• facebook
  • twitter
Saturday, 27 December, 2025

কর্ণাটকে গুঁড়িয়ে দেওয়া হল ২০০টি বাড়ি, গৃহহীন ৪০০ মুসলিম পরিবার

কর্ণাটক সরকার বামেদের এই অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছে, উর্দু সরকারি স্কুল সংলগ্ন একটি বড় জলাশয়ের কাছে সরকারি জমিতে অবৈধভাবে বাড়ি তৈরি করা হয়েছিল।

এতদিন বুলডোজার শাসনের অভিযোগ উঠেছে মূলত বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলিতে। জানা গিয়েছে, বেঙ্গালুরু শহরতলির একটি বস্তির ২০০ বাড়ি বুলডোজার চালিয়ে গুড়িয়ে দিয়েছে কর্ণাটকের সরকার। ফলে এই কনকনে শীতে রাতারাতি গৃহহীন হয়ে পড়েছে ৪০০ পরিবার। জানা গিয়েছে, যে সমস্ত বাড়ি গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে সেগুলি অধিকাংশই মুসলিম সম্প্রদায়ের। ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর কেরলের বাম নেতারা কংগ্রেসের এই ‘বুলডোজা শাসন’ নিয়ে সিদ্দারামাইয়া সরকারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, মুসলিম পরিবারগুলিকে উচ্ছেদ করতেই এই অভিযান।

ঘটনাটি গত ২২ ডিসেম্বরের। এদিন ভোর চারটে নাগাদ কোগিলু গ্রামের ফকির কলোনি এবং ওয়াসিম লেআউট এলাকায় বুলডোজার অভিযান চালায় স্থানীয় প্রশাসন।

Advertisement

প্রায় দেড়শো পুলিশের পাহারায় চারটি জেসিবি মেশিন ব্যবহার করে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় দু’শোর বেশি বাড়ি-ঝুপড়ি। গৃহহীন বাসিন্দারা সপ্তাহজুড়ে বিক্ষোভ চালাতে শুরু করেন। রাজস্বমন্ত্রী কৃষ্ণ বাইরে গৌড়ার বাসভবনের কাছেও বিক্ষোভ চলছে। দলিত সংগ্রাম সমিতির মতো বেশ কয়েকটি সংগঠন বিক্ষোভ আন্দোলনে যোগ দিয়েছে। তবে সবেচেয়ে বড় সমালোচক পড়শি রাজ্য কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। তিনি এক্স হ্যান্ডেলের পোস্টে এই ঘটনাকে ‘সংখ্যালঘু বিরোধী রাজনীতি’ বলে উল্লেখ করেছেন।

Advertisement

যদিও কর্ণাটক সরকার বামেদের এই অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছে, উর্দু সরকারি স্কুল সংলগ্ন একটি বড় জলাশয়ের কাছে সরকারি জমিতে অবৈধভাবে বাড়ি তৈরি করা হয়েছিল।

যদিও হঠাৎ বিড়ম্বনায় পড়া বাসিন্দাদের দাবি করেছেন, আগাম নোটিস ছাড়াই পুলিশ বলপূর্বক তাদের উৎখাত করেছে। এর ফলে তীব্র শীতের মধ্যে রাস্তায় রাত কাটাতে হয়েছে তাদের। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাসিন্দারা গত পঁচিশ বছরের স্থানীয় বাসিন্দা। তাঁদের কাছে বৈধ আধার এবং ভোটার কার্ড রয়েছে। অধিকাংশই পরিযায়ী শ্রমিক।

বিজয়ন মন্তব্য করেছেন, ‘দুঃখের বিষয় হল, কর্ণাটকে কংগ্রেস সরকারের অধীনে সংঘ পরিবারের সংখ্যালঘু বিরোধী রাজনীতি এখন বাস্তবায়িত হচ্ছে। যখন কোনও সরকার ভয় এবং বর্বর শক্তির ব্যবহারে শাসন করে, তখন প্রথমেই সাংবিধানিক মূল্যবোধ এবং মানবিক মর্যাদার মৃত্যু হয়।’ এর প্রতিক্রিয়ায় কর্ণাটকের উপ-মুখ্যমন্ত্রী ডি কে শিবকুমারের উত্তর, ‘এটি দখলকৃত স্থান। ভূমি মাফিয়ারা এটিকে বস্তিতে পরিণত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। আমরা মানুষকে নতুন জায়গায় সরে যাওয়ার সুযোগ দিয়েছি। আমরা বুলডোজারে বিশ্বাসী নই।’

Advertisement