লাদাখে বিক্ষোভ দমনে পুলিশের গুলিতে চারজন নিহত হওয়ার ঘটনায় বিজেপি সরকারকে তীব্র আক্রমণ শানালেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। মঙ্গলবার তিনি অভিযোগ করেন, মানুষের গণতান্ত্রিক দাবি রক্তপাত আর ভীতিপ্রদর্শনের মাধ্যমে দমন করা হচ্ছে। নিহতদের মধ্যে একজন প্রাক্তন সেনা জওয়ানও ছিলেন, যা নিয়ে বিশেষ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি।
রাহুল এক বার্তায় বলেন, ‘পিতা সেনা, পুত্রও সেনা— দেশের মাটির প্রতি দেশপ্রেমে ভরা যাঁদের রক্ত। অথচ বিজেপি সরকার গুলি চালিয়ে দেশের এক সাহসী সন্তানকে কেড়ে নিল, শুধু লাদাখ আর তার অধিকারের কথা বলার জন্য। আজ পিতার ক্ষতবিক্ষত চোখ কেবল একটাই প্রশ্ন করছে— দেশসেবার পুরস্কার কি এই?’
Advertisement
তিনি দাবি করেন, ‘লাদাখে যে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে, তার সুষ্ঠু বিচারবিভাগীয় তদন্ত হওয়া জরুরি। দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে হবে।’
Advertisement
প্রসঙ্গত, গত ২৪ সেপ্টেম্বর লেহ-তে রাজ্যের মর্যাদা এবং সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলের অন্তর্ভুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ শুরু হলে পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষে গুলি চালানো হয়। নিহত হন চারজন, আহত হন ৮০ জনেরও বেশি। এই ঘটনার পর লাদাখে কারফিউ জারি করা হয়েছে এবং ইন্টারনেট পরিষেবাও বন্ধ রাখা হয়েছে।
সরকারি সূত্রে দাবি, ‘অপশক্তি’ এবং পরিবেশ কর্মী সোনম ওয়াংচুককে ঘিরে এই অশান্তি উসকে উঠেছে। লাদাখের ডিরেক্টর জেনারেল অফ পুলিশ এস ডি সিং জামওয়াল বলেছেন, ‘পুলিশকে আত্মরক্ষার তাগিদে বাধ্য হয়ে গুলি চালাতে হয়েছে। পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারত। আমাদের জওয়ানদেরও তো প্রাণ আছে, তাঁদের মৃত্যু চাইবেন?’
অন্যদিকে, কংগ্রেস বারবার দাবি তুলছে, বিচারবিভাগীয় তদন্ত না হলে সত্যি সামনে আসবে না। লাদাখের কংগ্রেস নেতা নবাং রিগজিন জোরা গভর্নর কবিন্দ্র গুপ্তকে চিঠি লিখে বলেছেন, ‘ভারী হৃদয়ে ও গভীর দুঃখে আমি আপনাকে অনুরোধ করছি, ২৪ সেপ্টেম্বরের সেই দুঃখজনক ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্ত হোক।’
বর্তমানে গোটা লাদাখজুড়ে পরিস্থিতি উত্তেজনাপূর্ণ। সর্বত্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা আঁটোসাঁটো করা হয়েছে। আগামী দিনে কেন্দ্র সরকার ও লাদাখের প্রতিনিধিদের মধ্যে আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে মানুষের দাবি পূরণ না হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে বলেই রাজনৈতিক মহলের আশঙ্কা।
Advertisement



