প্রথমে বাড়িতে চুরি, তারপর সেই চুরি করা সামগ্রী এবং ড্রাগ ঘোজাডাঙা সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পাচার করার অভিযোগ! সূত্র মারফত খবর পেয়েই দফায় দফায় অভিযান চালিয়ে ইতিমধ্যেই চারজনকে গ্রেফতার করেছে বারাসত থানার পুলিশ। তবে এখনও অধরা মূল পাচারকারী। রবিবার সাংবাদিক বৈঠক করে সম্পূর্ণ ঘটনার বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন বারাসত পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্পর্শ নীলাঙ্গী, তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বারাসতের এসডিপিও বিদ্যাসাগর আজিঙ্কা অনন্ত। স্পর্শ নীলাঙ্গী জানিয়েছেন, ১৮ নভেম্বর বারাসতের শিমুলতলায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে ড্রাগ বিনিময়ের অভিযোগে রাজু দাস নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে বারাসত পুলিশ।
এরপরই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে পুলিশ জানতে পারে, মূল অভিযুক্ত বসিরহাটের বাসিন্দা রাজু দাস কেবল ড্রাগের অবৈধ ব্যবসার সঙ্গেই যুক্ত নয়, পাশাপাশি সুযোগ পেলেই ছোটোখাটো চুরিও করেন। এরপর রাজুর বাড়িতে হানা দিয়ে চারটি মোবাইল, তিনটি ল্যাপটপ এবং কিছু সোনার গহনা উদ্ধার করে পুলিশ। স্পর্শ নীলাঙ্গীর ভাষায়, ‘রাজু দাস ড্রাগ ব্যবসার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত থাকলেও তাঁর বাড়ি থেকে ড্রাগ মেলেনি।’ এখানেই শেষ নয়, মূল অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, রাজু দাসের চুরি করা সামগ্রী সাহানুর, বাপি, আরিফ বিল্লা নামের ব্যক্তিদের হাত ঘুরে অবশেষে মুস্তাফা অর্থাৎ মূল পাচারকারীর হাতে পৌঁছায় এবং তিনিই ওই চুরি করা সামগ্রী এবং ড্রাগ বাংলাদেশে পাচার করেন।
এ প্রসঙ্গে স্পর্শ নীলাঙ্গী বলেন, ‘পূর্বেই চুরির অভিযোগে সাহানুর, বাপি এবং আরিফকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এবার রাজু দাসের বয়ানে তাঁদের নাম উঠে এসেছে। তাঁদের বিরুদ্ধে ড্রাগ পাচারের মামলাও রয়েছে।’ এরপরই মুস্তাফা প্রসঙ্গে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, ‘ওকে আমরা আটক করবোই, নজরে রয়েছে।’
প্রসঙ্গত, বিগত কয়েকদিনে একাধিক চুরির ঘটনা ঘটেছে দেগঙ্গাতেও। স্থানীয়দের অভিযোগ, থানা সংলগ্ন এলাকাতেই বসছে মদ থেকে জুয়ার আসর। এ প্রসঙ্গে স্পর্শ নীলাঙ্গীর বক্তব্য, ‘দেগঙ্গায় লোটোর ব্যবসার কিনারা করেছি আমরা। খবর পাওয়া মাত্রই আমরা পদক্ষেপ করি। দফায় দফায় অভিযান চলবে।’
তবে একাধিক চুরি-ডাকাতির ঘটনায় নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে কি জোরদার করবে বারাসত পুলিশ? এর জবাবে স্পর্শ নীলাঙ্গী জানিয়েছেন, ‘শীতকাল শুরু হতেই বারাসত পুলিশ জেলার সকল থানাকে নিয়ে একটি মিটিং করেছি, যেখানে এই মরশুমে কিছু বাড়তি তৎপরতা গৃহীত হয়েছে। রাতে মোটর সাইকেল নিয়ে নজরদারি শুরু হয়েছে বাজার থেকে শহরতলী এলাকাগুলিতে।’