জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগামে জঙ্গি হামলায় মৃত্যু হয়েছিল ২৬ জনের। সেই মর্মান্তিক ঘটনার রেশ এখনও কাটেনি। এরই মধ্যে হায়দরাবাদ বড় বিস্ফোরণের ছক প্রকাশ্যে এল। জঙ্গি সন্দেহে হায়দরাবাদ থেকে দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হল। তেলেঙ্গানা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতেরা হলেন ২৯ বছরের সিরাজ-উর-রহমান এবং ২৮ বছরের সইদ সমীর। সৌদি আরবের আইএস মডিউলের সঙ্গে তাঁদের যোগাযোগ ছিল বলে মনে করা হচ্ছে। ধৃতদের কাছ থেকে প্রচুর পরিমাণে বিস্ফোরক উদ্ধার করেছে পুলিশ।
অন্ধ্র ও তেলেঙ্গানা পুলিশের যৌথ বাহিনী গোপন সূত্রে খবর পেয়ে প্রথমে অন্ধ্রপ্রদেশের ভিজিয়ানগরমে তল্লাশি চালায়। সেখান থেকে গ্রেপ্তার করা হয় রহমানকে। এরপর তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন তদন্তকারীরা। জেরায় সমীরের নাম উঠে আসে। হায়দরাবাদ থেকে সমীরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, এই দু’জনের কাছ থেকে নানা ধরনের বিস্ফোরক পদার্থ উদ্ধার করা হয়েছে। তার মধ্যে অ্যামোনিয়া, সালফার, অ্যালুমিনিয়াম গুঁড়ো রয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় ধৃতেরা জানিয়েছেন, তাঁদের হায়দরাবাদ শহরে বিস্ফোরণের ছক ছিল। সেই লক্ষ্যেই বিস্ফোরক মজুত করছিলেন তাঁরা। এই চক্রের সঙ্গে আর কারা কারা জড়িত, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এদিকে এই ঘটনার পর এই ঘটনার পর শহর জুড়ে সতর্কতা জারি করেছে প্রশাসন। সাধারণ মানুষকে রাস্তাঘাটে চলাফেরার সময়ে বাড়তি সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতার অনুরোধও করা হয়েছে জনসাধারণের কাছে।
সিরাজ ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করে চাকরির চেষ্টা করছিল, সমীর একটি লিফট অপারেটিং সংস্থায় কর্মরত। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ধৃত দু’জন অল হিন্দ ইত্তেহাদুল মুসলিমিন সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিল। সেই সংগঠনের মাধ্যমেই তাঁরা তৈরি করছিল সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা। সৌদি আরবের আইসিস মডিউল থেকে তাঁদের হামলা চালানোর যাবতীয় নির্দেশ দেওয়া হচ্ছিল। হায়দরাবাদে কীভাবে বোমা বিস্ফোরণ করতে হবে, সেই নির্দেশও দিচ্ছিল আইসিস জঙ্গিরা। পুলিশ ইতিমধ্যেই ধৃতদের থেকে বাজেয়াপ্ত হওয়া মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ এবং অন্যান্য বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম খতিয়ে দেখছে।
উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগামে নিরীহ পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে। ২৬ জনের মৃত্যু হয় জঙ্গিদের গুলিতে। তাঁদের মধ্যে একজন বিদেশিও রয়েছেন। তারপর থেকেই উপত্যকায় চিরুনিতল্লাশি শুরু হয়েছে। এই হামলার দায় পাকিস্তানের উপর চাপিয়েছে ভারত। ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর মাধ্যমে পাকিস্তানের একাধিক জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করে দিয়েছে ভারতীয় সেনা। গত ১০ মে ভারত এবং পাকিস্তান সংঘর্ষবিরতিতে রাজি হয়েছে।