মঙ্গলবার কুমোরটুলি এলাকায় গঙ্গারঘাটে ঘটে রোমহর্ষক ঘটনা। এক মহিলার টুকরো করা দেহ ট্রলি ব্যাগে করে এনে নদীতে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছিল। সেই সময় হাতেনাতে ধরা পড়েন দুই মহিলা। জানা যায়, যে মহিলার মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে তাঁর নাম সুমিতা ঘোষ। খোঁজ পাওয়া গিয়েছে তাঁর প্রাক্তন স্বামী সুদীপ্ত ঘোষের। তিনি পূর্ব বর্ধমান জেলার কালনা মহকুমার বাসিন্দা। মৃত্যুর চারদিন আগে তিনি শ্বশুরবাড়ির এলাকায় গিয়েছিলেন বলে খবর পাওয়া গিয়েছে।
জানা গিয়েছে, কয়েক বছর আগে সুমিতা ঘোষের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছিল। তারপরও প্রাক্তন স্বামীর সঙ্গে নতুন করে সংসার করতে চেয়েছিলেন ৫৫ বছর বয়সের সুমিতা ঘোষ। খুন হওয়ার চার দিন আগে তিনি মধ্যমগ্রাম থেকে কালনার নাদনঘাটের কালীতলায় এসেছিলেন বলে জানা গিয়েছে। তাঁর সঙ্গে আরও একজন এসেছিলেন। সেই ব্যক্তি নিজেকে আইনজীবী হিসেবে পরিচয় দিয়েছিলেন। পুলিস সূত্রের খবর, ২০০৪ সালে সুমিতার সঙ্গে নাদনঘাটের কালীতলার সুদীপ্ত ঘোষের বিয়ে হয়। কিন্তু কয়েক বছর পর পরিবারিক অশান্তির জেরে ডিভোর্স মামলা ফাইল করা হয়। ২০১৭ সালে তাঁদের মধ্যে বিচ্ছেদ হয়ে যায়। সুমিতা ঘোষ ডিভোর্সের পর শিয়ালদহে তাঁর দিদির বাড়িতে চলে যান। তবে তিনি মাঝে মাঝে তাঁর প্রাক্তন স্বামীকে ফোন করতেন বলে জানা গিয়েছে। তবে তাঁদের মধ্যে বেশি কথা হত না।
Advertisement
এদিকে মঙ্গলবার ওই ঘটনার কথা জানার পর সুদীপ্ত ঘোষ বলেন, ‘বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যাওয়ার পর তাঁর সঙ্গে আর যোগাযোগ রাখতে চাইনি। তিনি কোথায় থাকতেন, সেটাও জানতাম না। তাঁকে নির্মমভাবে খুন করার বিষয়টি খবরে প্রকাশিত হওয়ায় জানতে পারি। তাঁর বাবার বাড়ি অসমের জোরহাটে। তবে বহু বছর আগে সেখান থেকে চলে এসেছিলেন তিনি। কলকাতায় থাকতেন। সেখান থেকেই যোগাযোগ করে বিয়ে হয়েছিল।’ প্রাক্তন স্ত্রীয়ের মৃত্যু সংবাদ পেয়ে দুঃখপ্রকাশ করেছেন সুদীপ্ত। তবে কে, কী কারণে সুমিতাকে খুন করা হল সে বিষয়ে কিছু মন্তব্য করতে চাননি তিনি।
Advertisement
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, চারদিন আগে সুমিতা ঘোষ নাদনঘাটে এসে তাঁর প্রাক্তন স্বামীর এক ঘনিষ্ঠের বাড়িতে গিয়েছিলেন। তার আগে তিনি ওই ব্যক্তিকে কয়েকবার ফোনও করেছিলেন। কিন্তু সেই ব্যক্তি বিষয়টিতে গুরুত্ব না দেওয়ায় সরাসরি তাঁর বাড়িতে চলে আসেন সুমিতা। ওই ব্যক্তির কথায়, ‘হঠাৎই ওই মহিলা বাড়িতে চলে আসেন। বলছিলেন, প্রাক্তন স্বামীর সঙ্গে সংসার করতে চাই। একার জীবন ভালো লাগছে না। আগে যদি কোনও ভুল করে থাকি, তা শুধরে নেব।’ তিনিই জানান, বিয়ের চার-পাঁচ বছর পর থেকে তাঁদের সম্পর্কে চিড় ধরে। সুমিতা শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারেননি। প্রায়ই অশান্তি হতো।
মৃত্যুর চারদিন আগে হঠাৎ কেন তিনি প্রাক্তন স্বামীর সঙ্গে ফের সংসার পাতার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন তা ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। তাঁর সঙ্গে আসা ব্যক্তিই বা কে ছিলেন, তা নিয়েও চলছে তদন্ত।
Advertisement



