• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

ভারতকে কি বাড়তি ১০ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে?

দক্ষিণ কোরিয়া, জাপানে ট্রাম্পের ২৫ শতাংশ শুল্কের চিঠি যেতেই শুরু জল্পনা

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

বুধবার শেষ হয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ৯০ দিনের সময়সীমা। এই সময় পর্যন্ত ‘পারস্পরিক শুল্ক’ স্থগিত রেখেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। কিন্তু সেই সময় শেষ হওয়ার আগেই সোমবার ট্রাম্প জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই এশিয়ার দুই দেশ জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়ার পণ্যের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। এই ২৫ শতাংশ ছাড়াও এই দুই দেশের উপর ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়াম এবং মোটরগাড়ি ও তার যন্ত্রাংশের উপর আরও বাড়তি শুল্ক চাপানো হতে পারে বলে আভাস দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ট্রাম্প তাঁর সমাজমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে জানিয়েছেন, জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়ার পাশাপাশি মালয়েশিয়া, মায়ানমার, কাজাখাস্তান এবং ভিয়েতনামকেও এই সংক্রান্ত চিঠি পাঠিয়েছেন। ট্রাম্পের এই ঘোষণার ফলে নতুন করে জল্পনা ছড়িয়েছে ভারতের উপর মার্কিন বাণিজ্যনীতি নিয়ে। তাহলে কি ট্রাম্পের পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, ভারতের উপর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক ধার্য হতে চলেছে?

প্রসঙ্গত, গত শনিবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ট্রাম্প জানান, ১২টি দেশকে ইতিমধ্যেই চিঠি পাঠানো হয়েছে। সেই চিঠিতে জানানো হয়েছে, কোন দেশের জন্য কত পরিমাণ আমদানি শুল্ক ধার্য করেছে ওয়াশিংটন। যদিও প্রথম ধাপে মোট ১৫টি দেশকে চিঠি দেওয়া হতে পারে বলে সোমবার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন ট্রাম্প।

Advertisement

গত ২ এপ্রিল আমেরিকার বাজারে বিভিন্ন দেশের পণ্যের উপর ‘পারস্পরিক শুল্কে’র কথা ঘোষণা করেছিলেন ট্রাম্প। তালিকায় চিন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পাশাপাশি ভারত বা ইজরায়েলের মতো আমেরিকার ‘বন্ধু রাষ্ট্র’ও ছিল। ভারতের উপর ২৬ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিল আমেরিকা।

Advertisement

এ ছাড়া, ইউরোপীয় ইউনিয়নের উপর ২০ শতাংশ, ভিয়েতনাম ৪৬ শতাংশ, জাপান ২৪ শতাংশ, দক্ষিণ কোরিয়া ২৫ শতাংশ, ব্রিটেন ১০ শতাংশ, তাইল্যান্ড ৩৬ শতাংশ এবং সুইৎজারল্যান্ডের উপর ৩১ শতাংশ পারস্পরিক শুল্ক চাপানো হয়েছিল। কিন্তু নতুন শুল্কনীতি কার্যকর হওয়ার আগে ৯০ দিনের স্থগিতাদেশ ঘোষণা করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তবে ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামজাত পণ্যের উপর বাড়তি ২৫ শতাংশ শুল্ক বহাল রাখা হয়।

ব্রিকস সম্মেলনের সময় ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, মার্কিন বিরোধিতা করলে ব্রিকসের সদস্য দেশগুলির উপর বাড়তি ১০ শতাংশ শুল্ক চাপানো হবে। আর রাশিয়া, চিন, ব্রাজিলের পাশাপাশি ভারতও ‘ব্রিকস’ জোটের সদস্য। তাই স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে ভারতের উপরেও এই বাড়তি শুল্ক চাপানো হবে কিনা তা নিয়ে। ওয়াশিংটনের সঙ্গে ইতিমধ্যেই বাণিজ্যচুক্তি সেরে ফেলা চিন ছাড় পেলেও ভারতের ক্ষেত্রে কী হবে, তা এখনও অনিশ্চিত। কারণ সময়সীমা শেষের দু’দিন আগেও বাণিজ্যচুক্তির খসড়া নিয়ে ভারত-আমেরিকা ঐক্যমত হয়নি। এ ব্যাপারে সোমবার রাতে হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব ক্যারোলিন লেভিট বলেন, ‘অনেকগুলি দেশের সঙ্গেই বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে আলোচনা চলছে। আমরা আশাবাদী, শেষ পর্যন্ত তা ফলপ্রসূ হবে।’

আবার মার্কিন বাণিজ্যসচিব হাওয়ার্ড লুটনিকও সোমবার জানিয়েছেন, বুধবার স্থগিতাদেশের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেই বর্ধিত শুল্ক কার্যকর হচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘১ আগস্ট থেকে নতুন হারে শুল্ক কার্যকর হবে। তবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এখন থেকেই শুল্ক হার এবং চুক্তি চূড়ান্ত করবেন।’

পারস্পরিক শুল্কনীতি ৯০ দিন স্থগিত হয়ে যাওয়ার পর সেই সময়ের মধ্যে ট্রাম্প এখনও পর্যন্ত চিন-সহ কয়েকটি দেশের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি চূড়ান্ত করেছেন। তবে এশিয়া ও ইউরোপের বড় অংশই এখনও এই চুক্তির বাইরে রয়েছে। ভারতও রয়েছে সেই তালিকায়।

Advertisement