জম্মু ও কাশ্মীরের সোপিয়ান জেলায় ভারতীয় সেনাবাহিনী ও নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে ৩ জন কট্টরপন্থী জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে বলে খবর মিলেছে। পুলিশ জানিয়েছে, কাশ্মীর উপত্যকার দক্ষিণে সোপিয়ান জেলার কেল্লার এলাকায় জঙ্গিদের লুকিয়ে থাকার খবর পেয়ে গোটা এলাকা ঘিরে ফেলেছিল নিরাপত্তা বাহিনী। তল্লাশির সময় জঙ্গিরা প্রথম গুলি চালায় এবং এরপরেই শুরু হয় গুলির লড়াই। এই লড়াইয়ে ৩ জঙ্গিকে নিকেশ করা সম্ভব হয়েছে। প্রায় ঘণ্টা দুয়েক ধরে এই লড়াই চলে এবং শেষ পর্যন্ত ৩ জঙ্গিকে নিকেশ করা সম্ভব হয়। সোপিয়ানের ওই সন্ত্রাসবাদীরা পাক জঙ্গি গোষ্ঠী লস্কর-ই-তৈবার সঙ্গে জড়িত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এমন এক সময়ে এই ঘটনা ঘটেছে যখন ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ বিরতির পরবর্তী পরিস্থিতিতে এখনও আলাপ আলোচনা চলছে সরকারি স্তরে। বিশেষ করে গত কয়েক দিনে পাকিস্তানের তরফে গোলাবর্ষণ ও ড্রোন হামলার পর ভারতীয় বাহিনীও পাল্টা প্রত্যাঘাত হেনেছে। নেওয়া হয়েছে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা। জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ফের শুরু হয়েছে অভিযান, যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন কেল্লার’।
জানা গিয়েছে, সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়েছিল সোপিয়ানের পাশের কুলগাম জেলায়। সেখান থেকে জঙ্গিরা সরে এসে সোপিয়ানে আশ্রয় নেয়। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে রাষ্ট্রীয় রাইফেলস ইউনিটের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী একটি সার্চ অ্যান্ড ডেস্ট্রয় অপারেশন শুরু করে। ভারতীয় সেনাবাহিনী তাদের সরকারি এক্স হ্যান্ডেলে জানানো হয়েছে, ‘অপারেশন কিলার-এ ১৩ মে রাষ্ট্রীয় রাইফেলস ইউনিটের নির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পিয়ান জেলার শোয়েকাল কেলার এলাকায় সন্ত্রাসবাদীদের উপস্থিতির খবর পাওয়া যায়। সঙ্গে সঙ্গে ভারতীয় সেনা তল্লাশি অভিযান শুরু করে। অভিযানের সময় জঙ্গিরা গুলিবৃষ্টি করতে থাকে ছোড়ে। পাল্টা সংঘর্ষে ৩ কট্টর জঙ্গি নিহত হয়। অভিযান এখনও চলছে।’
পহেলগামে জঙ্গিদের হত্যালীলার জেরে ভারত ৭ মে ‘অপারেশন সিঁদুর’ অভিযান শুরু করে, যার মাধ্যমে পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ৯টি জঙ্গি ঘাঁটিকে ধ্বংস করা হয়। বর্তমানে সংঘর্ষ ও অভিযান সম্পর্কে ভারতীয় সেনাবাহিনী স্পষ্ট জানিয়েছে যে, দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কঠোর অবস্থান নেওয়া হবে এবং যে কোনও মূল্যে জঙ্গি কার্যকলাপ নির্মূল করতে ভারত বদ্ধপরিকর। সোমবার রাত ৮টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী স্পষ্ট জানিয়েছেন ‘অপারেশন সিঁদুর’ বন্ধ হয়নি। তা স্থগিত হয়েছে মাত্র। পাকিস্তানের প্রতিটি পদক্ষেপের দিকে নজর রাখা হচ্ছে। ভারতের তিন বাহিনীও প্রস্তুত রয়েছে। দরকার পড়লেই ফের জবাব দেওয়া হবে।
