প্রশান্ত দাস: চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনের শেষ লগ্নের নির্বাচনী প্রচারে ব্যস্ত রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বসমূহ৷ ব্যতিক্রমী হলেন না তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায়৷ বৃহস্পতিবার জোড়া কর্মসূচি করেন অভিষেক৷ তীব্র দাবদাহকে উপেক্ষা করে এদিন সকালেই ফলতা বিধানসভার জোড়া বটতলা থেকে নতুন রাস্তার মোড় পর্যন্ত রোড শো করেন যুবরাজ৷ স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে রোড শো শেষে দফায় দফায় আক্রমণ করেন বিজেপি এবং সিপিএমকে৷ বক্তব্যের শুরুতেই অভিষেক বলেন, “আগেই ঠিক করেছিলাম, বিজেপির কফিনে শেষ পেরেকটা এই ফলতা থেকেই পুঁতবো ৩০ তারিখ সকালে শেষ লগ্নের প্রচার করে৷” সরাসরি বিরোধী দলগুলিকে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে অভিষেক জানতে চান, “বিজেপি ফলতায় বলছে, আমাদের প্রচার করতে দিচ্ছে না৷ কে বারণ করেছে? আমার বিরুদ্ধে প্রার্থী খুঁজতে বিজেপির এক মাস লেগেছে! বিজেপির কোনো সর্বভারতীয় বা রাজ্যের নেতা শুভেন্দু অধিকারী, দিলীপ ঘোষ আমার বিরুদ্ধে দাঁড়ালেন না কেন? সিপিএমের সুজন চক্রবর্তী, মহম্মদ সেলিম দাঁড়ালেন না কেন? এতো ভয় কেন?” এর উত্তরটাও অভিষেক নিজেই দিয়ে বলেন, “তার কারণ তাঁরাও জানেন এই ডায়মন্ড হারবারের মাটি তৃণমূল কংগ্রেসের দুর্জয় ঘাঁটি৷”
ফলতার মাটিতে দাঁড়িয়ে শেষ লগ্নের প্রচারে কিছু প্রতিশ্রুতি দিয়ে গেছেন অভিষেক৷ ফলতাকে উন্নয়নের নিরিখে এক নম্বরে রাখার বার্তা দিলেন যুবরাজ৷ পূর্ব নির্বাচনের ভোট অংক জানিয়ে অভিষেক বলেন, “২০২১-এ যখন বিজেপি গেলো গেলো রব তুলেছিল, তখন ফলতাবাসী তৃণমূলকে ৪০ হাজার ৭০০ ভোটে জিতিয়েছিল৷ আমি আজ ভোট চাইতে আসিনি, আবদার করতে এসেছি৷ ৪ লক্ষ ভোট ব্যবধান রেখেছি ডায়মন্ড হারবার থেকে৷ তার মধ্যে যেন সবচেয়ে বেশি ব্যবধান ফলতা দেয় আর ফলতা যেন এক নম্বরে থাকে তা আপনাদের সুনিশ্চিত করতে হবে৷ জয়ের ব্যবধান এক লক্ষের বেশি হলে, আমি ফলতাকেও উন্নয়নের নিরিখে এক নম্বরে রাখবো৷ যা জনসমাবেশ হয়েছে তাতে মনে হচ্ছে নির্বাচনী কর্মসূচি হয়নি৷ বিজয় সমাবেশ হয়েছে৷” এরপরই অভিষেকের গর্জন, “১লা জুন যখন ভোট দিতে যাবেন, তখন থেকে কেন্দ্রে বিজেপি সরকারের মেয়াদ আর ৩ দিনের৷ ৪ তারিখ পরিবর্তন হচ্ছেই, কেউ আটকাতে পারবে না৷” এদিন কিছু চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন বিরোধী দলগুলিকে৷ তিনি বলেন, “বিজেপি, সিপিএমের হয়ে যাঁরা ভোট চাইতে যাচ্ছেন তাঁদের বুকের পাটা থাকলে রিপোর্ট কার্ড প্রকাশ করুন৷” তাঁর আরও সংযোজন, “আমি চ্যালেঞ্জ করছি বিজেপি, সিপিএম এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলকে যারা এখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, আমাদের নিঃশব্দ বিপ্লব বইটা পড়ুন৷ তারপর ক্ষমতা থাকলে দশ বছরের উন্নয়নের খতিয়ান নিয়ে আসুন৷ তথ্য পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে লড়াই হবে৷”
Advertisement
এদিন একের পর উন্নয়নমূলক কার্যের খতিয়ান তুলে ধরেন যুবরাজ৷ রেমাল ঘূর্ণিঝড়ের ফলে পরিস্থিতির তদারকি করতেই পূর্বের ফলতার কর্মসূচি বাতিল হয় অভিষেকের, সেটিও জানান তিনি৷ অভিষেকের ভাষায়, ‘কোভিডের সময় আমি একটা মানুষকে অভুক্ত শুতে দিইনি, এটাই ডায়মন্ড হারবার মডেল৷ ২১টা কমিউনিটি কিচেন খুলে ১৪ লক্ষ মানুষের মুখে অন্ন তুলে দিয়েছি৷’
Advertisement
Advertisement



