নিকাশি ব্যবস্থার সঙ্গে জড়িত সাফাই কর্মীদের ভবিতব্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে সুপ্রিম কোর্ট বলে, কোনও মানুষকে দুষিত গ্যাসে ভরপুর নিকাশি নালা ও ম্যানহােলে নামিয়ে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া ‘অমানবিক’। স্বাধীনতার পর সত্তর বছর কেটে যাওয়ার পরও দেশে জাতপাত ভেদাঙ্গে ও বর্ণবৈষম্য সমাজ ব্যবস্থায় লক্ষ্য করা যায়।
দেশের সর্বত্র নিকাশি নালায় ও ম্যানহােলে মানুষ নামিয়ে বর্জ্য পরিষ্কারের ধারা অব্যাহত, দুষিত গ্যাসে ভরপুর ম্যানহােল ও বড় নর্দমা পরিষ্কার করতে মেশিনের সাহায্য নেওয়া হয় না। প্রযুক্তি দুরের কথা- নিদেন পক্ষে সাফাই কর্মীদের সুরক্ষামূলক সরঞ্জাম দেওয়া হয় না।
দেশের সর্বত্র নিকাশি ব্যবস্থার সঙ্গে জড়িত সাফাই কর্মীদের সঙ্গে অমানবিক ব্যবহার করা হয়ে থাকে বলে মন্তব্য করে শীর্ষ আদালতের তরফে বলা হয়, পৃথিবীর কোনও দেশে গ্যাস চেম্বারে মানুষকে পাঠিয়ে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হয় না।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অরুণ মিশ্রের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগােপালকে বলেন, ‘সাফাই কর্মীদের গ্যাস নিরােধক মুখােশ, অক্সিজেন সিলিন্ডারের মতাে সুরক্ষামূলক সরঞ্জাম কেন দেওয়া হয় না? প্রতিমাসে চার থেকে পাঁচ জন সাফাই কর্মীর মৃত্যু হয়’।
বিচারপতি অরুণ মিশ্রের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের সদস্য বিচারপতি এম আর শাহ ও বিচারপতি বি আর গভাই বলেন, ভারতের সংবিধানে সকল নাগরিককে সমান অধিকার দেওয়া হয়েছে কিন্তু সকলে সমানাধিকার পান না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তার কর্মীদের সমান সুযােগ দেন না।
বেঞ্চের তরফে পরিস্থিতিকে ‘অমানৰ্কি’ বলে উল্লেখ করে বলা হয়, দেশে এমন পরিস্থিতি যেখানে ম্যানহােলে বর্জ্য পরিষ্কার করার সময়ে সাফাই কর্মীদের কোনও ধরণের সুরক্ষামূলক সরঞ্জাম দেওয়া হয় না।
অ্যাটর্নি জেনারেল বেণুগােপাল বলেন, পুরসভার গলদ মােকাবিলার জন্য কোনও আইন নেই। ম্যানহােলে নেমে যে বর্জ্য সাফাই করছেন অথবা রাস্তা থেকে জঞ্জাল পরিষ্কার করছেন, তার বিরুদ্ধে কোনও মামলা করা যায় না। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বা যার নির্দেশে সাফাইকর্মী কাজ করছে তার বিরুদ্ধে মামলা করা যেতে পারে। তাকে দায়ী করা যায়।
বেঞ্চের তরফে বলা হয়, ‘সংবিধানে অস্পৃশ্যতার ধারাটি বাতিল করে দেওয়ার পরও ভারতীয় সমাজ ব্যবস্থায় অস্পৃশ্যতা দেখা যায়- যদি জিজ্ঞাসা করা হয় আপনারা কি সাফাই কর্মীদের সঙ্গে করমর্দন করবেন- উত্তর না হবে’।