এনসিপি নেতা বাবা সিদ্দিকি ও তাঁর পুত্র জিশানকে খতম করতে পারলেই মিলবে ১০ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা। এমনকি খুনিকে দেওয়া হবে বাড়ি ও গাড়ি। এমনই নির্দেশ দিয়েছিলেন গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোই। গত বছর মুম্বইয়ে সাড়া ফেলে দেওয়া এই হত্যাকাণ্ডে সম্প্রতি চার্জশিট আদালতে পেশ করেছে মুম্বই ক্রাইম ব্রাঞ্চ। সিদ্দিকি খুনে ধৃত মূল শুটারকে জেরা করে এমনই তথ্য উঠে এসেছে বলে দাবি পুলিশের। অভিযুক্ত শুটার শিবকুমার গৌতম জেরায় জানিয়েছেন, ১৯৯৩ সালে মুম্বই বিস্ফোরণ এবং দাউদ ইব্রাহিমের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার জন্যই খুন হতে হয়েছে বাবা সিদ্দিকিকে।
সূত্রের খবর মুম্বই পুলিশের চার্জশিটে শুটার শিবকুমারের এই স্বীকারোক্তিকে উল্লেখ করা হয়েছে। পুলিশ তদন্তে নেমে এক ফোন কলের রেকর্ডিং হাতে পেয়েছিলেন। যেখানে সিদ্দিকি হত্যাকান্ডে ফেরার অভিযুক্ত শুভম লঙ্করের সঙ্গে কথোপকথন প্রকাশ্যে আনা হয়েছিলো। যেখানে লাউডস্পিকারে দিয়ে বিষ্ণোইয়ের বার্তা শোনানো হয়েছিল তিন শুটারকেও। ফোনে হত্যাকারীদের জানানো হয়েছিলো, ‘লরেন্স ভাইয়ের তরফে আপনাদের একটি কাজ দেওয়া হয়েছে। আপনারা সাহস হারাবেন না। বান্দ্রা এলাকায় ঘরে রেইকি করতে হবে আপনাদের। ওই এলাকাতেই একটা ঘর ভাড়া নিন।ভাইয়ের হয়ে বদলা নিতে হবে। আমরা আমাদের ধর্মের জন্য বদলা নেব।’ এরপর লাগাতার জেরায় অভিযুক্ত স্বীকার করেছেন, এই কাজ করার জন্য তিনি ও তার তাঁর সহযোগী ধর্মরাজ কাশ্যপকে ১০ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলো বিষ্ণোই গ্যাং। ৫ লক্ষ টাকা অগ্রিম দেওয়া হয়েছিলো। বলা হয়েছিলো কাজ শেষ হলে মুম্বইয়ে বাড়ি ও নতুন একটি গাড়ি দেওয়া হবে।
তদন্তে পুলিশের আরও দাবি, দাউদ যোগই এনসিপি দলের প্রাক্তন বিধায়ক বাবা সিদ্দিকিকে হত্যার পিছনে মূল কারণ। লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাং মনে করত মুম্বইয়ের গ্যাংস্টার দাউদ ইব্রাহিমের সঙ্গে সক্রিয় যোগাযোগ ছিলো সিদ্দিকির। এমনকী সিদ্দিকির ১৯৯৩ সালে মুম্বই হামলার পিছনে সক্রিয় যোগ ছিল বলেও মনে করতো এই গ্যাং। চার্জশিটে এই বিষয়েও বিশদ তথ্য দেওয়া হয়েছে তদন্তকারীদের তরফে।
১২ অক্টোবর মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন বিধায়ক বাবা সিদ্দিকিকে গুলিতে ঝাঁজরা করে দেয় আততায়ীরা। পুলিশের দাবি, শুধু সিদ্দিকি নন, হত্যাকারীদের টার্গেটে ছিলেন সিদ্দিকির পুত্র বিধায়ক জিশান সিদ্দিকিও। রীতিমতো কপালজোরে রক্ষা পেয়েছিলেন তিনি। কুখ্যাত লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাং এই খুনের দায় স্বীকার করেছিলো। দাবি করা হয়েছিলো, সলমন খানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ও দাউদ গ্যাংয়ের সঙ্গে যোগ থাকার জেরেই বাবা সিদ্দিকিকে হত্যা করেছে তারা। হত্যাকাণ্ডের তদন্তে নেমে এখনও পর্যন্ত মূল হত্যাকারী শিবকুমার-সহ সব সুপারি কিলারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পাশাপাশি অস্ত্র সরবরাহকারী থেকে শুরু করে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত বেশ কয়েকজন বর্তমানে পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন।