কলকাতা হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরেও কেন এখনও ১০০ দিনের কাজের প্রকল্প পশ্চিমবঙ্গে আরম্ভ হচ্ছে না, তৃণমূলের প্রশ্ন তো রয়েছে। সেই সঙ্গে তৃণমূলের অভিযোগ, সংসদে দাঁড়িয়ে মিথ্যে বক্তৃতা দিচ্ছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা। গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক গত মঙ্গলবার লোকসভায় লিখিতভাবে জানিয়েছে, ২০২২ সালের ৯ মার্চ থেকে পশ্চিমবঙ্গে মনরেগার কাজ বন্ধ। পাশাপাশি বকেয়ার পরিমাণ ৩ হাজার ৮২ কোটি টাকা। যদিও তৃণমূলের দাবি, বকেয়া ৫২ হাজার কোটি টাকা।
এই সপ্তাহে লাগাতার সংসদে বাংলায় বকেয়ার দাবিতে সরব হওয়ার পর এবার খোদ গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানের সঙ্গে মুখোমুখি বসতে চাইছেন তৃণমূলের ১০ সাংসদ। জলজীবন মিশনেও বকেয়া মেটানোর দাবিতে জলশক্তিমন্ত্রী সি আর পাতিলের সঙ্গেও সংসদ চলাকালীন বসতে চাইছেন তাঁরা। যে সমস্ত মন্ত্রকের কাছ থেকে বকেয়া আদায় করতে হবে সেই সব মন্ত্রীদের মুখোমুখি বসে দাবি আদায়ে চাপ দেওয়া হবে, তাই দলের পক্ষ থেকে মন্ত্রীদের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় চাওয়া হয়েছে।
Advertisement
লোকসভায় তৃণমূলের মুখ্য সচেতক কাকলি ঘোষ দস্তিদার জানিয়েছেন, গত ৩ বছর ধরে রাজ্যের ৫৯ লক্ষ গরিবের কাজ কেড়ে নিয়েছে মোদী সরকার, সেই হিসেবে কষলে বকেয়া ৫২ হাজার কোটি টাকা হয়। তৃণমূলের প্রশ্ন, আদালতের নির্দেশের পরেও কেন এই টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্র? উত্তর একটাই, বিজেপি বাংলা বিরোধী। মনরেগার বিষয়ে রাজ্যসভাতেও সরকারকে চেপে ধরতে তৈরি তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। শুক্রবার তাঁর মৌখিক প্রশ্ন তালিকাবদ্ধ ছিল নয় নম্বরে কিন্তু প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রথম আটটিতেই সময় শেষ করে দেওয়া হয়।
Advertisement
ইচ্ছাকৃত ভাবেই এমন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সাংসদ ডেরেক। তৃণমূল সাংসদরা অভিযোগ করেছেন, শিবরাজ সিং চৌহান মনরেগা ইস্যুতে তৃণমূলের মুখোমুখি হতে ভয় পাচ্ছেন। সেই কারণেই আমাদের প্রশ্নগুলি যাতে না আসে তার জন্য অহেতুক আগের সাংসদদের প্রশ্নগুলিতে অনেক সময় নিয়ে জবাব দিচ্ছিলেন। তবে এভাবে আমাদের প্রশ্ন এড়াতে পারবে না বলেও বার্তা দিয়ে তৃণমূল সাংসদরা বলেছেন, এবার মুখোমুখি সাক্ষাৎ করব, দেখি কী করে মন্ত্রীমশাই আমাদের এড়ান।
বাংলায় বিনিয়োগ ইস্যুতেও কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে তৃণমূল। এক বিলের জবাবি ভাষণে সুযোগ পেয়ে তৃণমূল সরকারের সমালোচনা করেছিলেন অর্থমন্ত্রী। ‘বিভিন্ন কোম্পানি বাংলা ছেড়ে চলে গিয়েছে’ বলেই ছিল তাঁর মন্তব্য। তারই প্রতিবাদে সংসদ বিভ্রান্ত করার অভিযোগে রাজ্যসভার চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে তৃণমূল।
একইভাবে সুযোগ পেয়ে রাজ্যসভায় দলের মুখ্য সচেতক নাদিমুল হক বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গে প্রতি বছর গড়ে সাড়ে ৭ হাজার নতুন কোম্পানি নথিভুক্ত হচ্ছে। দাবির স্বপক্ষে সংসদে দেওয়া মোদী সরকারের গত ১১ আগস্টের তথ্য অস্ত্র করেছে তৃণমূল। যেখানে সরকারই লিখিতভাবে জানিয়েছিল, গত ৫ বছরে পশ্চিমবঙ্গে ৪৪ হাজার ৪০টি কোম্পানি অন্তর্ভূক্ত হয়েছে এবং নিজেদের অফিস সরিয়ে নিয়েছে ১ হাজার ৭৪২টি কোম্পানি। বাংলায় নথিভূক্ত কোম্পানি রয়েছে ২ লক্ষ ৫০ হাজার ৩৪৩। তাহলে কীসের ভিত্তিতে বাংলার বদনাম, এই নিয়ে কেন্দ্রে সরব তৃণমূল।
Advertisement



