লালকেল্লার ঘটনার পিছনে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রশ্রয় রয়েছে: অধীর চৌধুরী

সাংবাদিক বৈঠকে এদিন অধীর চৌধুরি বলেন, “দিল্লির কৃষক আন্দোলন শুধু ভারতবর্ষের নয়, সারা পৃথিবীতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের একটা নিদর্শন।

Written by SNS Delhi | January 28, 2021 7:09 pm

অধীররঞ্জন চৌধুরী (File Photo: IANS)

প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন লালকেল্লার মধ্যে ট্রাক্টরের প্রবেশ বা লালকেল্লার উপরে চেপে পতাকা লাগিয়ে সােশ্যাল মিডিয়া করার পিছনে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রশ্রয় রয়েছে। কারণ কৃষক আন্দোলনকে বিপথে পরিচালিত করতে চায় কেন্দ্রীয় সরকার ও।

বুধবার মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেস কার্যালয়ে বসে লালকেল্লার ঘটনা নিয়ে নিজের মতামত দিতে গিয়ে একথাই জানান লােকসভার পরিষদীয় দলনেতা সাংসদ অধীর চৌধুরি। সেই সঙ্গে তিনি প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন দিল্লির লালকেল্লায় ভারতের পতাকার বাইরে ইচ্ছেমতাে পতাকা ওড়ানাের তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ করেন।

সাংবাদিক বৈঠকে এদিন অধীর চৌধুরি বলেন, “দিল্লির কৃষক আন্দোলন শুধু ভারতবর্ষের নয়, সারা পৃথিবীতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের একটা নিদর্শন। পৃথিবীতে এতদিন ধরে শান্তিপূর্ণ উপায়ে এত বড় জমায়েত কোনও আন্দোলন করেছে বলে আমাদের কাছে জানা নেই। ভারত সরকারের মতামত এবং সম্মিত নিয়েই কৃষকরা প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন ট্রাক্টর র‍্যালি বের করেছিলেন।

ভারত সরকার সেই র্যালির রুট ঠিক করে দিয়েছিল। সেই রুট ভেঙে কিছু আন্দোলনকারী গােটা আন্দোলনকে বিপথে চালনা করতে পারে, এমন কোনও খবর ভারত সরকারের গুণ্ডর বাহিনীর কাছে ছিল না। প্রশ্ন এখানেই, যখন তােমরা জানতে পারছ, পাকিস্তানের বিভিন্ন শক্তি এই আন্দোলনকে বিপথে চালনা এবং উত্তেজনা তৈরির জন্য চেষ্টা করছে, তখন তােমাদের গুপ্তচর সংস্থা জানাচ্ছে, এটা জানা সম্ভব হল না ভারতবর্ষের কি হচ্ছে না।’

মধ্যে এই আন্দোলনকে বিপথে চালনার জন্য ষড়যন্ত্র হচ্ছে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরি এদিন আরও বলেন, ‘প্রজাতন্ত্রের দিন সকালে লালল্লোয় যাওয়ার কথা। যখন সােশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত হচ্ছে, যারা যাবে তার নিজেরাই বক্তব্য রাখছে। লালকেল্লার উপরে চড়েও তারা সােশ্যালমিডিয়া, ফেসবুক করছে। সবকিছু হচ্ছে, কিন্তু ভারতবর্ষের এবং দিল্লির গুপ্তচররা জানতে পারছে না। তাহলে এটা কত বড় ব্যর্থতা দিল্লির প্রশাসনের, কেন্দ্রীয় সরকারের।

অধীরবাবু বলেন, “ছাব্বিশে জানুয়ারি হচ্ছে দিল্লির বুকে সবচেয়ে বেশি আইনশৃঙ্খলার বন্দোবস্ত থাকে। তা যাতে এক চুলও বিঘ্নিত না হয়, তা দেখার জন্য সবচেয়ে বেশি নিরাপত্তা  ব্যবস্থা দেওয়া হয়। এত কিছুর মধ্যেও দিনের আলােয় ট্রাক্টর চলে যাচ্ছে লালকেল্লায়। কিন্তু সেখানে পুলিশ নেই। বাধা দেওয়ার কেউ নেই। এর মানে কী।

মানে একটাই, আমার মনে হয় এই সমস্ত কিছুর পিছনে কেন্দ্রীয় সরকারের নিজস্ব প্রশ্রয় আছে। কারণ কৃষক আন্দোলনকে সরকারও চায় বিপথে চালিত করতে। শান্তিপূর্ণ আন্দোলন হলে, ভারত সরকারের জবাব দেওয়ার কিছু থাকবে না।

আজ ভারত সরকার বলবে, আমরা আগেই বলেছিলাম, খালিস্তানি ঢুকেছে। দেখে খালিস্তানি চলে এসেছে।’ ক্ষোভ প্রকাশকরে অধীর চৌধুরি আরও বলেন, ‘তােমরা যখন বুঝলে, খালিস্তানিরা আসতে পারে, পাকিস্তানি বিভিন্ন শক্তি অশান্তি ছড়ানাের চেষ্টা করছে, যখন তােমরা সকাল থেকে দেখতে পেলে পাঞ্জাব্বেই কিছু ব্যক্তি তারা সােশ্যাল মিডিয়ায় যাওয়ার জন্য বলে দিচ্ছে।

লালকেল্লায় দাঁড়িয়ে ফেসবুক হচ্ছে, তখন ভারতবর্ষের নিরাপত্তা ব্যবস্থা, প্রশাসন নিয়ে প্রশ্ন তাে জাগবেই। তাই প্রশ্ন, এটা কি পরিকল্পিতভাবে প্রশ্রয় দিয়ে একটা ঘটনা ঘটানাের চেষ্টা হয়েছিল কি? এই চেষ্টার পিছনে সরকারি কোনও সংস্থার মদত আছে কি?

কৃষক আন্দোলনকে কালিমালিপ্ত করার, এই আন্দোলনের ছবিকে মানুষের কাছে বিকৃত করার কোনও প্রচেষ্টা আছে কি? এটা আজকে ভেবে দেখাঁ দরকার। তবে কোনও কারণেই কংগ্রেস দল লালকেল্লা উঠে প্রজাতন্ত্র দিবসের দিনে ভারতবর্ষের পতাকা যেখানে উড়বে, আর কোনও পতাকা সেখানে ওড়ার কথা না, যেখানে তারা তাদের ইচ্ছেমতাে পতাকা ওড়াচ্ছে, এ ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক, নিন্দনীয় এবং প্রতিবাদযােগ্য। পাশাপাশি, ভারত সরকার এবং দিল্লি প্রশাসনের গলদ এবং ব্যর্থতা এই ঘটনায় স্পষ্ট প্রতীয়মান হচ্ছে।