বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অশান্তিকে কেন্দ্র করে পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক প্ররোচনার অভিযোগ তুলে বিজেপির আইটি সেলের প্রধান ও বঙ্গ বিজেপির সহ-পর্যবেক্ষক অমিত মালবীয়র বিরুদ্ধে পুলিশি পদক্ষেপের দাবি তুলল তৃণমূল কংগ্রেস। দলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের অভিযোগ, বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া হিংসার ভিডিও সমাজমধ্যমে ছড়িয়ে বাংলায় অশান্তির পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে।
ইনকিলাব মঞ্চের নেতা শরীফ ওসমান হাদির মৃত্যুর পর নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। ইউনূস প্রশাসনের আমলে চরম অরাজকতা চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার রাতে হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই ঢাকা, চট্টগ্রাম-সহ বিভিন্ন এলাকায় শোকমিছিল বের হয়। একাধিক উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়ারাও পথে নামেন। শাহবাগ-সহ নানা এলাকায় অবস্থান বিক্ষোভ শুরু হয়। রাত গভীর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি আরও হিংসাত্মক হয়ে ওঠে বলে অভিযোগ। মৌলবাদী বিক্ষোভকারীরা সংবাদমাধ্যম ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানে হামলা চালায়। ‘প্রথম আলো’-র ও ‘ডেইলি স্টার’ সংবাদপত্রের দপ্তরে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। ঢাকার সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ‘ছায়ানট’-এও চালানো হয় ধ্বংসযজ্ঞ।
Advertisement
এই ঘটনার ভিডিও সমাজমাধ্যমে শেয়ার করে অমিত মালবীয় দাবি করেন, ‘বাংলাদেশের এই ঘটনা আমাদের জন্য হুঁশিয়ারির সমান। এটাই হয় যখন মৌলবাদ এবং উগ্রপন্থাকে প্রশ্রয় এবং উৎসাহ দেওয়া হয়। ঠিক এই কারণেই বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাসন উদ্বেগজনক। বহু বছরের রাজনৈতিক আশ্রয়, স্বাধীন সংস্থাগুলির অবক্ষয় এবং ক্ষেত্রবিশেষ নীরবতা বাংলাকে বিপজ্জনক পথে এগিয়ে দিচ্ছে।’ মালবীয়র দাবি, ‘২০২৬-এর পরও যদি বাংলায় মমতার শাসন চলে তাহলে বাংলার পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাবে।’
এই মন্তব্যকে ‘উসকানিমূলক’ বলে কড়া ভাষায় নিন্দা করেছে তৃণমূল। কুণাল ঘোষ বলেন, ‘বিজেপির অমিত মালবীয় বাংলাদেশের ঘটনার সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গকে তুলনা করে যে পোস্ট করেছেন, তার তীব্র নিন্দা করছি। এটা শুধু এই রাজ্যকে অপমান নয়, এটা প্ররোচনা ছড়ানো। পুলিশের উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’
একই সঙ্গে বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে তৃণমূলের অবস্থান স্পষ্ট করে কুণাল জানান, ‘বাংলাদেশ থেকে উদ্বেগজনক খবর আসছে। কিছু অমানবিক ভিডিও ছড়াচ্ছে। সত্য-মিথ্যা বোঝা কঠিন। যেহেতু এটি আন্তর্জাতিক বিষয়, তাই কেন্দ্রীয় সরকার অবিলম্বে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিক, অবস্থান জানাক। বাংলাদেশে থাকা সংখ্যালঘু, ভারতীয় ও সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের যথাযথ নিরাপত্তা বাঞ্ছনীয়।’
Advertisement
Advertisement



