ছিলেন এক ছড়াকার
মানস চক্রবর্তী
ছিলেন এক ছড়াকার
নাম তাঁর নন্দ
সারা গায়ে ছিল তাঁর
ছড়া-ছড়া গন্ধ।
ছড়া লিখে ছড়া পড়ে
কেটে যেত দিন তাঁর
পেশাতে ছিলেন তিনি
শিশুদের ডাক্তার।
তাঁর কাছে রোগী এলে
শোনাতেন ছড়া
ছড়া দিয়ে ছিল তাঁর
পৃথিবীটি ভরা।
সব রোগ সেরে যেত
তাঁর ছড়া শুনে
দেশজোড়া খ্যাতি ছিল
তাঁর এই গুণে।
ভুল কোরো না
কণিকা সরকার
ইলিক বিলিক হাসছে খুশি,
গাইছে শিশুমন।
মেলছে ডানা অসীম রেখায়
পাখিরা যেমন!
ইচ্ছেগুলো আকাশছোঁয়া
রঙিন কোমল কুঁড়ি,
সুতোয় বাঁধা ছটপটানো
উড়ছে যেন ঘুড়ি!
স্বপ্ন আঁকা চোখ যে ওদের,
নেই পরোয়া তাই,
মেটায় দাবি নিজের মনে
যখন যেটা চায়!
পায়ে পায়ে এগিয়ে চলে
কঠোর অনুশীলন,
ঠিক ঘটাবেই পুব পশ্চিম
সংস্কৃতির মিলন।
আজকে কুঁড়ি, ভবিষ্যতে
সে-ই তো ফোটা ফুল!
যত্নে তাদের আগলে রাখো,
কেউ কোরো না ভুল!
নাটোরের জমিদার
সৌমেন ঘোষ
নাটোরের জমিদার হরিপদ হালদার
প্রাতঃভ্রমণে যান মজে যাওয়া খালধার
শীতে যান খালি গায়ে
মো-সাহেব ডানে বাঁয়ে
প্রচন্ড গ্রীষ্মে গায়ে কাশ্মীরি শাল তার।
নাতি তার জেদি বড়, তিনদিন খায় না
বাড়িতে পুষবে কিছু, করেছেন বায়না
অবশেষে হালদার
খুঁজে পান মালদার
বাজারেতে সুন্দর পোষমানা হায়না।
আশ্বিন মাসে মুচকি হাসে
কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায়
কথায় কথায় নদীর তীরে
চলতে ফিরতে সন্ধে হাওয়া
মন ভালো এক সুখের নীড়ে
আলো ছায়ার আসা যাওয়া।
গভীর গহন প্রাণের টানে
কথায় কথায় ভোরের উঠান
সেই যেখানে পাখির গানে
ছড়িয়ে থাকে খুশির যে ধান।
ঝির ঝির ঝির বৃষ্টি মাখা
কথায় থাকে মিষ্টি বাঁশি
দুলিয়ে বাতাস কাশকে আঁকা
অপরাজিতা বকুল হাসি।
কথায় কথায় বুকের মাঝে
কথকতার হরেক জ্যোতি
রাতের আকাশ তারার সাজে
জমিয়ে রাখে আলোর মতি।
ভাদর শেষে আশ্বিন মাসে
কথায় কথায় আকাশ বোনা
পেঁজা তুলো মুচকি হাসে
নীলের মাঝে ছড়ায় সোনা।
গাছের ছায়ায়
সুশান্ত কুমার দে
সবুজ পাতা মাথায় ছাতা
ঘাসের বিছানায়,
খোকা আয়, খুকি আয়
মুক্ত গাছের ছায়।
গান শুনিয়ে ঘুমটা নিয়ে
টিয়ে পাখি আয়
দোদুল দুল কতো ফুল
গন্ধ ঢালে গায়।
মৃদু হাওয়া মাথায় ছাওয়া
চোখ জুড়িয়ে যায়,
মা ডাকছে বাবা ডাকছে
ভোজন হবে তাই।
আকাশ ঘেঁষে দূর দেশে
মেঘবালিকা যায়,
মিষ্টি হেসে, বলল এসে
এসো আমার গাঁয়।
শরৎকালীন
সায়ন তালুকদার
আকাশ নীলে রঙিন ঘুড়ি,
পাখপাখালির ওড়াউড়ি
শরৎ মেলে রূপ।
কাশের সারি দোলায় মাথা,
ঠাকুমা শোনায় গল্প-গাথা
খোকাখুকু সব চুপ।
পুজোর ছুটির ঘন্টা বাজে,
মন কি আর বসে কাজে!
আনন্দগান গাই।
শিউলি ঝরে উঠোন জুড়ে,
ঢাকের বাদ্যি বাজে দূরে
আলোর রোশনাই।