• facebook
  • twitter
Saturday, 17 May, 2025

কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার ঘটনায় বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড়, ভারতের পাশে থাকার আশ্বাস আমেরিকার

দিল্লিতে নিযুক্ত চিনা রাষ্ট্রদূত শু ফেইহং এই বর্বরোচিত জঙ্গি হামলার নিন্দা করে সমাজ মাধ্যমে লেখেন, ‘পহেলগামের ঘটনায় আমরা স্তম্ভিত।

ফাইল চিত্র

পহেলগামে জঙ্গিদের চালানো হত্যালীলার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাল একাধিক দেশ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, ইটালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি, ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূস-সহ বিশ্বের তাবড় রাষ্ট্রনেতারা এই হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ফোনে কথা বলেন ট্রাম্প। এই সন্ত্রাসবাদী হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে ভারতের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। এই ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছে পাকিস্তান। আর এর পরেই শোকবার্তা জানায় চিন। অন্যদিকে এই মুহূর্তে সস্ত্রীক ভারত সফরে রয়েছেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স। তিনিও এই নারকীয় ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।

কাশ্মীরে হামলার খবর পেয়েই আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার কাছ থেকে বিস্তারিত খোঁজখবর নেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ফোন করেন তিনি।এক্স হ্যান্ডলে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল সে কথা জানিয়েছেন।রণধীরের লেখা এক্স হ্যান্ডলের পোস্ট অনুযায়ী, ট্রাম্প জানিয়েছেন, ভারত ও আমেরিকা যৌথ ভাবে জঙ্গিহানার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবে। ফোনে নিহত ও আহতদের পরিবারের প্রতি শোক প্রকাশ করেছেন ট্রাম্প। সমাজ মাধ্যমে একটি পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, ‘কাশ্মীর থেকে অশান্তির খবর আসছে। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের পাশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দৃঢ়তার সঙ্গে রয়েছে। আমরা নিহতদের আত্মার শান্তি ও আহতদের আরোগ্য কামনা করি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং ভারতের জনগণের প্রতি আমাদের পূর্ণ সমর্থন এবং গভীর সহানুভূতি রয়েছে। আমরা আপনাদের সকলের পাশে আছি।’ 
 
ইজরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, তিনি এই বর্বর সন্ত্রাসবাদী হামলায় গভীরভাবে শোকাহত। তিনি পোস্টে লেথেন, ‘আমাদের চিন্তাভাবনা এবং প্রার্থনা বিঘ্নিত। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ইজরায়েল ভারতের পাশে আছে।’ ইটালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি জানিয়েছেন, তিনি পহেলগামে সন্ত্রাসবাদী হামলায় গভীরভাবে শোকাহত এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার, সরকার এবং সমগ্র জনগণের সঙ্গে একাত্মতা ও সমবেদনা অনুভব করছেন। 
 
রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এবং প্রধানমন্ত্রী মোদীর কাছে পাঠানো হক বার্তায় পুতিন এই হামলার জন্য শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, এই নৃশংস অপরাধের কোনও যু্ক্তি নেই। অপরাধীদের উপযুক্ত শাস্তির মুখোমুখি হতেই হবে। এই মর্মান্তিক পরিণতির জন্য তিনি আন্তরিক সমবেদনা প্রকাশ করেছেন।পুতিন সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ভারতের সঙ্গে সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।  
 
এদিকে তাৎপর্যপূর্ণভাবে পাকিস্তান শোকপ্রকাশ করার পরই সমবেদনা জানিয়েছে চিন। দিল্লিতে নিযুক্ত চিনা রাষ্ট্রদূত শু ফেইহং এই বর্বরোচিত জঙ্গি হামলার নিন্দা করে সমাজ মাধ্যমে লেখেন, ‘পহেলগামের ঘটনায় আমরা স্তম্ভিত। নিহতদের পরিবারের প্রতি আমাদের সমবেদনা রয়েছে। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি।’
 
কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর হামলার ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে এক বার্তায় শোক প্রকাশ করেন। বাংলাদেশ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক লড়াইয়ে তাঁর দ্ব্যর্থহীন প্রতিশ্রুতিও আবার দাবি করেছেন। বুধবার এই বার্তা সম্পর্কে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম। এক ফেসবুক পোস্টে এই তথ্য জানান তিনি। এক্স বার্তায় নরেন্দ্র মোদীকে ইউনূস বলেন, ‘কাশ্মীরের পহেলগামে সংঘটিত সন্ত্রাসী হামলার ফলে প্রাণহানির জন্য আমার গভীর সমবেদনা গ্রহণ করুন। আমরা এই জঘন্য কাজের তীব্র নিন্দা জানাই। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের দৃঢ় অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করছি।’  
 
পহেলগামে জঙ্গি হামলার একদিন পর বুধবার প্রতিক্রিয়া জানান পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী। সেদেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী খাজা আসিফ এদিন বলেন, ‘এই ঘটনায় আমাদের কিছু করার নেই।’ জঙ্গি হামলার সঙ্গে পাকিস্তানের কোনও যোগ নেই তা জোরের সঙ্গে  বোঝাতে গিয়ে আসিফ জোর গলায় বলেন, ‘আমাদের ঘাড়ে দোষ চাপাবেন না। এর পিছনে আমাদের কোনও হাত নেই।’
যদিও পাক মন্ত্রীর এই দাবিতে আশ্বস্ত হয়নি দিল্লি। কারণ ইতিমধ্যেই জানা গিয়েছে যে, হামলাকারীদের দু’জন পাক নাগরিক। লস্করের ছায়া সংগঠন টিআরএফ এই হামলার দায় স্বীকার করেছে।