নেপাল থেকে গ্রেপ্তার করা হল ভারতের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ অস্ত্র সরবরাহকারী সেলিম শেখ ওরফে সেলিম পিস্তলকে। দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল এবং নেপাল পুলিশের যৌথ অভিযানে শুক্রবার তাঁকে পাকড়াও করা হয়। দিল্লির জাফরাবাদ এলাকার বাসিন্দা সেলিম দীর্ঘদিন ধরেই ভারতের বিভিন্ন গ্যাংস্টারদের আধুনিক ও স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্র সরবরাহ করতেন বলে দাবি তদন্তকারীদের।
পুলিশ সূত্রে খবর, সেলিমের পাকিস্তানে যাতায়াত ছিল নিয়মিত। নেপাল হয়ে ভারতে প্রবেশ করতেন এবং ফের পাকিস্তানে ফিরে যেতেন তিনি। পাকিস্তান থেকে ভারতে অবৈধ অস্ত্র পৌঁছে দেওয়ার পেছনে সেলিমের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। তদন্তে উঠে এসেছে, পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর সঙ্গেও ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল তাঁর। এছাড়াও মুম্বইয়ের কুখ্যাত গ্যাংস্টার দাউদ ইব্রাহিমের সঙ্গেও সেলিমের যোগসূত্র রয়েছে বলে জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা।
Advertisement
সেলিমের নাম উঠে এসেছে একাধিক বড় অপরাধমূলক ঘটনায়। লরেন্স বিষ্ণোই ও হাশিম বাবা গ্যাং সহ দেশের বিভিন্ন কুখ্যাত গ্যাংস্টারের কাছে অস্ত্র সরবরাহ করতেন তিনি। এমনকি, কংগ্রেস নেতা তথা পাঞ্জাবি গায়ক সিধু মুসেওয়ালার হত্যাকাণ্ডেও তাঁর নাম জড়িয়েছে। পুলিশের অনুমান, ওই খুনে যে অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার হয়েছিল, তা সরবরাহ করেছিল সেলিমের চক্রই।
Advertisement
২০১৮ সালে দিল্লি পুলিশ তাঁকে একবার গ্রেপ্তার করেছিল। কিন্তু পরে বিদেশে পালিয়ে যান তিনি। সাম্প্রতিক গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, সেলিম নেপালে আত্মগোপন করে রয়েছেন। সেই সূত্রেই দিল্লি পুলিশের একটি দল নেপাল পুলিশের সহযোগিতায় অভিযান চালায়। শুক্রবার অবশেষে পুলিশের জালে ধরা পড়ে বহু কুকর্মে অভিযুক্ত এই অস্ত্র চোরাকারবারি।
অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করার পর শিক্ষাজীবন ছেড়ে দেন সেলিম। এরপর গাড়িচালক হিসেবে পেশাগত জীবন শুরু করলেও ২০০০ সাল নাগাদ অপরাধ জগতে পা রাখেন। প্রথমে মুকেশ গুপ্ত ওরফে কাকার সঙ্গে মিলে গাড়ি চুরি করতেন। এরপর ধীরে ধীরে ডাকাতি, খুন, তোলাবাজি-সহ একাধিক অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়েন তিনি। বাবা সিদ্দিকি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গেও তাঁর যোগের অভিযোগ রয়েছে।
বর্তমানে সেলিমকে ভারতে আনার প্রক্রিয়া চলছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসতে পারে বলে মনে করছে পুলিশ।
Advertisement



