• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

আর্থিক সাহায্য নেই, চরম সংকটে দেশের বিমান ক্ষেত্র

গত ২৫ মার্চ থেকে দেশে সমস্ত যাত্রী উড়ান পরিষেবা বন্ধ। চতুর্থ দফার লকডাউনে আগামী ৩১ পর্যন্ত পরিষেবা শুরু করতে পারবে না বিমান সংস্থাগুলি।

প্রতিকি ছবি (File Photo: iStock)

গত ২৫ মার্চ থেকে দেশে সমস্ত যাত্রী উড়ান পরিষেবা বন্ধ। চতুর্থ দফার লকডাউনে আগামী ৩১ পর্যন্ত পরিষেবা শুরু করতে পারবে না বিমান সংস্থাগুলি। ফলে, দু’মাসের বেশি কোন আয় নেই ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলির। অথচ, কর্মীদের বেতন দেওয়া, বিমানবন্দরে প্লেনের পার্কিং ফি, প্রভৃতি খাতে খরচ কমেনি।

লকডাউনের মধ্যে যে সমস্ত যাত্রী টিকিট কেটেছিলেন, তাঁদের টিকিটের পুরো টাকা ফেরানোর নির্দেশ দিয়েছে ডিজিসিএ। তাতে বিমান সংস্থাগুলির আর্থিক হাল আরও করুণ হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকারের থেকে সরাসরি আর্থিক সুবিধা পাওয়ার বিরাট প্রত্যাশা ছিল বিমান সংস্থাগুলির। কিন্তু, সে গুড়ে বালি!

Advertisement

রবিবার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন অসামরিক বিমান পরিবহণের জন্য ঘোষণায় ছিল কে সংস্কারের বার্তা, কোনও আর্থিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি ছিল না। এই অবস্থায় এক বা একাধিক ভারতীয় বিমান সংস্থা বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশ।

Advertisement

বিমান পরিবহণ সহ ট্রাভেল এজেন্ট, হোটেল, পর্যটন ইত্যাদির মতো সহযোগী ক্ষেত্রগুলিতে কত মানুষের চাকরি যাবে, তার কোনও ইয়ত্তা নেই।

ক্রেডিট রেটিং সংস্থা ইক্রার হিসাবে, গত ২৫ মার্চ থেকে টানা লকডাউনে ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলির দৈনিক নিট ক্ষতির পরিমাণ ৭৫-৯০ কোটি টাকা। অর্থাৎ, ১ জুন থেকে যদি উড়ান পরিষেবা শুরু হলেও এয়ার ইন্ডিয়া, ইন্ডিগো, স্পাইসজেট, গোএয়ার, বিস্তারা-র মতো ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলির সম্মিলিত লোকসান গিয়ে দাঁড়াবে ৬১২০ কোটি টাকা!

পরিস্থিতি সামাল দিতে সব সংস্থাই বেতন ছাটাই বা বিনা বেতনে কর্মীদের বাধ্যতামূলক ছুটিতে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু, তাতেও পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাবে কিনা, সে বিষয়ে নিশ্চিত নন বিশেষজ্ঞরা।

ইক্রা ভাইস-প্রেসিডেন্ট কিঞ্জাল শাহর বক্তব্য, ‘লকডাউন ওঠার পরেও চাহিদা দুর্বল থাকবে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাই, আগামী দুই অর্থ বছরে (২০২১-২২ এবং ২০২২-২৩) ভারতীয় অসামরিক বিমান পরিবহণ ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ৩২,৫০০-৩৫০০০, কোটি টাকার তহবিল লাগবে।’

কিঞ্জালের কথায়, চলতি ও আগামী অর্থ বছরে ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলির মোট ঋণ বেড়ে ৪৬,৫০০ কোটি টাকা দাঁড়াতে পারে। ১৯৯০-এর দশকের গোড়ার দিকে ভারতের বিমান পরিবহণ ক্ষেত্রের উদারীকরণ ঘটে। বাজারে প্রবেশ করে একের পর এক বেসরকারি বিমান সংস্থা।

দুর্ভাগ্যবশত, তাদের কারওরই এখন অস্তিত্ব নেই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি, ফ্রান্স এবং নেদারল্যান্ডসের মতো অনেক দেশ বিমান সংস্থাগুলিকে সরাসরি অর্থের জোগান না দিলেও এমন কিছু পদক্ষেপের ঘোষণা করেছে, যাতে তাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে উপকার হবে। কিন্তু, সেই রাস্তায় ভারত সরকার না হাঁটায় ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলির আর্থিক দুরবস্থা আরও বাড়বে বলেই একমত বিশেষজ্ঞরা।

Advertisement