধ্যে ১১.২৮ একর জমি শৈলেন্দ্র তালুকদার কমিটির হাতে রয়েছে। রাজ্যের দায়িত্ব, ওই জমির দখল পেতে কমিটির কাছে দরবার করা। এই অবস্থায় ওই জমির কোনও রকম ব্যবহার, বিক্রি কিছু করতে পারবে না রাজ্য। মামলা চলাকালীন সময়ের মধ্যে চন্দ্রকোনার মোট জমি যা একটি কোম্পানিকে দেওয়া হয়েছে, তা নাগরিকের আস্থা অর্জনের জন্য পুনরায় খতিয়ে দেখতে হবে। একইসঙ্গে এই বিষয়ে সব পক্ষের বক্তব্য হলফনামা দিয়ে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। ৩ সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা দেবে রাজ্য। পাঁচ সপ্তাহ পর ফের মামলাটির শুনানি হবে।

Advertisement