চাল-ডাল-আলু-পেঁয়াজ আর অত্যাবশ্যকীয় পণ্য নয়

চাল, ডাল, আলু, পেঁয়াজ, তেলবীজ, ভােজ্য তেলের মতাে কৃষিপণ্যকে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের আওতা থেকে বাদ দেওয়া হল অত্যাবশ্যকীয় পণ্য সংশােধনী বিলে।

Written by SNS New Delhi | September 23, 2020 2:57 pm

প্রতিকি ছবি (Photo: IANS)

করােনা মহামারির ছায়ায় একের পর এক বিতর্কিত সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নিয়ে চলেছে নরেন্দ্র মােদি সরকার। বিতর্কিত কৃষি বিল নিয়ে বিরােধীদের প্রতিবাদ-বিক্ষোভ, ধর্নার মধ্যেই আরও একটি কৃষি সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ বিল বিনা বাধায় পাশ হয়ে গেল রাজ্যসভায়। 

এবার অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইনে সংশােধনী বিলটিও পাশ করিয়ে নিল কেন্দ্রীয় সরকার। বিলটি গত ১৫ সেপ্টেম্বর লােকসভায় পাশ হয়েছিল। মঙ্গলবার রাজ্যসভাতেও সেটি ধ্বনি ভােটে পাশ হয়ে গেল। চাল, ডাল, আলু, পেঁয়াজ, তেলবীজ, ভােজ্য তেলের মতাে কৃষিপণ্যকে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের আওতা থেকে বাদ দেওয়া হল এই বিলে। 

এরপর দরকার শুধু রাষ্ট্রপতির সই। তারপর এই বিল আইনে পরিণত হলে, এই সব কৃষিপণ্যের উপরে আর কোনও নিয়ন্ত্রণ থাকবে না সরকারের। এমনকি থাকবে না এইব কৃষিপণ্য মজুতের উর্ধ্বসীমাও। 

সরকারের দাবি, এর ফলে কৃষিক্ষেত্রে দেশি-বিদেশি বড় সংস্থার বিনিয়ােগের পরিবেশ তৈরি হবে। এই ক্ষেত্রে বিনিয়ােগে উৎসাহিত হবেন বিনিয়ােগকারী রা। 

প্রসঙ্গত, অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইন চালু হয়েছিল ১৯৫৫ সালে। ‘আত্মনির্ভর ভারত অভিযান’ প্রকল্পের ঘােষণা করার সময়ই এই আইন সংশােধনের কথা বলে কেন্দ্র। এ বিষয়ে গত ৫ জুন একটি অর্ডিন্যান্স জারি করেছিল কেন্দ্র। সেই অর্ডিন্যান্সই সংশােধনী বিল আকারে রাজ্যসভায় পাশ হল। 

তবে এইসব কৃষিপণ্যের উপর থেকে সরকারি নিয়ন্ত্রণ সম্পূর্ণভাবে তুলে দেওয়া হয়নি। একমাত্র দেশে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি হলে তবেই এইসব পণ্যের মজুত বা বিক্রির উপর নিয়ন্ত্রণ জারি করতে পারবে সরকার। এক্ষেত্রে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি বলতে বােঝানাে হয়েছে। মূল্যবৃদ্ধি, যুদ্ধ, দুর্ভিক্ষ, ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মতাে বিষয়কে। 

বিল নিয়ে কেন্দ্রীয় ক্রেতা সুরক্ষা, খাদ্য ও গণবণ্টন দফতরের প্রতিমন্ত্রী দানভে রাওসাহেব দাদারাও বলেন, ‘এই আইন বলবৎ হলে চাষিরা উৎপাদন, মজুত, পরিবহণ এবং বিক্রি সহ সমস্ত বিষয়ে স্বাধীনতা পাবেন। পাশাপাশি কৃষিক্ষেত্রে বিনিয়ােগের দরজা খুলে যাবে।’

সংশােধনীতে মজুতের উর্ধ্বসীমা তুলে নেওয়া প্রসঙ্গে মন্ত্রীর সাফাই, এর ফলে যত খুশি মজুত করা যাবে। ফলে চাষিদের ফসল নষ্ট বা কম দামে বিক্রি করতে হবে না। তাঁর আরও দাবি, এর ফলে কৃষক ও উপভােক্তা সকলেই লাভবান হবেন। সরকার পক্ষের বক্তব্য, এই আইন প্রণয়নের সময় দেশে প্রবল খাদ্য সঙ্কট ছিল। কিন্তু এখন দেশে খাদ্যশস্য উৎপাদন বেড়েছে। এখন খাদ্যশস্য রফতানি করেও উদ্বৃত্ত থেকে যায়। কখনও উৎপাদন বেশি হলে ক্ষতিগ্রস্ত হন চাষিরা। তাই এই আইনে বদল প্রয়ােজন ছিল।