বিজেপি’র মণিপুর সঙ্কট কাটল, ইস্তফা দেওয়া মন্ত্রীদের ফেরালেন মুখ্যমন্ত্রী

৬০ আসনের মণিপুর বিধানসভায় বিজেপি-এনপিপি মিলিয়ে মোট সংখ্যা ২৯। সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকলেও বিজেপি’র বীরেন সিংয়ের নেতৃত্বেই সরকার চলছিল।

Written by SNS Imphal | July 8, 2020 4:30 pm

মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং। (Photo: IANS)

হঠাৎ করেই গত মাসে আন্দোলিত হয়ে গিয়েছিল উত্তর-পূর্বের রাজনীতি। বিজেপি শাসিত মণিপুরে হঠাৎই সরকার পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হওয়ায় হইচই পড়ে গিয়েছিল জাতীয় রাজনীতিতেও।

কিন্তু গেরুয়া শিবিরের তৎপরতা, এনসিপি নেতা কনরাড সাংমার দিল্লি পর্যন্ত ছোটাছুটি অমিত শাহ- জেপি নাড্ডাদের সঙ্গে বৈঠক, অসমের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার আসরে নামা— এত কিছুর পরে জট কাটলো মণিপুরের। বেড়িয়ে যাওয়া মন্ত্রীদেরও রাগ গলে জল। তাদের নিজেদের দফতরে পুর্নবহাল করলেন মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং।

উপমুখ্যমন্ত্রী ওয়াই জয়কুমার সিংও ইস্তফা দিয়েছিলেন। তাঁকে ফের উপমুখ্যমন্ত্রী পদে ফেরানো হয়েছে। আগে তিনি অর্থ দফতরেরও দায়িত্বে ছিলেন। তাঁকে সেই অর্থ দফতেরর পাশাপাশি বিজ্ঞান-প্রযুক্তি দফতরের দায়িত্বও দেওয়া হয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী নিজের হাতে বেশ কিছু দফতর রেখেছেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য পর্যটন, অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ মন্ত্রকও রয়েছে। তাছাড়া লেটপাও হাওকি, এন কায়িসিদেরও দফতরে পুর্নবহাল করা হয়েছে। ৬০ আসনের মণিপুর বিধানসভায় বিজেপি-এনপিপি মিলিয়ে মোট সংখ্যা ২৯। সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকলেও বিজেপি’র বীরেন সিংয়ের নেতৃত্বেই সরকার চলছিল। কংগ্রেসের অভিযোগ ছিল গায়ের জোরে টাকার জোরে বিজেপি ক্ষমতা দখল করে রেখেছে।

১৭ জুন থেকে ইস্তফা পর্ব শুরু হয়। বিধায়কদের পর তিন মন্ত্রীও ইস্তফা দিয়ে দেন। বিজেপি’র তিন বিধায়ক যোগ দেন কংগ্রেসে। এরপর কংগ্রেসের তরফে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওকরাম ইবোবি সিং রাজ্যপালের কাছে গিয়ে সরকার গড়ার দাবি জানান। কাকতালীয়ভাবে তারপরেই দুর্নীতি মামলায় তাঁকে জেরা করতে সিবিআই পৌঁছে যায় মণিপুরে। কংগ্রেস অভিযোগ করে, সরকার বাঁচাতে তদন্ত সংস্থাকে লেলিয়ে দিয়েছে কেন্দ্র।

এহেন টানটান পরিস্থিতির মধ্যেই অসমের স্বাস্থ্যমন্ত্রী তথা উত্তরপূর্বের অন্যতম ক্ষমতাশালী বিজেপি নেতা হিমন্ত বিশ্বশর্মা মন্তব্য করেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। মণিপুরে পৌছন কংগ্রেসের দুই শীর্ষ নেতা গৌরব গগৈ ও অজয় মাকেনকে কোয়ারান্টাইন করে দেয় স্বাস্থ্য দফতর। কংগ্রেস অভিযোগ করে জবরদস্তি বন্দি করে রাখা হয়েছে তাদের নেতাদের। যাতে তারা দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলতে না পারেন।

ইস্তফা পর্বের পর যখন বিজেপি এনপিপি জোটের বিধায়ক সংখ্যা এসে দাঁড়ায় ১৮টি’তে তখনই দেখা যায় রাজ্যসভার ভোটে বিজেপি’র প্রার্থী ২৭ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। সে সময় অনেকেই আন্দাজ করেছিলেন বিজেপি নির্ঘাৎ খেলা ঘোরাতে শুরু করেছে। তারপরেই দেখা যায় দিল্লি দরবারে বিদ্রোহীদের নিয়ে পৌঁছে গিয়েছেন সাংমা। অবশেষে সঙ্কট কাটল মণিপুরে।